181178

চিকিৎসার নামে যা করতেছেন এই ভণ্ড কবিরাজ!

 

কবিরাজ তিনি। সর্বরোগের চিকিৎসা নিয়ে খুলে বসেছেন জলসা। দলে দলে মানুষ আসে। কেউ সাক্ষাত পায়, কেউ পায় না। তবে কাউকেই নিরাশ করতে চান না তিনি, যদি টাকার অংক মোটা হয়। টাকায় বাঘের চোখ মিললে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধী চিকিৎসা তার কাছে মিলবে না কেন?

এই কবিরাজের নাম শফিকুল ইসলাম যশোরী। তার আস্তানা সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের বলিয়ারপুর নগরকোন্ডা ওসমান কলোনী এলাকায়। সেখানে দোতলা আলিশান বাড়িতে এ কবিরাজি চিকিৎসা সেবা দেন। চিকিৎসার নামে করছেন প্রতারণা। হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এমনই অভিযোগ এলাকাবাসীর।

ওই ভুয়া কবিরাজ সাধারণ রোগীদের কাছে নিজেকে তুলে ধরছেন বিশিষ্ট কবিরাজ। বিভিন্ন এলাকার কেউ যদি কোন রোগে আক্রান্ত হয় তাকে ফুসলিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ঐ তথাকথিত কবিরাজের কাছে। অবিলম্বে ওই তথাকথিত কবিরাজকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

কয়েকজন স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বললে তারা জানায়, গত বছর একটি দোতলা আলিশান বাড়িতে শফিকুল ইসলাম যশোরী ‘মোহাম্মদীয়া ইউনানী এন্ড আয়ুবের্দ দাওয়াখানা’ দিয়ে চিকিৎসার নামে সাধারণ রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে ।

তার চিকিৎসা সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে- গ্যারান্টি সহকারে স্বামী-স্ত্রী অমিল প্রেমে ব্যার্থতা, জিনের আছর, যে কোন লোককে বশ করা, জন্ডিস, জীনের আচর, যৌনরোগ ও ক্যান্সারসহ জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা। ওপেন চ্যালেঞ্জ, গ্যারান্টির আশ্বাস প্রদান করে চিকিৎসার মায়াজালে মানুষকে আটাকিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই প্রতারক।

যদিও এসব জিনতত্ব কবিরাজি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সরকার অনুমোদিত কোন স্বীকৃতিপত্র নেই। এলাকাবাসীর অভিযোগ বিশাল মুখরোচক গল্প আর দৃষ্টি নন্দন কার্যালয়ে বসে ওই ভুয়া কবিরাজ মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। পাশাপাশি তিনি এজেন্টও সেট করেছেন। তারা কমিশনের মাধ্যমে জটিল ও কঠিন সব রোগের চিকিৎসা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রামের বিভিন্ন স্থানে প্রচার করছে। কবিরাজি ও হারবাল চিকিৎসার নামে চলছে অদ্ভূত রকমের চিকিৎসা।

প্রতারিত হয়েছেন এমন কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি যে সমস্ত রোগের কবিরাজি ও আধ্যাত্মিকতার জটিল রোগের চিকিৎসা করছেন তার কোনো সরকারি স্বীকৃতিপত্র নেই। নেই কোনো দাওয়াখানা বা ঔষুধ তৈরীর ব্যবস্থা। আর এসব জটিল রোগের চিকিৎসা করছে সাধারণ জ্ঞানের উপর ভর করে। এরা রোগের বর্নণা শুনে হাত চালিয়ে কিংবা কৌশলে জ্বিনের আঁচর আছে বলে ঝাড় ফুঁক করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়।

তারা আরো জানায়, এসব চিকিৎসা কেন্দ্রের পাতানো ফাঁদে পড়ে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে। কবিরাজ ও হারবাল চিকিৎসায় নেই কোন সার্টিফিকেট, নেই ড্রাগ লাইসেন্স বা নেই কোন কাগজপত্র। দিন হারবালে রিসিপশনে কাজ অথবা ছোটখাট রোগ ঔষধি গাছের দ্বারা ভালো করে হয়ে গেছেন হারবাল ডাক্তার ও কবিরাজ। ওই ভুয়া কবিরাজ পানি পড়াও দিচ্ছে রোগীদেরকে।

এবিষয়ে বনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন ওই ভুয়া কবিরাজ এলাকায় চিকিৎসার নামে মানুষের সাথে সে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য তিনি প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানান।

জানতে চাইলে ওই ভুয়া কবিরাজ শফিকুল ইসলাম যশোরী বলেন, আমার কিছু অভিজ্ঞাতা আছে তাই আমি রোগীদের চিকিৎসা করছি।

বিষয়টি তদন্ত করে ওই ভন্ড কবিরারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শেখ রাসেল হাসান।

ad

পাঠকের মতামত