আমার বিচার কেন আলিয়া মাদরাসা মাঠে?
জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতির দুই মামলায় এক লাখ করে মোট দুই লাখ টাকা মুচলেকায় জামিন পান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান তার জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর তিনি জিয়া অরফানেজ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ চেয়ে আবেদন করেন। আদালত তা মঞ্জুর করেন। তিনি দুপুর ১২টা ১৫ থেকে ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত আদালতে বক্তব্য দেন। তার বক্তব্য শেষ না হওয়ায় পরবর্তী বক্তব্যের জন্য আগামী ২৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেন আদালত।
খালেদা জিয়া বিচারককে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে ধারায় মামলা করা হয়েছে তা বিচারিক আদালতে পরিচালনা হচ্ছে। আমার জন্য বিশেষ আদালত আলিয়া মাদরাসায় স্থাপন করা হয়েছে। আমার বিচার কেন আলিয়া মাদরাসায় করা হবে? আমার বেলায় কেন এ ব্যতিক্রম হবে ।’
তিনি বলেন,‘মাননীয় আদালত আপনি কোথায় বসে এ মামলার বিচার পরিচালনা করছেন। কোথায় স্থাপন করা হয়েছে আপনার স্থান। এটা কি বিচারের কোনো প্রাঙ্গণ। কোর্ট-কাচারি এলাকায় আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় বিশেষ আদালত বসেছে আলিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে। মাদরাসা প্রাঙ্গণের সঙ্গে বিচার ও কোর্ট-কাচারির কোনো সম্পর্ক আছে কি?
এদিন বেলা ১১টা ১৭ মিনিটে ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন চান তিনি। আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও জিয়া উদ্দিন জিয়ার মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর তিনি ১টা ২০ মিনিটে আদালত ত্যাগ করেন।
শুনানিতে খালেদার আইনজীবী জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, খালেদা জিয়া জামিনের শর্ত ভঙ্গ করেননি। তিনি বিদেশে ছিলেন চিকিৎসার জন্য। তিনি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, জামিন দিলে পলাতক হবেন না।
অপরদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, খালেদা জিয়া জামিনের শর্ত ভঙ্গ করেছেন। তিনি বারবার মামলাটি পেছানোর জন্য নানা বাহানা করেছেন। তাই মামলাগুলোতে তার জামিন নামঞ্জুর করা হোক।
আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে প্রতি মামলায় এক লাখ করে মোট দুই লাখ টাকা মুচলেকার বিনিময়ে জামিন মঞ্জুর করেন। জামিনের শর্তে বলা হয়, এরপর থেকে বিদেশ যেতে আদালতের অনুমতি নিতে হবে খালেদা জিয়াকে। আজ আদালতে খালেদা জিয়ার হাজিরা উপলক্ষে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীই সেখানে আসেন। এর মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মোশাররফ হোসেনসহ আরও অনেকে ছিলেন।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এই দুই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ আদালত।