নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরল ব্লু-হোয়েল যুবক, বিশেষ অঙ্গ কেটে ফেলতে বললে তিনি…
২৫ বছরের টগবগে যুবক মো. সেকান্দর প্রকাশ রুবেল। চলতি বছরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী কলেজ থেকে স্নাতক (পাস) করেছে।
লিংকের মাধ্যমে প্রবাসী বন্ধুর পাঠানো মরণ খেলা ব্লু-হোয়েলে আসক্ত হয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয় ওই যুবক। খেলার মাত্র তিনটি ধাপ অতিক্রম করেই ৮ অক্টোবর ৪র্থ ধাপে এসে সে তার নিজের স্পর্শকাতর অঙ্গ কেটে ফেলে।
পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসা শেষে তিনি পরিবারের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। বর্তমানে সেকান্দর প্রকাশ রুবেল মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে প্রলাপ বকছে।
সেকান্দর প্রকাশ রুবেল হাটহাজারী উপজেলার পূর্ব ধলই ইউনিয়নের সেকান্দরপাড়া এলাকার আবদুস সামাদ হাবিলদার বাড়ির মধ্যপ্রাচ্য (কুয়েত) প্রবাসী আবুল বশরের বড় ছেলে। সে ছোটবেলা থেকে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের গুমানমর্দ্দন ইউনিয়নের পেশকার হাট এলাকার নানার বাড়ি মিনা গাজীর বাড়িতে থাকে।
মাসখানেক আগে তার এক প্রবাসী বন্ধু ফেসবুক প্রেরিত লিংকের মাধ্যমে পরিচিত হয় বর্তমান সময়ের আলোচিত ‘ব্লু হোয়েল গেম’ এর সঙ্গে। পরে সেকান্দর ওরফে রুবেল সুইসাইড গেম ব্লু হোয়েলে আসক্ত হয়ে পড়ে।
এরই মধ্যে এডমিনের সম্মতিতে তিনটি ধাপ অতিক্রম করে ৮ অক্টোবর ৪র্থ ধাপে এসে সে তার নিজের গোপনাঙ্গ কেটে ফেলে। তবে বিষয়টি তার পরিবারে সদস্যরা প্রায় এক সপ্তাহ গোপন রাখতে পারলেও রোববার দুপুরে জানাজানি হয়।
খবর পেয়ে ব্লু হোয়েলে আসক্ত সেকান্দরকে দেখতে তার গ্রামের বাড়িতে ভিড় করে কৌতূহলী জনতা।
ব্লু হোয়েল গেমে আসক্ত সেকান্দরের গ্রামের বাড়িতে গেলে কথা হয় তার বাবা প্রবাসী আবুল বশরের সঙ্গে। তিনি ব্লু হোয়েল সুইসাইড গেম খেলতে গিয়ে তার ছেলের এমন অবস্থা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
তিনি জানান, গত ৮ অক্টোবর নিজের শরীরের বিশেষ অঙ্গ কেটে ফেললে বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। বর্তমানে সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে।
সূত্রে জানা যায়, প্রাবাসী বন্ধুর পাঠানো ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে আসা লিঙ্কটিতে ক্লিক করলে মোবাইলফোনে ডাউনলোড হয়ে যায় ব্লু হোয়েল সুইসাইড গেমটি। এরপর গেমটি খেলবে কি না থেকে সম্মতি জানতে চাওয়া হয়।
সম্মতি দিলে প্রথম ধাপে গভীর রাতে তার নানার বাড়িতে হাঁটার চ্যালেঞ্জ দেয়া হয়। সেটিতে উত্তীর্ণ হয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপও সম্পন্ন করে। তবে ওই ধাপগুলোতে কি ছিল তা সে ভালোভাবে বলতে পারেনি।
গত ৮ অক্টোবর রাত ১২টার দিকে চতুর্থ ধাপে এডমিন তাকে তার ওই বিশেষ অঙ্গ কেটে ফেলতে বললে তিনি তা সম্পন্ন করতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের মাধ্যমে নিশ্চিত মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছিল। এ সময় তার আর্তচিৎকারে নানার বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে সে তার বাবার বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের হেফাজতে রয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে ব্লু হোয়েল সুইসাইড গেমটিতে আসক্ত সেকান্দরের মামা মো. জামাল মোবাইলফোনে জানান, সেকান্দার ব্লু হোয়েল গেম খেলেনি। সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। কয়েক মাস যাবৎ সে মানসিক রোগে ভুগছিল।
এ বিষয়ে হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম জানান, বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে আমি জনসাধারণের জনসচেতনতা কামনা করছি।