180348

হাজতে যেহেতু ভরছেনই,তাইলে বিএনপিই করি!

স্যার আমি তো বিএনপি না। কবে বিএনপি করলাম! করি তো আওয়ামী লীগ।’ – এ কথা শুনেই যেন চমকে ওঠেন পুলিশ কর্মকর্তা এবিএম শাহ আলম।

চমক না ভাঙ্গতেই হাজতখানা থেকে উল্টো প্রশ্ন উঠে আসে, স্যার, আমারে বিএনপির মিটিং-মিছিলে কখনো দ্যাখছেন! আমি তো আওয়ামী লীগের মিটিং এ যাই।

আওয়ামী লীগের মিছিলে যান!

হ, স্যার। রেগুলার যাই।

কার মিছিলে?

নিরুত্তর থাকেন সাভারের শ্যামপুর গ্রামের ফুলের আড়তদার হাজী জয়নুল আবেদীন। ‘মনে হয় আমারে আনছে পোলার ল্যাইগ্যা। আমার পোলা জামাল আবার বিএনপি করে।’

আম গাছে আবার জাম ধরে নাকি?

দারোগার প্রশ্নে জ্বলেই ওঠেন হাজী জয়নুল আবেদীন। এবার রাখঢাক না রেখেই বলেন, হাজতে যেহেতু ভরছেনই, তাইলে বিএনপিই করি।

হাজতখানায় আটক কয়েকজন। চিত্রটি রোববার দুপুরের। সাভার মডেল থানার হাজতে এভাবেই কথা বিনিময় হচ্ছিলো পুলিশ কর্মকর্তা আর হাজতির।

বাইরে তখন হাজতিদের অপেক্ষায় প্রিজনভ্যান। অপেক্ষায় আটককৃতদের শিশু সন্তান থেকে তাদের প্রিয় স্বজনরা।

গত দু’দিনে স্বাভাবিক কার্যক্রমের তুলনায় বেশ ব্যস্ততা বেড়ে গেছে পুলিশের। কারণ বিএনপির কর্মসূচি।

চোর ডাকাতের পেছনে না ছুটে ক’দিন তালিকা ধরে ছুটতে হয়েছে বিশেষ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি।প্রায় দেড় বছর পর রোববার (১২ নভেম্বর) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ ডেকেছে সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি।

৭ নভেম্বর তাদের ‘বিপ্লব ও জাতীয় সংহতি দিবস’ উপলক্ষে এই সমাবেশে বক্তৃতা দেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

বিএনপির ডাকা এই সমাবেশ বেশ দুর্গতিতেই ফেলেছে হাজী জয়নুল আবেদীনের মতো বিএনপির ‘ভাসাভাসা’ কর্মী-সমর্থকদের।

কারণ দলের প্রান্তিক থেকে মধ্যম সারির নেতাকর্মী আর সমর্থকরা ঘরছাড়া হলেও হাজী জয়নুল আবেদীনের মতো মানুষরা দিব্যি নিজের বাড়িতেই থাকতেন। কল্পনাও করেননি আটকের এমন আঁচড় পড়বে তাদের ওপর।

কিন্তু বিধিবাম। তিনি ছাড়াও তার মতো অনেকেই নিজস্ব কাজের গণ্ডির বাইরে থেকে এখন হাজতখানায়।

তবে সালেহপুরের রাজীব হাসানের কোন রাখঢাক নেই। নিজেকে বাঁচাতে থানা হাজতে ফুলের আড়তদার হাজী জয়নুল আবেদীন। ছবি: জাহিদুর রহমান

ছলনায় আশ্রয় নিতে হয়নি তাকে। দারোগার প্রশ্নে সপাট উত্তর, ‘হ স্যার। আমি বিএনপির সমার্থক।’

তবে সবাই যে রাজীবের মতো, তা নয়। যেমন শোভাপুরের মনির হোসেন আলাদা।

তার কষ্টের উক্তি, ‘রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়।’

বিএনপির সমাবেশ ঘিরে একদিকে সড়ক মহাসড়কে যেমন পরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে, বিপরীতে ভরে উঠেছে ঢাকার আশপাশের থানাগুলোর হাজতখানা।

বিএনপির সমাবেশ ঘিরেই কি এতো ধড়পাকড়? বিষয়টি খোলাসা করতে চাননি পুলিশ কর্মকর্তারা।

‘এটা আমাদের রুটিন ওয়ার্ক। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা নতুন না। ধারাবাহিকতা মাত্র।’- অপ্রিয় জবাব এক পুলিশ কর্মকর্তার।এটা আমাদের রুটিন ওয়ার্ক। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা নতুন না। ধারাবাহিকতা মাত্র।’- অপ্রিয় জবাব এক পুলিশ কর্মকর্তার।

সূত্র বাংলা নিউজ

ad

পাঠকের মতামত