195053

শখের পালসার মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে…বিস্তারিত

২০১৭ সালে সবে উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়েছে আশরাফুল ইসলাম। শৈশব থেকেই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর অদম্য বাসনা তার। পিতার ধান চালের ব্যবসার সুবাধে তারও মনে প্রেরণা জাগে নতুন কোন ব্যবসায় জড়ানোর। তার অনুসন্ধানী মনে ঘুরতে থাকে নানান ব্যবসায়ীক কর্মকাণ্ডের দিকে। মনের স্বপ্ন বাস্তবে রুপ পায় ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে।

ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করে আশরাফুল সিদ্ধান্ত নেয় টার্কি পাখি পালন করার। এ সময় তার হাতে কোন অর্থ নেই। পিতার কাছে টাকা চেয়ে তাকে নিরাস হতে হয়। আশরাফুল সিদ্ধান্ত নেয় তার শখের পালসার মোটরসাইকেলটি বিক্রি করার।

মাত্র এক লাখ ৪০ হাজার টাকায় মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে ওই মাসেই জয়পুরহাট থেকে চার মাস বয়সী ৪৫টি টার্কি সংগ্রহ করেন আশরাফুল। শুরু হয় তার সংগ্রামী জীবন। নিজের গ্রাম ভবানীগঞ্জ পৌরসভার দর্গাপাড়া মহল্লায় গড়ে তুলেন টার্কির খামার।

মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে বাচ্চা টার্কিগুলো বড় হয়ে ডিম দেয়া শুরু করে। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়না তাকে। এভাবে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে মাত্র ৩/৪ মাসের ব্যবসাধনে আশরাফুলের খামারে এখন টার্কির সংখ্যা ১২০টি। বর্তমানে বাজারে এর মূল্য প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। আশরাফুল এসব টার্কি থেকে সংগ্রহকৃত ডিম নিজের ইনকিউবেটর মেশিনে ফুটিয়ে প্রতিটি বাচ্চা ৩৫০ টাকায় বিক্রি করেন।

বাচ্চা ও বড় টার্কি বিক্রি থেকে এখন তার মাসিক আয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। প্রতিদিন আশরাফুলের খামার দেখতে অনেকেই আসেন। তাদের অনেকেই এক দিনের বাচ্চা সংগ্রহ করে নিয়ে যান। আশাফুলের ইচ্ছা আগামী এক বছরের মধ্যে তার খামার আরো বড় করে সেখানে ৫০০ টার্কির খামার গড়ে তোলা। তার প্রত্যাশা গ্রামের বেকার যুবকদের টার্কি পালনে উৎসাহী করে তাদের স্বাবলম্বী করে তোলা।

আশরাফুলের মতে, টার্কি পালন অতি সহজ। রোগবালাই তেমন নেই বললেই চলে। এর মৃত্যুহারও খুব কম। আর টার্কি সবুজ জাতীয় সব শাকসবজি ও লতা পাতা খেয়ে থাকে। এসব ছাড়াও টার্কির প্রিয় খাবার কচুরীপানা ও কলমী শাক। যা গ্রামের আনাচে কানাচে অতি সহজে পাওয়া যায়।

আশারাফুলের বাবা ইসরাইল হোসেন জানান, শুরুতে ছেলের কর্মকা-কে হটকারীতা মনে করে সেখানে উৎসাহী ছিলাম না। এখন আশরাফুলের আয় তার চেয়ে বেশি।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ড. আতিবুর রহমান জানান, আশরাফুলের টার্কি খামার স্থাপনের বিষয়ে শুনেছি। তবে সরেজমিন ওই খামার পরিদর্শন করা হয়নি। অচিরেই খামারটি পরিদর্শন করতে যাওয়ার ইচ্ছে তার আছে।

ad

পাঠকের মতামত