বিয়ের জন্য উপযুক্ত এইচআইভি আক্রান্ত পাত্র-পাত্রী চাই!
এইচআইভি আক্রান্তদের যেখানে সমাজ মেনে নেয় না, হাসপাতালও ফিরিয়ে দেয় সেই। তাদের নিয়ে চলে এক প্রকার মানসিক যুদ্ধ। সেই প্রথা কাটিয়ে এবার ভারতে প্রকাশ্যেই এইচআইভি আক্রান্ত পাত্র-পাত্রী খোঁজা হচ্ছে। এইচআইভি আক্রান্ত পাত্র-পাত্রী বিয়ের জন্য খোলা হয়েছে ওয়েবসাইট। সেখানে কোনো প্রকার লুকোচুরি নেই। সবার সামনেই চলছে পরিচয় আদান-প্রদান, এমনকি ছবিরও আদান-প্রদান। আর এই কাজগুলো চলছে প্রকাশ্যেই।
এইচআইভি আক্রান্তদের জন্য ভারতে বিয়ের ওয়েবসাইট রয়েছে প্রায় চার থেকে পাঁচটি। যার প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বছরে গড়ে একশ থেকে দেড়শ এইচআইভি আক্রান্ত পাত্র-পাত্রীর বিয়ে হচ্ছে। এটা নি:স্বন্দেহে বেশ ভালো একটা উদ্যোগ বলে মনে করছেন সেদেশের সমাজকর্মীরা। শুধু যে এইচআইভি আক্রান্তদের বিয়ে হচ্ছে তা নয়, এসব সাইটের কয়েকটিতে ‘স্পেশাল কেস’ নামেরও একটা বিভাগ রাখা হয়েছে। যে বিভাগে ক্যান্সার আক্রান্ত, শারীরিক প্রতিবন্ধী বা অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্তদের বিয়ের সম্বন্ধ করা হচ্ছে।
ভারতের সমাজকর্মীরা অনেকে মনে করছেন এইচআইভি নিয়ে দূর ছাই করার যে মানসিকতা সেখানে এটি খুব ভালো একটি উদ্যোগ। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী সাইটগুলো তৈরি হওয়াতেই বোঝা যাচ্ছে সামাজিক ভাবনায় বদল হতে শুরু করেছে।
জানা গেছে এই সাইটের উদ্বোধন করেন মহারাষ্ট্রের এক ট্রান্সপোর্ট অফিসার। যার নাম অনিল ভালিভ। তিনি ২০০৬ সাল থেকে একটি সাইট চালু করেন। এখন পর্যন্ত সেই সাইটের বদৌলতে প্রায় আড়াই হাজার এইচআইভি আক্রান্তের পাত্র-পাত্রীর বিয়ে হয়েছে। আবার বেঙ্গালুরু থেকে ২০১৩ সালে একটি সাইট চালু করেন ধনঞ্জয় নামে এক জন। আর এক সাইটের শাখা রয়েছে গুরুগ্রাম ও কলকাতায়। এই রকম সাইটেই বছর দেড়েক আগে বেঙ্গালুরুর এক আইটি কর্মী-র সঙ্গে বিয়ে হয়েছে কলকাতার এক অবাঙালি ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে।
তিনি নিজেই নাকি বলেন, ‘নিজের রোগ আছে জানার পর কোনও সুস্থ মেয়েকে বিয়ের প্রশ্ন ওঠে না। আবার বিয়ে না করলে কেন করছি না সেই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। এই রকম একটা দিশেহারা অবস্থায় সমাধান পেয়েছি ওয়েবসাইটিতেই।’
এ বিষয়ে চিকিৎসকরা জানান, এইচআইভি রোগের চিকিৎসা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত। চিকিৎসায় করালে আক্রান্তরা ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারেন। সেখান থেকে এই রোগে আক্রান্তদের বিবাহিত জীবন-যাপনের ইচ্ছে বাড়ছে।
কিন্তু এ বিষয় নিয়ে নানা জনের মনে উঁকি দিচ্ছে নানা রকম প্রশ্ন। তাদের কেউ কেউ বলছেন এই রোগ নিয়েতো এখনও অনেক রকম কথা ওঠে তাহলে যারা এই ওয়েব সাইটে নাম প্রকাশ করছেন বা ছবি, পরিচয় প্রকাশ করছেন তারা কোন সাহসে এগুলো করতে পারছেন। অবশ্য তার জবাবে সমাজবিদরাও জানান মানুষের দেয়োলে পিঠ ঠেকে গেলে আর কিছু করার থাকে না। তখনই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালানো হয়। আর সেই ধারণায় হয়ত আজকের এই ঘুরে দাঁড়ানো।