
বিয়ের আগে লাশ হয়ে এল শহিদুল
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পটুয়াপাড়া গ্রামে দিনমজুর শহিদুল ইসলামের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। বাড়িতে খবর এসেছে মালয়েশিয়ায় ভূমিধসে ছেলে মনিরুল মারা গেছে। কিছুদিন পর বিয়ের জন্য দেশে ফেরার কথা ছিল তার। অথচ এখন বাড়িতে আসবে তার লাশ। এ খবরে গত দু’দিন ধরেই বাড়িতে চলছে আহাজারি। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শহিদুলের গোটা পৃথিবীই যেন অন্ধকার হয়ে গেছে।
মালয়েশিয়ার পেনাংএ নির্মাণ স্থানে ভূমিধসে নিহত বাংলাদেশিদের মধ্যে রয়েছে মনিরুল ইসলাম মনির (২৬)। মনির যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পটুয়াপাড়া গ্রামের দিনমজুর শহিদুল ইসলামের ছেলে।
গত শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে মালয়েশিয়ার পেনাংএ ভূমিধসে কয়েকজন বাংলাদেশিসহ অন্তত ১১ জন নিহত হয়। দুর্ঘটনার আধাঘণ্টা পর মনিরুলের মামা জসিম মালয়েশিয়া থেকে মোবাইল ফোনে বাড়িতে এ দুর্ঘটনার খবর দেন। জসিমও মালয়েশিয়ার একই এলাকায় রয়েছেন। মনিরুলের মৃত্যুর খবর পাওয়র পর তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র ছেলের মৃত্যুর খবরে মা রহিমা খাতুন বারবার মুরছা যাচ্ছেন। বাবাও নির্বাক।
মনিরুলের বাবা দিনমজুর শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আড়াই বছর আগে ধারদেনা করে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা খচর করে কলিং ভিসায় ছেলেকে মালয়েশিয়ায় পাঠিয়েছিলাম। সেখানে মনিরুল বিল্ডিং কনস্ট্রাকশনের কাজ করত। ইতোমধ্যে ধারদেনা শোধ করলেও নতুন ওয়ার্ক পারমিটের জন্য গত ছয় মাস কোনো টাকা পাঠায়নি মনিরুল।’
নিহতের বোন ময়না খাতুন বলেন, তার ভাইয়ের মোবাইল ফোন সব সময় খোলা থাকত এবং সবসময় সে ফেসবুকে থাকত। ওইদিন সকালে কাজে যোগদানের সময়ও তার ফেসবুক খোলা ছিল। পরে বাংলাদেশ সময় ১০টার দিকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ময়না আরও জানান, তার ভাই নতুন ওয়ার্ক পারমিটের জন্য চেষ্টা করছিল। পারমিটের কাগজ হাতে পেলে বাড়িতে এসে বিয়েরও কথা চলছিল তার। ভাইয়ের বিয়ের বদলে এখন লাশের অপেক্ষায় তারা। একথা বলে কান্নায় বাকরুদ্ধ হয়ে যায় ময়নার কণ্ঠস্বর।