178206

নাটোরের লালন এক টাকা কাপ চা বিক্রি করে লাখপতি

বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি তাতে এক কাপ চা চার থেকে পাঁচ টাকা, আর একটি পান কমপক্ষে তিন থেকে পাঁচ টাকা বিক্রি হয়। সেখানে এক টাকা কাপ চা আর একটি পান এক টাকা করে পাওয়া যাবে তা ভাবাই যায় না।

তবে ভাবতে না পারলেও এটাই বাস্তব। প্রয়োজনে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন, নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামের ‘এক টাকার মোড়’ থেকে।

চায়ের দোকানটিতে সকালে আর বিকেলে ব্যপক জনসমাগম ঘটে। মাত্র পাঁচশ’ টাকার পুঁজি খাটিয়ে এখন প্রায় ৫ লাখ টাকা মালিক হয়েছেন তিনি।

উপজেলার নওপাড়া গ্রামে ঈদগাহ সংলগ্ন এই মোড়টির নাম এক সময় নওপাড়া ঈদগাহ মোড় হিসেবে সকলের জানা থাকলেও এখন ওই মোড়টি সকলের কাছে ‘এক টাকার মোড়’ হিসেবে পরিচিত। শুধু নিজ এলাকার মানুষ নয় সেখানে নাটোর সদরসহ আসপাশের উপজেলা থেকেও চা খেতে আসেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

নওপাড়া গ্রামের সোবাহান ব্যপারীর ছেলে চা বিক্রেতা রজব ব্যপারী লালন বর্তমান বয়স তার প্রায় ৩৯ বছর। সে উপজেলার ঠ্যঙ্গামারা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন।

মুদি দোকানদার বড় ভাই আব্দুর রাজ্জাক দেশের বাইরে চলে যাওয়ায় তিনি সেই ব্যবসার হাল ধরেছিলেন ছাত্রাবস্থায় প্রায় দু’বছর ধরে। তখন থেকে তার ব্যবসার দিকেই ঝোঁক চলে আসে।

১৯৯১ সালে প্রথমে তিনি মাত্র পাঁচ শ’ টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। প্রায় দু’যুগ ধরে এই চায়ের ক্ষুদ্র ব্যবসা করে লালনের পুঁজি এখন প্রায় ৫ লাখ টাকা। প্রথম দু’বছর পঞ্চাশ পয়সা করে এককাপ চা ও একটি পান বিক্রি করেছেন।

তারপর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি এক টাকা করে চা ও পান বিক্রি করে আসছে। তার দোকানে প্রতিদিন প্রায় ১৫শ’ কাপ চা ও ১২/১৩শ’ টি পান বিক্রি হয়। অতি সামান্য লাভ করেই তিনি এখন নিজেকে সাবলম্বী করে গড়ে তুলেছেন।

২০১৪ সালে লালন একই গ্রামের সুবর্ণাা আক্তার শিমাকে বিয়ে করে। শিমা তখন নাটোর নবাব সিরাজ উদ-দৌলা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

বতর্মানে তাদের আড়াই বছরের আল-লাম নামে একমাত্র পুত্র সন্তান রয়েছে। স্ত্রী শিমা বর্তমানে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। লালন তার স্ত্রীকে আরও উচ্চতর শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চান।

ad

পাঠকের মতামত