গাজীপুরে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রের হাতে আঁকা ‘ব্লু হোয়েল’!
স্টাফ রিপোর্টার- গাজীপুরের শ্রীপুরে ব্লু হোয়েল গেমে আসক্ত এক স্কুল শিক্ষার্থীর খোঁজ পাওয়া গেছে। সোমবার সকালে স্কুলে গেলে এক সহপাঠী তার হাতে নীল তিমি–সদৃশ ছবি আঁকা দেখতে পেয়ে শিক্ষককে জানায়।
রাবিক (১৪) নামের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার বেড়াইদেরচালা গ্রামের এক কৃষক পরিবারের সন্তান এবং পাশের কেওয়া পশ্চিম খণ্ড (দারগারচালা) গ্রামের গাজীপুর মেরিডিয়ান স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।
ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিল্লাল হোসেন বলেন, দুপুরের দিকে হঠাৎ সহপাঠীদের একজন তার হাতে কোনো কিছু আঁকা আছে দেখতে পেয়ে শিক্ষককে জানায়। পরে শিক্ষক তার শার্টের হাতা খুলে ডান হাতে রক্তাক্ত তিমি সদৃশ ছবি দেখতে পান। তার ব্যবহৃত মোবাইলে ব্লেড দিয়ে কেটে কেটে তিমির ছবি আঁকার ২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রটি কিছুদিন ধরে স্কুলে অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। অসুস্থতাসহ নানা কারণ দেখিয়ে সে স্কুল থেকে বিভিন্ন সময় ছুটিও নেয়।
ওই শিক্ষার্থী জানায়, ‘সম্প্রতি মোবাইলে ‘ব্লু হোয়েল’ গেম খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ি। ১২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রাত ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট অন করার সঙ্গে সঙ্গে স্ক্রিনে একটা অ্যাপস ভাসতে থাকে। কৌতূহলবশত অ্যাপসটি ওপেন করি। এরপর একটি কল আসলে আমি রিসিভ করি। তারপর আস্তে আস্তে শুরু হয় মজার মজার ধাপ। খেলতে খেলতে আসে চ্যালেঞ্জিং পর্ব।’
তবে গত তিন দিন ধরে সে গেমটি খেলার দাবি করলেও গেমটির কত পর্ব খেলেছে বা কী কী কাজ করেছে এর সুনির্দিষ্ট কোনও জবাব দিতে পারেনি।
এসব জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, ‘আমার তেমন কিছু মনে নেই। তবে গেমটি খেলতে খেলতে আমার হাতে তিমি মাছের ছবি আঁকতে বলা হয়েছিল। আমার হাত কেটে কিভাবে ছবি এঁকেছি, আমিও জানি না। রাতে কী করেছি, আমার কিছু মনে পড়ে না। তবে মাঝে মাঝে হাতের কাটা জায়গায় একটু একটু জ্বালা-যন্ত্রণা করেছে।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। সে কোনো গেমে আসক্ত কি না, তা খতিয়ে দেখতে তার বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হবে।’
এ ব্যাপারে ছেলেটির মা বলেন, ‘আমার ছেলে যে গেমে আসক্ত হয়ে গেছে, আমি আগে তা খেয়াল করিনি। আমি তার ঘরে খুব কম যাই। কিছুদিন ধরে সে আগের থেকে বেশি রাগারাগি করছে। সাধারণ বিষয় নিয়ে রাগ করে ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করছে, আগে এমনটা দেখিনি।’‘
তিনি বলেন, ওকে নিয়ে আমি ভীষণ চিন্তিত। তার মোবাইল সে নিজেই ভেঙে ফেলেছে। এসব প্রাণঘাতী গেম যেন কোনও ছেলে-মেয়ের হাতে পৌঁছাতে না পারে, সেই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনাদের (সাংবাদিকদের) কাছে অনুরোধ করছি। তাকে পারিবারিকভাবে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা এখন শঙ্কামুক্ত।’