178972

সবাই এই বৃদ্ধাকে পাগল ভেবেছিলেন কিন্তু পরিচয় জানার পর সবাই স্তব্ধ ……!

কেউ খেতে দিচ্ছেন। কেউ পরিত্যক্ত পোশাক জোগাড় করে দিয়েছেন। কেউ দিয়েছেন কম্বল। রাজারহাট বিষ্টুপুর বটতলার বাসস্ট্যান্ডে পড়ে থাকা এক বৃদ্ধাকে এভাবেই দেখভাল করছেন স্থানীয় লোকজন ও পথচারীরা।

বৃদ্ধা কী করে ওখানে এলেন? স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একদিন সকালে হঠাৎ ওই বৃদ্ধাকে বাসস্ট্যান্ডে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। প্রথমে তাঁরা ভেবে ছিলেন মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন।

কিন্তু পরে তাঁদের সেই ভুল ভাঙে। তাঁরা জানান, খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে ওই বৃদ্ধা এক সময় রাজারহাট-বিষ্টুপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকার ছোটো চাঁদপুরের বাসিন্দা ছিলেন।

স্থানীয় এলাকায় তিনি ‘গোপালের মা’ নামে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু পরে তিনি ছেলেকে নিয়ে অন্যত্র চলে যান। সোমবার দুপুরে বটতলা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেল, শীর্ণকায় বৃদ্ধা বাসস্ট্যান্ডের মেঝেতে কম্বলের উপরে শুয়ে রয়েছেন। বাসস্ট্যান্ডের পাশে ভাতের হোটেল রয়েছে ভরান মণ্ডলের।

তিনি গত ছ’মাস ধরে ওই বৃদ্ধাকে খাওয়াচ্ছেন। ভরান জানান, বৃদ্ধা খুব কম কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘‘এই বৃদ্ধার সঙ্গে কয়েকবার কথা বলে মনে হয়েছে, তিনি শিক্ষিত।

এই বৃদ্ধাকে মানসিক ভারসাম্যহীন ভেবেছিলেন সবাই, পরিচয় জানার পর অবাক সবাই। কিন্তু তিনি কিছুতেই নিজের বিষয়ে কোনও কথা কাউকেই বলেন না।’’

স্থানীয়েরা জানান, তাঁরা চেষ্টা করছেন কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মারফৎ বৃদ্ধাকে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়ার। ইতিমধ্যেই বৃদ্ধার ছবি দিয়ে ফেসবুকে পোস্টও করেছে স্থানীয় লোকজন।

স্থানীয় তৃণমূল কর্মী অভিজিৎ চক্রবর্তী জানান, সোমবার সন্ধ্যায় ওই বৃদ্ধা সম্বন্ধে দু’একটি তথ্য এসেছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

অভিজিৎ জানান, বৃদ্ধা এদিন বিকেলে একজনকে জানিয়েছেন, তাঁর নাম সরমা পাল। তিনি রাজারহাটের ছাপনায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চাকরি করতেন। কিন্তু তিনি নিজের ছেলে গোপালকে নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি।

অভিজিতের কথায়, ‘‘মহিলার স্মৃতিভ্রংশ রোগের শিকার কি না দেখা হচ্ছে। যেটা ভাবাচ্ছে তা হল, রাস্তায় এভাবে উনি পড়ে রয়েছেন।

মশার কামড়ে ডেঙ্গি হলে কী হবে। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি ওঁর পরিবারের লোকজনই ওঁকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে গিয়েছে কি না।’’

ad

পাঠকের মতামত