
ফাঁসি কার্যকরের আগে পরিবারের সাথে শেষ সাক্ষাতের সময় যা করেছিলেন শহীদুল
আলোচিত শাজনীন হত্যা মামলার আসামি শহীদুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাত পৌনে ১০টায় গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে শহীদুলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন শহীদুল। কিন্তু তা খারিজ হওয়ায় কারাবিধি অনুযায়ী আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করা হয়।
ফাঁসি কার্যকরের পর আনুষ্ঠানিকতা শেষে তার ভাই মহিদুল ইসলাম লাশ গ্রহণ করেন এবং রাতেই তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর উপজেরার ডাঙ্গা দুর্গাপুর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, রাত পৌনে ১০টার দিকে শহীদুলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। নির্দেশ পাওয়া মাত্র মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেন রাজু জল্লাদ। এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সিভিল সার্জন, পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল নিজ বাড়িতে নিহত হন শাজনীন তাসনিম রহমান। তিনি ট্রান্সকম গ্রুপের কর্ণধার লতিফুর রহমানের মেয়ে। শাজনীন তখন স্কলাস্টিকা স্কুলের নবম গ্রেডের ছাত্রী ছিলেন।
বুধবার দুপুরে শহীদুলের ছোট ভাই মুহিদুল ইসলাম, তার স্ত্রী, খালা, ছোট বোনসহ অন্যান্য স্বজন তার সঙ্গে কারাগারে শেষ দেখা করেছেন।
কারাসূত্র জানায়, সাক্ষাৎকালে শহীদ স্বাভাবিক থাকলেও তার বাবা-মা ও ভাই-বোন কান্নায় ভেঙে পড়েন। এক পর্যায়ে শহীদও আবেগে আপ্লুত হয়ে যান। পরে অশ্রুসজল চোখে পরিবারের সদস্যরা কারাগার ত্যাগ করেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের মেয়ে শাজনীন তাসনিম রহমান গুলশানে নিজ বাড়িতে খুন হন।
২০০৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে শাজনীনকে ধর্ষণ ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে ছয় আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়।
হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১৮ বছর পর গত বছরের ২৯ মার্চ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের বেঞ্চে হাইকোর্টে ফাঁসির আদেশ পাওয়া আসামিদের আপিলের শুনানি শুরু হয়। তিন সদস্যের ওই বেঞ্চের অপর দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।
গত ৫ এপ্রিল বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ও বিচারপতি মো. ইমান আলীকে যুক্ত করে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ গঠন করা হয়। ৬ এপ্রিল থেকে ওই বেঞ্চে আসামিদের আপিল শুনানি শুরু হয়।
২ আগস্ট আসামিদের মধ্যে শহীদুল ইসলাম শহীদের ফাঁসির রায় বহাল রেখে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। বাকি চারজনকে খালাস দেন আপিল বিভাগ। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- হাসান, বাদল, মিনু ও পারভীন।