আদালতে কাঁদলেন খালেদা জিয়া
আদালতে বক্তব্য প্রদানের সময় নিজ বাসায় ‘অবরুদ্ধ’ ও সন্তানের মৃত্যুর খবর পাওয়ার কথা উল্লেখ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) পুরান ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ৫ নং বিশেষ জজ আদালতে তিনি এ অসমাপ্ত বক্তব্য দেন। এসময় খালেদা জিয়া আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এবং বাসায় ‘অবরুদ্ধ’ ও ছেলে জন্য কান্নায় চোখ ভিজালেন। কিন্তু পরক্ষণেই আবার নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে বক্তব্য শুরু করেন তিনি।
খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষক হিসেবে উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে জিয়াউর রহমানের মুক্তিযোদ্ধের অবদানও তুলে ধরেন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য তার অবদান তুলে ধরেন।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘মাননীয় আদালত আপনি নিশ্চয়ই দেখতে পাচ্ছেন, সম্প্রতি বছরগুলোতে আমরা বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। জারি করা হচ্ছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। আমার বাসা ও রাজনৈতিক কার্যালয়ে বালুর ট্রাক দিয়ে কয়েক দফায় অবরোদ্ধ কের রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, আমি অফিসে অবরোদ্ধ থাকা অবস্থায় বিদ্যু, পানি, টেলিফোন, ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমি অবরোদ্ধ অবস্থাতে বিদেশে চিকিৎসাধীন ছোট ছেলের মৃত্যুর সংবাদ। এর পরই খালেদা জিয়া আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এবং কান্নায় ভেঙে পড়েন। কিন্তু পরক্ষণেই আবার নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে বক্তব্য শুরু করেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আমি সেইদিন ( কোকোর মৃত্যুর দিন) এবং আমরা সঙ্গে যারা অফিসে অবরোদ্ধে ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ বানোয়াট একটি মামলা দায়ের করো হয়। অভিযোগ করা হয় রাস্তায় গাড়ি পুড়ানো এভং বিস্ফোরক দিয়ে মানুষ হত্যার। অফিসে অবরোদ্ধ থাকাকালিন অবস্থায় আমরা এসব করেছি। এটা কি কোনো সভ্য মানুষিকতার আচরণ হতে পারে?।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
২০১০ সালের ৫ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-আর রশিদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন, মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল (ইকোনো কামাল), ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।