177556

ফোন নিয়ে ঝগড়া, বুশরাকে হত্যা বালিশ চাপা দিয়ে

রাজধানীর বনশ্রীতে গৃহবধূ জান্নাতুল বুশরা সুমনাকে (২৫) নিজেই হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করলেন স্বামী মোহাম্মদ রাসেল। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের পর সম্প্রতি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।

পরে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছেন আদালত।
জবানবন্দিতে রাসেল স্বীকার করেছেন যে অফিস থেকে বাসায় ফিরে স্ত্রী সুমনাকে অন্য কারো সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেখে এ নিয়ে তাঁদের ঝগড়া শুরু হয়। এরই এক পর্যায়ে তিনি সুমনাকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করেন। এরপর নিজে বাঁচার জন্য ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে নিতে নাটক সাজান রাসেল।

গত ৮ অক্টোবর রাতে রামপুরার বনশ্রী এলাকার একটি বাড়িতে খুন হন গৃহবধূ জান্নাতুল বুশরা সুমনা। ওই দিন রাত পৌনে ১০টার দিকে স্বামী রাসেল ও তাঁর দুই বন্ধু সুমনাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান যে সুমনা আগেই মারা গেছেন।

হাসপাতালে রাসেল সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, তিনি সন্ধ্যায় বনানীর অফিস থেকে ফিরে দেখেন তাঁর বাসার দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। বাইরে থেকে নক করলে একপর্যায়ে দরজা খুলে এক যুবক বের হয়।

জানতে চাইলে যুবক জানায় যে সে ইন্টারনেট সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠানের লোক। পরে তাকে ধরতে গেলে ওই যুবক ইট দিয়ে রাসেলের মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায়। রাসেল সাততলার ছাদ থেকে নিচে নেমে চিৎকার করে বলতে থাকেন, তাঁর স্ত্রীকে এক যুবক হত্যা করে পালিয়ে গেছে।
এ ঘটনায় পরে সুমনার বাবা রাসেলকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুই দফায় রিমান্ডে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় রাসেল পুলিশকে পুরো ঘটনা খুলে বলেন। পরে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামপুরা থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা গতকাল বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রাসেল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। ’

পুলিশ সূত্র জানায়, প্রথম দিকের জিজ্ঞাসাবাদে বেশ চতুরভাবে হত্যাকাণ্ডে নিজের দায় এড়ানোর চেষ্টা করেন রাসেল। পরে অব্যাহত জিজ্ঞাসাবাদ এবং প্রমাণ দেখানোর পর রাসেল স্বীকার করেন যে তিনিই স্ত্রীকে হত্যা করেছেন।

রাসেল পুলিশকে জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকে সুমনার সঙ্গে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতো। কিছুদিন আগে সুমনা মোবাইল ফোনে এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেন। সেটিকে সন্দেহের চোখে দেখেন রাসেল। ঘটনার দিন গত ৮ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকেও বাসায় ফিরে রাসেল দেখতে পান সুমনা ফোনে কারো সঙ্গে কথা বলছেন। এ নিয়ে ঝগড়ার সময় সুমনাকে হত্যা করেন তিনি। স্ত্রীকে হত্যার পর রাসেল নাটক সাজালেও পুলিশ তদন্তে নেমে তাঁকে সন্দেহ করে। পরে পুলিশের সন্দেহই সত্যি হয়।

সূত্র: কালের কন্ঠ

ad

পাঠকের মতামত