176992

সব হারিয়ে অন্যের বাড়িতে এই অসহায় তরুণী!

রাখাইনের মংডু থেকে এক মাস আগে ফুফুর সাথে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ছেনুয়ারা বেগম। পিতা মাও. নুরুল ইসলাম সৌদি আরবের মক্কা প্রবাসী। মিয়ানমারে সহিংসতা শুরুর আগে ফুফু ফাতেমা বেগমের বাড়িতে বেড়াতে যান ছেনুয়ারা। হঠাৎ ২৫শে আগস্ট শুরু হয় সহিংসতা। তাই নিজ বাড়ী মংডু হাইচ্ছুরাতার বিয়ামুপাড়ায় ফিরতে পারেনি আর। এদেশে পালিয়ে আসলেও হারিয়ে যায় ফুফুর পরিবার থেকে।

বর্তমানে ছেনুয়ারা বেগম টেকনাফ হ্নীলার জাদীমুরা গ্রামের মফজুলুর রহমানের বাড়িতে আশ্রয়ে রয়েছেন। রোববার সকালে ছেনুয়ারা বেগম জানান নির্যাতনের ঘটনা।

ছেনুয়ারা জানান, ২৫শে আগস্ট রাখাইনে মগ মিলিটারির বাহিনী চারিদিকে আক্রমন করেছে। লাঞ্চার মেরে ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দিচ্ছে। প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যাওয়ার সময় নারী-পুরুষ শিশুদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে এবং অনেক শিশুকে আগুনে নিক্ষেপ করে মারছে। এসময় তারাও হাইচ্ছুরাতা গ্রাম থেকে পালিয়ে অন্য এক গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। কয়েক দিন অবস্থান করার পর সেই গ্রাম থেকে গত ২০ই সেপ্টেম্বর রাতের আধাঁরে পেরানপ্রু ঘাট দিয়ে ফুফুর পরিবারের সঙ্গে নাফ নদ পার হয়ে নাইট্যংপাড়া সীমান্ত দিয়ে এদেশে পালিয়ে আসেন। এপারে এসে সকালে বাস স্টান্ডে অবস্থান করেন। ওই সময় ছেনুয়ারা মসজিদের টিউবওয়েলে পানির জন্য যায়। পানি নিয়ে এসে দেখে ফুফু নেই।

চারদিকে খোজাখুজি করে না পেয়ে কাঁদতে থাকেন। পরে জানতে পারেন পুলিশ তার ফুফুর পরিবারকে কুতুপালংয়ের উদ্দেশ্যে গাড়ীতে তুলে দিয়েছে। তার কান্না দেখে কয়েকজন মৌলভী এক হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে তাকেও অন্যান্য রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কুতুপালংয়ের একটি গাড়িতে উঠিয়ে দেন। সেখানে একটি পরিবারের সঙ্গে ৫/৬ দিন থাকার পর মা ও ভাই-বোনদের জন্য কাঁদলে পুনরায় টেকনাফে পাঠিয়ে দেয় ওই পরিবারটি। মাইক্রোবাস যোগে আসার সময় ছেনুয়ারার কান্না দেখে জাদীমুরার এক মহিলা তার সঙ্গে কথা বলে এবং তাকে বাড়িতে নিয়ে যান।

ছেনুয়ারা জানান, রাখাইনে তার মা, ১ বোন ও ৩ ভাই রয়েছে। এখন তারা কি অবস্থায় আছেন সে খবর পাচ্ছেননা। এমনকি সৌদি আরবে পিতার সঙ্গেও কথা বলতে পারছেননা। যে কাগজে নম্বার লেখা ছিল তাও ফুফুর ব্যাগে রয়ে গেছে। কথাগুলো বলার সময় ছেনুয়ারার দু’চোখ ছলছল করছিল। এসময় ওই ঘরের কয়েকজন তাকে সান্তনা দিচ্ছিলেন।

ছেনুয়ারা হ্নীলার ফজলুর রহমানে বাড়ীতে ১০ দিন ধরে আশ্রয়ে রয়েছেন। আত্মীয় স্বজনের খোঁজ নেয়া হচ্ছে। কাউকে না পেলে সরকারী-বেসরকারী সংস্থার কাছে তাকে সমর্পন করা হবে বলে জানিয়েছেন আশ্রয়দাতা পরিবারটি। সূত্র: মানবজমিন

ad

পাঠকের মতামত