মা’য়ের অবৈধ দ্বিতীয় বিয়ে! বিয়ে ভেঙে দিয়ে মাকে ফিরে পেতে ছেলের সংবাদ সম্মেলন
ফেনীর পরশুরাম উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হুমায়্নূ শাহরিয়ারের কন্যা রহিমা খাতুন নায়াকে অবৈধভাবে দ্বিতীয় বিয়ে দেয়া হয়েছে। বিয়ে ভেঙে দিয়ে মাকে ফিরে পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তাঁর কিশোর ছেলে আমিনুল এহসান সাজিদ। সোমবার বিকালে শহরের একটি রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে সে।
বক্তব্যে সাজিদ জানায়, নিজ পছন্দে সীতাকুন্ড থানার বাড়বকুন্ড এলাকার চিটাগাং কেমিক্যাল কম্পপ্লেক্সের আনোয়ার উল্যাহর ছেলে খালেদ সাইফুল্যাহ শিবলীর সাথে পরশুরাম থানার দক্ষিণ কোলাপাড়ার মুহুরী বাড়ির হুমায়ূন শাহরিয়ারের কন্যা রহিমা খাতুন নায়ার বিবাহ হয়। তাদের সংসারে আমার জন্ম। বর্তমানে আমি সমাপনী পরীক্ষার্থী। আমাদের সংসার মোটামুটি সুন্দর চলছিল।
তৃতীয় শ্রেনীর দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার পর বেড়ানোর জন্য নানু বাড়িতে গেলে তারা আমাকে আটকিয়ে রাখে। এর কয়েকদিন পর আমার আম্মুকে নানু বাড়িতে নিয়ে আসে। এ নিয়ে আমার বাবা মা পারস্পরিক ঝগড়ায় লিপ্ত হয়।
এক পর্যায়ে আমার বাবাকে না জানিয়ে আমার বড় খালা হালিমা খাতুন দিনার পরশুরাম সলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমাকে ভর্তি করিয়ে দেয়। পরে তারা আমার আব্বুকে প্রস্তাব দেয় নানু বাড়িতে থাকার জন্য। এতে আমার বাবা রাজি হননি। এ নিয়ে কথা বলায় আমার আব্বুকে অনেক অপমান অপদস্ত করে নানু বাড়ির লোকজন। ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ঈদুল আযহার কথা বলে ৭দিনের জন্য আমাকে নানুর বাড়িতে নিয়ে যায় বাবা। কিন্তু আমার মাকে নানা নানু ও খালারা আসতে দেয়নি। এরপর আমার আম্মুকে নানু বাড়ি থেকে আনার জন্য অনেকবার গণ্যমাণ্য ব্যক্তিদের পাঠায় আমার বাবা। কিন্তু তারা তাদের অপমান করে ফিরিয়ে দেয়।
৬ আগস্ট আমার বাবা বরাবর একটি তালাকের নোটিশ পাঠায় আমার আম্মু। নোটিশ পেয়ে আমার আব্বু আমার দিকে তাকিয়ে নানুদের সকল শর্ত মেনে আম্মুকে ফিরিয়ে আনার জন্য চট্টগ্রামের মেয়র আজম নাছির, আলাউদ্দিন নাসিম চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপি ও পরশুরামে মেয়র সাজেল চৌধুরীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে আমার নানাদের বুঝিয়ে আম্মুকে বাবার বাড়িতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে।
এতে তারা সকলের নির্দেশ অমান্য করে তালাক নোটিশের ৯০ দিন অতিক্রম করার পূর্বেই বেআইনীভাবে ফুলগাজী উপজেলার বাশুরা গ্রামের কামার বাড়ির নুরের ইসলামের ছেলে বাপ্পির সাথে আমার আম্মুকে বিয়ে দিয়ে দেয়। এর এখনো বিয়ের কাবিননামা হয়নি। এ ঘটনায় আমার জীবন বিপন্ন হওয়ার পথে।
তাই এ অবৈধ বিয়ে ভেঙে দিয়ে আমার আম্মুকে আমার মাঝে ফিরিয়ে দিতে প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সাজিদ। সংবাদ সম্মেলনে ছেলের পিতা খালেদ সাইফুল্লাহ শিবলী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
এদিকে পরশুরাম উপজেলার এক মুক্তিযোদ্ধা জানান, অনৈতিক কাজ ও দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কাজের অভিযোগে বর্তমান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পরিচালক হুমায়ুন শাহরিয়ারকে পরশুরাম উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এছাড়া তার তিন কন্যার স্বভাব চরিত্র ভালো না বলে তিনি জানান।