জিম্বাবুয়ের নিয়ন্ত্রণ সেনাবাহিনীর হাতে!
আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়েতে রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হওয়ার পর অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে রাজধানী হারারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। এদিকে জিম্বাবুয়েতে সেনা অভ্যূত্থানের অভিযোগ অস্বীকার করে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে দেশটির এক সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, সেনা অভ্যূত্থান নয়, প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের চারপাশে যেসব দুর্নীতিবাজ রয়েছে তাদের নির্মূলে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি।
ভাষণে জেনারেল পদমর্যাদার ওই কর্মকর্তা বলেন, আমরা জাতিকে নিশ্চিত করতে চাই, প্রেসিডেন্ট মুগাবে ও তার স্ত্রী সুস্থ আছেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
আমরা তার চারপাশে থাকা দুর্নীতিবাজদের দিকে লক্ষ রাখছি, যারা বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত…। যত দ্রুত আমরা অভিযান শেষ করতে পারব, তত দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। অপরদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জিম্বাবুয়ের সেনাপ্রধান জেনারেল কনস্ট্যানটিনো চিয়েঙ্গার অনুগত বাহিনী মঙ্গলবার রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন স্টেশন জেডবিসির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর বুধবার ওই টেলিভিশনেই এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবেকে ঘিরে থাকা অপরাধীদের দলকে লক্ষ্য করে। তবে ৯৩ বছর বয়সী মুগাবে ও তার পরিবার সুস্থ ও নিরাপদে আছেন।
এই অভিযান শেষ হলেই দেশে দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসবে বলে ওই বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করেন সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র। প্রেসিডেন্ট মুগাবে গত সপ্তাহে তার ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়াকে বরখাস্ত করলে চলমান এই সংকটের সূচনা হয়। নানগাগওয়াকে এতদিন মুগাবের উত্তরসূরি ভাবা হলেও সম্প্রতি তার জায়গায় ফার্স্ট লেডি গ্রেস মুগাবের নাম সামনে চলে আসে।
মুগাবেপত্নীর সঙ্গে নানগাগওয়ার এই বিরোধে ক্ষমতাসীন দল জানু-পিএফে বিভক্তি তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক করে গ্রেস মুগাব বলেন, নানগাগওয়া তার বিরোধিতাকারীদের খুন করতে চান।
মুগাবে ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ থেকে নানগাগওয়াকে সরিয়ে দিলে প্রতিক্রিয়া দেখান সেনা প্রধান চিয়েঙ্গা। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের টানাপড়েন মিটিয়ে দিতে তার বাহিনী প্রস্তুত। এরপর জানু-পিএফ এর পক্ষ থেকে বলা হয়,দেশের শান্তি নষ্ট করতেই সেনাপ্রধান উসকানিমূলক ওই বক্তব্য দিয়েছেন, যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাল্টাপাল্টি এই বক্তব্যের মধ্যে পরিস্থিতি দ্রুত খারাপের দিকে মোড় নেয়। মঙ্গলবার হারারের বাইরে বিভিন্ন সড়কে সেনাবাহিনীর ট্যাংক আর সাঁজোয়া বহর অবস্থান নিলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।