179469

চ্যালেঞ্জে নেমে পরপারে প্রেমিক-প্রেমিকা

প্রেমিক-প্রেমিকা বিক্রম হাজরা-রিয়া চক্রবর্তী২৪ ঘণ্টায় চ্যালেঞ্জ ছিল ১,৬৬৪ কিলোমিটার। প্রায় ১৫ কিলোমিটার পেরোলেই তা পূরণ হয়ে যেত। কিন্তু শেষরক্ষা হল না তাদের। মোটরবাইক রেসে বেরিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যুবক-যুবতী। শনিবার ভোরে গলসিতে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে পুলিশ। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথেই তাদের মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানায়, বিক্রম হাজরা (২২) নামে ওই যুবক বর্ধমান শহরের বিবেকানন্দ কলেজ মোড় ও তার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী (২১) বড়নীলপুরের বাসিন্দা ছিলেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বর্ধমান থেকে মোটরবাইকে উত্তর প্রদেশের ফতেপুর গিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেখান থেকে ফিরে আসার চ্যালেঞ্জ নিয়ে শুক্রবার ভোরে বেরিয়েছিলেন দুজনে।

এ ব্যাপারে ইন্ধন দেয়ার অভিযোগে শনিবার শহরের এক মোটর স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের কর্ণধারের ওপর চড়াও হন মৃতদের লোকজন। শঙ্কর মুরারকা নামে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ।

জানা যায়, রাজ কলেজের ইংরেজি অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বিক্রমের মোটরবাইক চালানোর নেশা ছিল। বিবেকানন্দ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রিয়াকে সঙ্গে নিয়ে মাঝে-মধ্যেই বেরিয়ে পড়তেন তিনি। রিয়া অবশ্য মোটরবাইক চালাতে পারতেন না।

ফতেপুর রওনা হওয়ার আগে বিক্রম ফেসবুকে পোস্ট দেন, ‘গতি যদি আমাকে খুন করে, তাহলে কেউ কান্নাকাটি করো না’। এ দিন সকালে জাতীয় সড়কে কোনও গাড়ি তাদের ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায় বলে পুলিশের ধারনা।

একমাত্র ছেলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর বারবার অচেতন হয়ে পড়ছেন বিক্রমের বাবা-মা।
বিক্রমের কাকা তড়িৎ বলেন, মোটরবাইকের রেস করা নেশা হয়ে উঠেছিল তার। তার টানেই প্রাণ গেল।

একই পরিস্থিতি রিয়ার বাড়িতেও। বছর দু’য়েক আগে রিয়ার দাদারও দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে থাকতেন একটি হোটেলের কর্মী শিবনাথ চক্রবর্তী। তাদের আত্মীয় সাহেব ঘোষ, সুব্রত ভক্তদের কথায়, ওদের বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছিল। মাঝে-মধ্যেই মোটরবাইকে বেড়াতে যেত তারা। কিন্তু এমন হবে কল্পনারও বাইরে।

পরিবারের অভিযোগ, শঙ্করই বাইক রেস করতে উৎসাহ দেন বিক্রমকে। তার জেরেই দুজনের মৃত্যু হল। এ দিন শঙ্কর হাসপাতালে এলে তার ওপর চড়াও হন মৃতদের লোকজন। যদিও শঙ্করের বক্তব্য, আমি প্রায় ২৩ ঘণ্টায় ওই পথ যাতায়াত করেছি। তা জানার পর আমাকে না জানিয়েই বিক্রম চলে গিয়েছিল। বারণ করলেও কথা শোনেনি।

পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, সেদিন কী ঘটেছে খতিয়ে দেখা হবে। জেলার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বেপরোয়া গাড়ি, মোটরবাইক চালানো আটকাতে জেলায় এক বছরে ৫৮৯টি সচেতনতা প্রচার করা হয়েছে। তারপরেও অনেকে সতর্ক হচ্ছেন না। সূত্র : আনন্দবাজার

ad

পাঠকের মতামত