মালয়েশিয়ায় বৈধ হওয়ার সুযোগ শেষ হচ্ছে ৩১ ডিসেম্বর
মালয়েশিয়ায় থামছে না অবৈধভাবে পাড়ি জমানোর সংখ্যা। সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ নাইটস’ নাম দিয়ে পরিকল্পিতভাবে আদম পাচারের অভিযোগে চলচ্চিত্র নির্মাতা অনন্য মামুনকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ঘটনার পর দেশটির সব বিমান বন্দরে ইমিগ্রেশন বিভাগ কড়া নজরদারি আরোপ করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে মানবপাচার রোধে মালয়েশিয়া সরকারের পদক্ষেপে নজর রাখছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
এ ছাড়া মানব পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতারে মাঠে রয়েছে দেশটির গোয়েন্দা পুলিশ। এমন পরিস্থিতিতে নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেখানে বৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন প্রবাসীরা।
এদিকে মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি শ্রমিকদের রি-হায়ারিং কর্মসূচির পাশাপাশি চলছে ইমিগ্রেশন পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড়। এরপরও থামছে না অবৈধভাবে (ট্যুরিস্ট ও ভিজিট ভিসার নামে) দেশটিতে পাড়ি জমানোর সংখ্যা।
কুয়ালালামপুরসহ দেশটির কোনো না কোনো এলাকায় প্রায়ই পুলিশি অভিযানে বাংলাদেশিসহ অবৈধ বিদেশিরা ধরা পড়ছেন। পরে তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮শ’ বাংলাদেশি বিভিন্ন ক্যাম্পে আটক রয়েছেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আটকৃতরা টিকিটের টাকা ও হাইকমিশন থেকে আউট পাস সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হলে তাদের সেখান থেকে পাঠানো হচ্ছে সেন্ট্রাল জেলে।
অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশি শ্রমিকদের রি-হায়ারিং কর্মসূচির মেয়াদ আগামী ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবে। এর মধ্যেই বাংলাদেশিসহ অবৈধভাবে কর্মরত বিদেশিদের বৈধতার জন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
জানা গেছে রি-হিয়্যারিং কর্মসূচির আওতার বাইরে থেকে যাওয়া কোনো অভিবাসী কর্মী ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলে তার ১০ হাজার রিংগিত জরিমানাসহ এক বছর জেল হতে পারে।
মূলত যারা আকাশ পথে দেশটির ইমিগ্রেশন পার হয়ে মালয়েশিয়ায় আসার পর অবৈধ হয়েছেন এবং ৬ মাস অতিবাহিত হয়েছে কেবলমাত্র তারাই এ কর্মসূচির আওতায় বৈধ হতে পারবেন।
এ ছাড়া যারা সমুদ্র কিংবা অবৈধ অন্যপথে দেশটিতে প্রবেশ করেছেন তাদের এ সুযোগের মধ্যে রাখা হয়নি। তাদের জন্য চালু ছিল ই-কার্ড (এনফোর্সমেন্ট কার্ড) প্রোগ্রাম।
ই-কার্ড কর্মসূচির মেয়াদ ছিল চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত। ই-কার্ড কর্মসূচিতে নিবন্ধিত হলেও দীর্ঘমেয়াদে বৈধতা পেতে প্রত্যেককে অবশ্যই রি-হায়ারিং কর্মসূচিতেও নিবন্ধন করতে হবে এ সময়ের মধ্যে।
সর্বশেষ তথ্যমতে, চলমান রি-হায়ারিংয়ের আওতায় প্রায় সাড়ে ৫ লাখ অবৈধ বাংলাদেশি নিবন্ধিত হয়েছেন। এর মধ্যে এক লাখ ৬৫ হাজার কর্মী ভিসা পেয়েছেন। আর ই-কার্ড কর্মসূচির আওতায় এসেছেন প্রায় এক লাখ ২০ হাজার বিদেশি। যার মেয়াদ রয়েছে ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
একটি সূত্রে জানা গেছে নাম ও বয়স জটিলতায় কমপক্ষে ৫৫ হাজার কর্মী ভিসা পাননি। তারা এ জটিলতা নিরসনের সুযোগ পাবেন, নাকি দেশে ফিরতে হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়।
তবে নিবন্ধিত প্রায় ৩ লাখ ৩০ হাজার শ্রমিকের ভিসাসহ বৈধতার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নিবন্ধন শেষ হওয়ার পর পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে তাদের ভিসাসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুযোগ দিয়েছে দেশটির ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।