
সূর্যাস্তের পর কোথায় যায় সূর্য?
চন্দ্র ও সূর্য ধারাবাহিকভাবে অবিরাম উদিত হচ্ছে। নেই কোনো বিশৃঙ্খলা, কোনো ত্রুটি, কোনো ব্যতিক্রম। এগুলোই কি প্রমাণ করে না এগুলো এক অদৃশ্য নিয়ত্তার হাতে নিয়ন্ত্রিত। কেননা মানুষের কোনো কাজ নির্ভুল নয়। যতই ত্রুটিমুক্ত দাবি করা হোক না কেন অন্যের চোখে সেটা সমালোচনাযোগ্য। একমাত্র এই বিশ্বজাহানের সৃষ্টিকর্তা, যার সৃষ্টিতে কোনো ত্রুটি নেই তিনি ব্যতিত।
বৈজ্ঞানিকরা অনেক গবেষণার পরে অনেক কথা বলে থাকেন। পরবর্তীতে আরো বিস্তর গবেষণার পর পূর্বের মত থেকে ফিরে আসেন। কিন্তু আল্লাহ ও তার রাসূল সা. যা বলে গেছেন, তা চিরসত্য। সামান্যতম ব্যতিক্রম হওয়ার সম্ভাবনা চিরবন্ধ।
আমরা সকলেই দেখি, চন্দ্র ও সূর্য উদিত হয়ে আবার চলে যায়। কিন্তু এগুলোর শেষ সীমানা কী? এগুলো কোথায় গিয়ে ঠেকে? এগুলো চিরসত্য কোনো কথার দ্বারা বিশ্বাসযোগ্য? তা হচ্ছে একমাত্র কুরআন ও হাদীস। কুরআন ও হাদীসে চন্দ্র ও সূর্যের শেষ ঠিকানা কোথায় তা বর্ণনা করা হয়েছে।
কুরআনে সূর্য ও চন্দ্র নির্ধারিত কক্ষপথে আবর্তন করার কথা বলা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সূর্য তার নির্দিষ্ট অবস্থানে আবর্তন করে। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ আল্লাহর নির্ধারণ। চন্দ্রের জন্যে আমি বিভিন্ন মনযিল নির্ধারিত করেছি। অবশেষে সে পুরাতন খর্জুর শাখার অনুরূপ হয়ে যায়। সূর্যের পক্ষে চন্দ্রকে নাগাল পাওয়া সম্ভব নয়। রাতের পক্ষেও দিনের অগ্রবতী হওয়া সম্ভব নয়। প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে।” (সূরা ইয়াসীনঃ ৩৮-৪০)
সূর্যের শেষ ঠিকানা কি বা সূর্য অস্ত হওয়ার পর কোথায় গিয়ে ঠেকে একথা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। আবু যার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় আবু যার রা.-কে বললেন, তুমি কি জান, সূর্য কোথায়? আমি বললাম, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, তা যেতে যেতে আরশের নীচে গিয়ে সিজদায় পড়ে যায়।
এরপর সে পুন: উদিত হওয়ার অনুমতি চায় এবং তাকে অনুমতি দেয়া হয়। আর অচিরেই এমন সময় আসবে যে, সিজদা করবে কিন্তু তা কবুল হবে না এবং সে অনুমতি চাইবে কিন্তু তাকে অনুমতি দেওয়া হবে না। তাকে বলা হবে, যে পথে এসেছ সে পথে ফিরে যাও। তখন সে পশ্চিম দিক হতে উদিত হবে। এটাই মর্ম হল মহান আল্লাহর বাণী: আর সূর্য গমন করে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে, এটাই পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ। (সূরা ইয়াসীন : ৩৮) বুখারি হাদীস নং ৩১৯৯
কুরআনের অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, (কিয়ামতের দিন) সে দিন আমি আসমানসমূহকে গুটিয়ে নেব, যেভাবে গুটিয়ে রাখা হয় লিখিত দলীল-পত্রাদি। যেভাবে আমি প্রথম সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেভাবেই পুনরায় সৃষ্টি করব। ওয়াদা পালন করা আমার কর্তব্য। আমি তা পালন করবই। সূরা আম্বিয়া : ১০৪
হাদীসে এসেছে, আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কিয়ামতের দিন সূর্য ও চন্দ্র দু’টিকেই গুটিয়ে নেয়া হবে। বুখারি হাদীস নং ৩২০০
তাছাড়া চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণের অনেক কারণ বলা হয়ে থাকে। মূলত চন্দ্র ও সূর্যের মতই এসব গ্রহণও আল্লাহর তা‘আলার কুদরত। হাদীসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কারো মৃত্যু এবং জন্মের কারণে সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না, এ দুটো আল্লাহর নিদর্শনাবলির মধ্যে দুটি নিদর্শন মাত্র। অতএব যখন তোমরা তা সংঘটিত হতে দেখবে তখন সালাত আদায় করবে। বুখারি হাদীস নং ২৯৭
আমাদের সময়.কম