‘পিটাইয়া খেলবা দেখবা, সব ঠাণ্ডা’
আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে অংশ নিতে সোমবার দিবাগত রাতে নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশে দেশ ছাড়বে সাইফ হাসানের দল। তার আগে দেশের মাটিতে শেষ অনুশীলন সেরেছে পুরো দল। রোববার একাডেমি মাঠে উড়িয়ে মারার অনুশীলন করলেন দলের টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান সাইফ ও আফিফ।
কেন তাদের মাঝে এতটা আক্রমনাত্মক মেজাজ সেটি পরিষ্কার হল খানিক পরে। যখন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফী যুবাদের অভয় দিয়ে বললেন, ‘নিউজিল্যান্ডে ভাল উইকেট, ওইসব জায়গায় রান করা সহজ। সবাই ভাবে যে বোলিং ওখানে ভাল হয়। আসলে বোলিং না, পিটাইয়া খেলবা দেখবা সব ঠান্ডা।’
ক্যাম্প চলাকালীন সময় যুব দলের অনেক খেলোয়াড়ই মাশরাফীর কাছে শুনেছেন নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন সম্পর্কে। সে অনুযায়ী অনুশীলনও করেছেন তারা। এবার সকল খেলোয়াড়কে ডেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেরণাদায়ী বক্তব্য রাখলেন মাশরাফী। বললেন নিজের অভিজ্ঞতার কথাও, ‘ওখানে বরং বোলাররা স্ট্রাগল করে। বিশ্বকাপে তো সবসময় ভাল উইকেট দেয় রান করার জন্য। ব্যাটসম্যানরা অনায়াসে খেলতে পারে। তিন’শ-সাড়ে তিন’শ রান হয় আবার ওটা তাড়া করে ফেলে। পেসারদের চেয়ে বরং স্পিনাররা ওখানে অনেক বেশি কার্যকর।’
উপমহাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য কঠিনতর কন্ডিশনের একটি নিউজিল্যান্ড। পাহাড় ঘেরা শহর, সমুদ্রবেষ্টিত, বাতাসের বেগে তারতম্য আর কনকনে ঠাণ্ডা আবহাওয়া। প্রাকৃতিক কারণেই উইকেটগুলো হয়ে থাকে বাউন্সি। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কারোরই সেখানে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। অচেনা কন্ডিশন নিয়ে যুবাদের মধ্যে ছিল নানা ধরণের চিন্তা। তবে নেতিবাচক জুজু উবে গেছে মাশরাফীর কথায়।
মাশরাফীর মন্ত্রে এখন অনেক বেশি সাহসী সাইফ। যুবাদের অধিনায়ক বলেন, মাশরাফী ভাই ওখানকার কন্ডিশনের কথা বললো। তারপর আমাদের প্রেরণা যোগাল। উনি সবসময়ই আমাদের সমর্থন করে এসেছেন। এবারই নয় এর আগেও। উনার মোটিভেশন অনেক হাই লেভেলের। এখানে শুধু অধিনায়ক না, সব খেলোয়াড় যারা আছে সবাই যদি দায়িত্ব নেয় তাহলে আমার জন্য সহজ হবে। উনার কথায় সব খেলোয়াড়রাই অধিনায়ক।’
এ বছরই নিউজিল্যান্ড সফর করেছে মাশরাফী-সাকিবরা। দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে তারা পেয়েছেন ব্যাটিং সহায়ক উইকেট। আর বিশ্বকাপ হওয়ায় সেটি আরও বাড়বে বলেই বিশ্বাস করেন সাইফ। মাশরাফীর মন্ত্র ধরে বিশ্বকাপে পারফর্ম করার মনছবি গোটা দলের মাঝে।
ভবিষ্যত টাইগারদের সঙ্গে সময় কাটাতে পেরে খুশি মাশরাফীও। আনুষ্ঠানিক সেশনের পর জানালেন, ‘মোটিভেশনের কিছু নেই। পরিশ্রম যা করার তা তারা আগেই করেছে। এখন এটা প্রয়োগ করার সময়। আমি যেটা বলেছি যে মানসিকভাবে শক্ত থাকে। হয়তো ওইখানে গিয়ে ভাবতে পারে আবহাওয়া এবং পরিবেশ পরিস্থিতি আমাদের প্রতিকূলে। এটাই স্বাভাবিক। জাতীয় দল গেলেও তাই থাকে। আমি ওদের মনে আনন্দে ক্রিকেট খেলতে বলেছি। ওরা যত স্বাধীনভাবে খেলবে আনন্দ নিয়ে খেলবে তত ওদের জন্য ভালো হবে।’
১৩ জানুয়ারি শুরু হবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। অংশ নেয়া দলগুলো সেখানে পৌঁছাবে ৬ জানুয়ারির মধ্যে। বাংলাদেশের যুব দল যাবে ১০ দিন আগে। ডানেডিনে ক্যাম্প সেরে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে ক্রাইস্টচার্চে যাবে সাইফ-আফিফ-পিনাকরা। মূল ক্রিকেটযজ্ঞে নামার আগে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান যুবাদের সঙ্গে খেলে প্রস্তুতি সারবে লাল-সবুজের দল।
এবারের বিশ্বকাপে টেস্ট খেলুড়ে ১২টি দেশ ও ৪টি সহযোগী দেশের যুব দল অংশ নেবে। তুলনামূলক সহজ গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ। ‘সি’ গ্রুপে টাইগারদের সঙ্গী নামিবিয়া, কানাডা এবং ইংল্যান্ড। উৎস: চ্যানেল আই অনলাইন