আমি বেঈমানকে উচিৎ শিক্ষা দিয়েছি, আমাকে গ্রেফতার করুন
হঠাৎ ওসির সরকারি ফোনে পর পর ৩-৪টি মিস কল আসে। ফোন ব্যাক করলেই অপর প্রান্ত থেকে হাঁপাতে হাঁপাতে কন্ঠস্বর ভেসে আসে, ‘আমি বেঈমানকে উচিৎ শিক্ষা দিয়েছি। আমি থানায় আসছি, আমাকে গ্রেফতার করুন।’ কথা বলার পরই ফোন কেটে যায়।
তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের অন্য সদস্যরা মোবাইলে কথা বলে নিশ্চিত হন এই ব্যক্তির নাম আলাউদ্দিন সরদার। প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়ার টেবিলে ২ বোনকে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যাওয়ার পর পুলিশের কাছে ধরা দেওয়ার জন্য এভাবেই ফোনে কথা বলে সে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ হাসিনা বেগম জানান, গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের খোর্দ্দমাগুরা গ্রামের আ: রহমান মৃধার দুই মেয়ে নটাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী জামিলা ওরফে আছিয়া ও একই স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী হাসনা হেনাকে কুপিয়ে পালিয়ে যায় আলাউদ্দিন। এরপর ফোনে এসব কথা বলে পুলিশের কাছে এসে ধরা দেয় সে।
আ: রহমান মৃধা জানান, তার মেয়ে জামিলাকে দীর্ঘদিন ধরে তার সহপাঠি একই স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী ও খামার মাগুরা গ্রামের মোক্তার সরদারের ছেলে আলাউদ্দিন সরদার স্কুলে যাতায়াতকালেসহ নানাভাবে প্রেমের প্রস্তাব ও উত্যক্ত করে আসছিল। বিষয়টি তার অভিভাবকদের জানানো হলে সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে দু’বোন বাড়ির ঘরের মধ্যে পড়ছিল। এ সময় আলাউদ্দিন সরদার ধারালো অস্ত্র হাতে প্রবেশ করে দু’বোনকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়।
তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজনসহ এগিয়ে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে মধুখালী হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
এব্যাপারে বুধবার সকালে তিনি বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
হাসিনা বেগম জানান, আলাউদ্দিন সরদার স্বীকার করেছে তার সাথে ছয় বছরের প্রেমের সম্পর্ক থাকার পর এখন অন্য ছেলের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার ফলে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ছাত্রীর পিতা।
গ্রেফতারকৃত আলাউদ্দিন সরদারকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজবাড়ী আদালতে পাঠানো হয়েছে।