
মৃত্যুর আগে ফেসবুকে শেষ স্ট্যাটাস, “চললাম, ভালো থেকো শিল্পা”
ফেসবুকে গতকাল শেষ পোস্ট ছিল, “চললাম, ভালো থেকো শিল্পা।” তারপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি।
আজ সকালে অঞ্জন রায়চৌধুরি নামে ওই যুবকের মৃতদেহ মিলল দামোদরের চরে। বাড়ি বর্ধমানের বড়নীলপুরে।
গত সকাল ১১টা ২ নাগাদ ফেসবুকে শেষ পোস্ট করে অঞ্জন। তার আগে সকাল ৭টা ১১ ও ৭টা ৪৬ মিনিটে দুটো পোস্ট করে সে। প্রথম পোস্টটি ১৯ জনকে ট্যাগ করেছিল। তাতে লেখা ছিল, “শিল্পা কথা দিয়েছিল আমায় ছেড়ে কোনওদিন যাবে না, সত্যিই তাই ও আমায় ছেড়ে যেতে পারল না, ওর জন্য ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।” এরপর ৭টা ৪৬ নাগাদ আরও একটি পোস্ট করে। সেই পোস্ট ৩১ জনকে ট্যাগ করে অঞ্জন। তাতে লেখা ছিল, “শিল্পা খুব ভালো ছিল, কথা দিয়েছিল আমায় কোনওদিন ছেড়ে যাবে না।
ও ভীষণ ভালোবাসত আমায়। কিন্তু, ওর সাহস ছিল না পরিবারকে অসম্মান করে , আমার সঙ্গে চলে আসার। আমাদের ৫ বছরের সম্পর্ক। কিন্তু, আজ পর্যন্ত কোনওদিন আমায় খারাপ কথা বলেনি। আর এই জন্য আরও বেশি করে ওর কথা মনে পড়ছে। আমায় কথা দিয়েছিল কোনওদিন ছেড়ে যাবে না। ওর বাবা মোবাইল, সিম সব ভেঙে দিয়েছে। আর যার সঙ্গে শিল্পার বিয়ে ঠিক হয়েছে, সবকিছু জেনেও সে জোর করে বিয়ে করতে চাইছে। কীরকম ছেলে বোঝো।
কিন্তু, ওর বাবাটা মানুষ না। মন বলতে কিচ্ছু নেই। এতদিনের সম্পর্ক জেনেও, ওর বাবা প্রতিদিন ওর উপর অত্যাচার করত আমায় ছেড়ে দেওয়ার জন্য। আর এর জন্য ওর মায়ের প্রতি অত্যাচার করত। মানুষ না। শিল্পা কী করে আমায় ছেড়ে চলে যাচ্ছে জানি না। ও ভীষণ ভালো। আমার ভালোবাসা ‘অমর’ যা কেউ ছিনিয়ে নিতে পারে না। শিল্পা কথা দিয়েছিল ও আমায় ছেড়ে কোনওদিন যাবে না। কি শিল্পা সত্যি তো ?”
গতকাল ১১টা ৪৬ নাগাদ শেষ পোস্ট করে অঞ্জন। এরপর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। অনেকক্ষণ বাড়ি না ফেরায় খোঁজখবর শুরু হয়। ততক্ষণে বন্ধুদের থেকে গোটা ঘটনার কথা জানতে পেরেছে অঞ্জনের পরিবার। দ্বারস্থ হয় পুলিশের। পুলিশ মোবাইল ট্র্যাক করে অঞ্জনের পরিবারকে জানায়, বর্ধমানের বেচারহাট থেকে পোলেমপুরে দামোদরের মধ্যে আছে সে। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। সারারাত খুঁজেও তার সন্ধান মেলেনি। আজ সকালে দামোদরের চর থেকে অঞ্জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের অনুমান, বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে অঞ্জন।
মৃতের আত্মীয় তারক মুখোপাধ্যায় বলেন, “ভাইয়ের সঙ্গে একজনের প্রেম ছিল। মেয়ের বাড়ি থেকে দু’মাস আগে বিষয়টি মানতে চায়নি। দুর্গাপুরে বিয়েও ঠিক করে। তারপর কোথা থেকে কী হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না। আমাদের মনে হচ্ছে, ভাইকে খুন করা হয়েছে।” গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সূত্রঃ ইনাডু ইন্ডিয়া বাংলা