পরস্পরকে ছাড়া বাঁচবেন না বৃদ্ধ দম্পতি, তাই ঘটালেন এমন কাণ্ড
চার হাত এক হয়েছিল বেশ কয়েক দশক আগে। কিন্তু জীবনের সমস্ত ঝড়-ঝাপটা সামলে পরস্পরের হাত ছাড়েননি মুম্বইের নারায়ণ লাভাতে ও ইরাবতী লাভাতে। স্বামীর বয়স ৮৭ আর স্ত্রীর বয়স ৭৮।
যানজট যুক্ত রাস্তা পার করার সময়ে নারায়ণের হাতটা ধরে পার করে দেন ইরাবতী দেবী। চশমা বা ঘড়ি কোথায় রেখেছেন ভুলে গেলেও, কয়েক মিনিটের মধ্যে তা হাতের সামনে এনে দেন ৭৮ বছরের ইরাবতী দেবীই। আবার সারাদিনের ক্লান্তির পরে বৃদ্ধা স্ত্রীকে ওষুধ খাওয়ার কথা মনে করিয়ে দেন নারায়ণ লাভাতেই।
এমনই এই বৃদ্ধ দম্পতির রোজকার জীবন। আর তাই পরস্পরকে ছাড়া একটা দিনও বেঁচে থাকার কথা ভাবতে পারেন না। সেই জন্য দু’জনে একসঙ্গে ‘অ্যাক্টিভ ইউথ্যানেশিয়া’ বা স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছেন দেশের রাষ্ট্রপতিকে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে এমনই জানা গিয়েছে।
নারায়ণ লাভাতে রাজ্য পরিবহণ আধিকারিক ছিলেন এবং তাঁর স্ত্রী একটি স্কুলের অধ্যক্ষ ছিলেন। নিজেদের কাজে স্বতন্ত্র থাকলেও পরস্পরকে ছাড়া থাকতে পারেন না দম্পতি। তাই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে এই আবেদন করো চিঠি পাঠিয়েছেন নারায়ণ।
বয়স যে ভাবে মৃত্যুর দিকে এগোচ্ছে, তেমনই তেমনই রোগগ্রস্ত ও অপারগ হয়ে জীবন কাটাতে ভয় পাচ্ছেন দু’জনই। এছাড়াও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবন আরও একঘেয়ে হতে শুরু করে দিয়েছে দু’জনেরই। তাই নাকি আত্মহনন ছাড়া অন্য কোনও রাস্তা দেখতে পাচ্ছেন না তাঁরা। পরস্পরকে ছাড়া বাঁচবেন না বৃদ্ধ দম্পতি, তাই ঘটালেন এমন কাণ্ড।
নারায়ণের মাথাতেই প্রথম এই স্বেচ্ছামৃত্যুর কথা আসে। নির্যাতন এর শিকার হয়ে টানা ৪২ বছর কোমায় ছিলেন নার্স অরুণা রামচন্দ্র শানবাগ। তার পরে অ্যাক্টিভ ইউথ্যানেশিয়ার মাধ্যমেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার জানার পর থেকেই এমন চিন্তা মাথায় আসে বৃদ্ধের।
কী এই অ্যাক্টিভ ইউথ্যানেশিয়া? মরণেচ্ছুর আজ্ঞাক্রমে পেন কিলারের ওভারডোজে এই মৃত্যুকেই বলে ইউথ্যানেশিয়া। আমাদের দেশে স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে কোনও আইন নেই। সাধারণত একেবারে শেষ পর্যায় শারীরিক অবস্থা পৌঁছলে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি পাওয়া যায়। কিন্তু এই বৃদ্ধ দম্পতির শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক। তাই তাঁদের স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনে কতটা ইতিবাচক উত্তর পাবেন, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। –এবেলা