
‘আমি চাই না আমার সন্তানরা কষ্ট করে দিন কাটাক’
জীবিকার তাগিদে মানুষ কত কি না করেন। ছুটে চলেন একদেশ থেকে অন্যদেশে। পরিবারের মায়া ছেড়ে পাড়ি দেন এক জেলা থেকে আরেক জেলায়। কৃষি কাজ থেকে শুরু করে মাটি কাটার কাজও করেন তারা। এমনি একজন বাবুল মিয়া। তিনি ঢাকা শহরের এসেছেন জীবিকার তাগিদে। অনেক খোঁজা খুঁজির পর কোনো চাকরি না পেয়ে তিনি হয়ে উঠেন মৌসুমী ঝাল মুড়ি বিক্রেতা।
বাবুল মিয়ার সাথে আলাপকালে তিনি জানান, তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের হবিগঞ্জ উপজেলায়। তিনি গ্রামে কৃষি কাজ করেন। কিন্তু সংসারের অভাব পূরণ করতে মাঝে মধ্যে ঢাকাতে আসেন। ঢাকা এসে তিনি বিভিন্ন কাজ করেন। কাজের সেই টাকা দিয়ে তার সংসার চলে। তার তিন মেয়ে আর দুই ছেলে নিয়ে সংসার। একছেলে অষ্টম আরেক ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াশুনা করে।
বড় মেয়ে একাদশে মেজো মেয়ে সপ্তম ও ছোট মেয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। তিনি গ্রামে অপরের বাড়িতে কৃষি কাজ করতেন। ছোটকালে বাবা মরে যাওয়া তাকে পরিবারের হাল ধরতে হয়েছে। তিন ভাইয়ের মধ্যে সে ছিলো বড়। সেই কারণে তার পড়ালেখা করতে পারেনি।
বর্তমানে সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করেই তাকে রাত দিন পরিশ্রম করতে হয়। বছরের ছয় মাসই ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে কাজের খোঁজে ঘুরে বেড়াতে হয় তাকে। কোন চাকরি না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ঝালমুড়ি বিক্রি করেন। প্রতিদিন ৮০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা বিক্রি করলে ৪শ থেকে ৫শ টাকা আয় হয় বলে তিনি জানান।
গত শনিবার বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে ঝালমুড়ি তৈরি করার সময় তিনি এ কথাগুলো বলেছেন।
তিনি আরো জানান, হবিগঞ্জে কৃষি কাজ বলতে চা-বাগানের কাজ। কিছু জমিতে ধান চাষও করা হয়। সেখানে শ্রমিকের মজুরি অনেক কম। তা দিয়ে সংসার চালাতে অনেক সমস্যা পড়তে হয়। আবার ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে হয়। আমি চাই না আমার মতো আমার সন্তানরা সারা জীবন কষ্টকরে দিন কাটাক। তারা শিক্ষিত হয়ে নিজেরা কিছু করবে বলেও তিনি জানান। তাই সিলেটে কাজ না থাকলে ঢাকায় এসে বিভিন্ন কাজ করে থাকি। বেশি ভাগ সময়ই ঝালমুড়ি বিক্রি করি।