190379

রোহিঙ্গা নারীদের গর্ভে প্রায় অর্ধলক্ষ শিশুর জন্ম হলেও ‘বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই’ অধিকাংশেরই!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রতিদিনই শিশুর জন্ম হচ্ছে আশ্রয় শিবিরে। কাজ করছে মেডিকেল টিম, স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতেও জন্ম নিচ্ছে নবজাতক। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অব্যাহত সহিংসতার জেরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসাদের মধ্যে এখনও ৫০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নারী গর্ভবতী। তবে সংখ্যাটা আরেকটু বেশি হওয়ার শঙ্কার কথা বলছেন মাঠ পর্যায়ে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরা। এছাড়া চরম নির্যাতন বাদে ধর্ষণের শিকার হয়েও হাজার-হাজার নারী বাংলাদেশে ঢুকেছেন।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নারীরা চলতি বছরেই জন্ম দেবে প্রায় অর্ধলক্ষ শিশুর । এক বিবৃতিতে এমনি তথ্য জানিয়েছে শিশুদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেন ।

তবে আশংকার কথা হলো, রোহিঙ্গা নারীদের গর্ভে জন্ম নেয়া এসব শিশুর অধিকাংশই পাঁচ বছরে পা দেওয়ার আগেই মারা যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে উল্লেখ করে সংস্থাটি জানিয়েছে, এসব শিশুর মধ্যে অধিকাংশই জন্মের প্রথম দিন থেকেই অসুস্থতা ও পুষ্টিহীনতার ঝুঁকিতে থাকবে ।

মা হতে চলা এতো সংখ্যক নারী যখন সন্তান প্রসব করবেন তখন বাড়বে আরও রোহিঙ্গা। তাদের ভবিষ্যৎ, সুস্থ্যভাবে বেড়ে ওঠা বা স্বদেশে ফিরে যাওয়া সবই নতুন করে ভাবার বিষয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ নিয়ে চাই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা।
৫০ হাজারের বেশি গর্ভবতীর জন্য বিশেষ ত্রাণসেবার কথাও বলা হচ্ছে। তবে এটি নিশ্চত করা অত্যন্ত দুরূহ কাজ বলে জানাচ্ছেন ত্রাণকর্মীরা। এছাড়া শিশুকে দুধ পান করান এমন মায়েদের মধ্যে অপুষ্টির হার আশঙ্কাজনক। পাশাপাশি এক লাখ ৪৫ হাজার শিশুও পৃথকভাবে অপুষ্টির শিকার; তাদের মধ্যে বেশি ঝুঁকিতে ১৪ হাজার শিশু। তাদের আবার বেশির ভাগ পাঁচ বছরের নিচে।

সেভ দ্য চিল্ড্রেনের মুখপাত্র ইভান শ্যুরম্যান বলেন, বিপুল সংখ্যক মানুষের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো এমনিতেই চ্যালেঞ্জের। এর মধ্যে আবার গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী নারীদের বিশেষভাবে ত্রাণ দেওয়া দুষ্কর বটে। তবে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

‘সেভ দ্যা চিলড্রেন’সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘২০১৮ সালে আমরা প্রতিদিন ১৩০টি করে নবজাতক আশা করছি। অধিকাংশ শিশুই অস্থায়ী তাবু হিসেবে তৈরি করা বাড়িতে জন্ম নেবে। স্বল্প মানের অংশ হিসেবে প্রাথমিক জরুরি ধাত্রীবিদ্যা ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদান স্বাস্থ্য রক্ষায় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কক্সবাজারে সেভ দ্য চিলড্রেনের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা র‌্যাচেল কাম্মিংস জানিয়েছেন, ‘ক্যাম্পগুলোতে স্যানিটেশন সুবিধা ভালো নয় এবং ডিপথেরিয়া, হাম ও কলেরার উর্বরক্ষেত্র, যা বিশেষ করে নবজাতকদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এটা কোনো শিশু জন্ম দেওয়ার স্থান নয়।’

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৫ অগাস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

ad

পাঠকের মতামত