হিন্দু বিয়েতে তালাকের বিধান নেই!
বিয়ে একটি পারিবারিক বন্ধন। বিয়ের মাধ্যমেই একজন নর ও একজন নারী জীবন পূর্ণতা লাভ করে। বিয়ের হল একজন পুরুষকে একজন নারীর সঙ্গে অতিঘনিষ্ঠভাবে বসবাস, সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নাসহ দৈহিক চাহিদা ভাগাভাগি করার বৈধ অনুমতি।
ধর্মভেদে বিয়ের রীতিনীতি বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। আবহমানকাল থেকে সনাতন ধর্মীয় বিয়ের রীতিনীতি চলে আসছে। হিন্দু বিয়ে বেশ কয়েকটি আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
পাত্র-পাত্রীর সম্মতিতে অভিভাবকরা পঞ্জিকা থেকে শুভ দিনক্ষণ নির্ধারণ করেন। প্রত্যেক ধর্মে বিয়ের কিছু আইন রয়েছে। হিন্দুদের সাতপাক ঘুরলেই বিয়ে সম্পন্ন হয়। এ ছাড়া বিয়ে রেজিস্ট্রেশন কোনো নিয়ম ছিল না।
কিন্তু বতর্মানে হিন্দু দম্পতি যদি ইচ্ছে করেন, তবে তারা বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে পারে। তবে এটি বাধ্যতামূলক নয়। এ ছাড়া হিন্দু বিয়েতে তালাকের কোনো বিধান নেই; এবং একাধিক বিয়ের ক্ষেত্রেও স্ত্রীর অনুমতি প্রয়োজন নেই। সেপারেশনের পর স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্ব স্বামী নেবে না।
আসুন জেনে নিই হিন্দু বিয়ে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়-
বিয়ে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক নয়
হিন্দু বিয়েতে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক নয়। তবে কোনো দম্পতি চাইলে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে পারে। হিন্দু বিয়ের ক্ষেত্রে মন্ত্রপাঠের মধ্য দিয়ে সাতপাক ঘুরলে বিয়ে সম্পূর্ণ হয়।
তালাকের বিধান নেই
হিন্দু বিয়েতে তালাকের কোনো বিধান নেই। তবে স্বামী বা স্ত্রী চাইলে তারা আলাদা থাকতে পারেন। এক্ষেত্রে কেউ কারো কাছে কোনো জবাবদিহিতা করতে বাধ্য নন। তবে সেপারেশনের ব্যাপারে কোর্টের মাধ্যমে অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন হয়। আর যদি স্বামী-স্ত্রী দুজনে রাজি থাকেন, তবে এক্ষেত্রে আদালতের সহযোহিতার প্রয়োজন পড়ে না।
একাধিক বিয়ে
হিন্দুধর্মে কোনো ব্যক্তি চাইলে একাধিক বিয়ে করতে পারেন। এক্ষেত্রে স্ত্রীর অনুমতি নেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এ ছাড়া বিয়ে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক নয় বলে স্ত্রী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন না।
ভরণ-পোষণ
হিন্দুধর্মে স্বামী-স্ত্রী আলাদা হয়ে যাওয়ার পর স্বামী তাকে কোনো ভরণ-পোষণ দিতে বাধ্য থাকিবে না। এ ছাড়া কোনো আইন না থাকায় স্ত্রী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে না।
আইনিব্যবস্থা
কোনো হিন্দু নারী যদি স্বামী দ্বারা নির্যাতিত হন, তিনি আইনের সহায়তা পাবেন। তবে যদি বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে, তবে এক্ষেত্রে আইনিব্যবস্থা জোরালো হবে। তবে অনেকে ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন না থাকলে ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হয়।
নিগম আনন্দ রায়
আইনজীবী
জজকোর্ট ঢাকা।
সূত্র: যুগান্তর