পরীক্ষা রেখে বিয়ের পীড়িতে
মির্জাপুরে এক জেএসসি পরীক্ষার্থীর বিয়ে হয়েছে। তার নাম সুমাইয়া আক্তার। সে উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের ছিট মামুদপুর গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী আব্দুল করিমের মেয়ে। এ বছর ছিট মামুদপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে তার। শুক্রবার তার বিয়ে হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক মাস আগে পার্শ্ববর্তী চাঁনপুর গ্রামের ফেরদৌস সিকদারের ছেলে প্রবাসী উজ্জল সিকদার বিয়ের জন্য সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আসেন। গেল শুক্রবার তিনি পরিবারের পছন্দমত বিয়ে করেন।
শনিবার ছিট মামুদপুর স্কুলে গিয়ে জানা যায়, বুধবার থেকে জেএসসি পরীক্ষার মডেল টেস্ট শুরু হয়। এতে বুধবার ও বৃহস্পতিবার সুমাইয়া বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় অংশ নেয়। কিন্তু বিয়ের কারণে গতকাল শনিবার সে পরীক্ষা দিতে আসেনি।
বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন ও সহকারি শিক্ষক ময়নাল হোসেনসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক জানান, সুমাইয়ার বিয়ের বিষয়টি তার সহপাঠীদের কাছে শিক্ষকরা শুনেছেন। জেএসসি পরীক্ষার নিবন্ধন অনুয়ায়ী সুমাইয়ার জন্ম তারিখ ৫ মার্চ ২০০২।
এদিকে সুমাইয়াদের বাড়িতে গিয়ে কথা হলে মা পারভীন আক্তার জানান, মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্কের কারণে প্রবাসী স্বামীর মতামত নিয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। এজন্য টাঙ্গাইলের আদালত থেকে এফিডেভিট (কোর্ট ম্যারেজ) করানো হয়েছে। তবে তিনি কোর্ট ম্যারেজ সংক্রান্ত কোন কাগজ দেখাতে পারেননি।
বর উজ্জল সিকদার জানান, পারিবারিকভাবে তিনি বিয়ে করেছেন। এর আগে তিনি কোর্ট ম্যারেজও করেছেন। তবে তিনিও কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি।
তরফপুর ইউনিয়ন পরিষদে মেম্বার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিয়েটি বন্ধের জন্য তিনি সুমাইয়ার পরিবারের সদস্যদের বারবার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু তারা তা মানেননি। কাউকে না জানিয়ে সন্ধার পর তাকে বিয়ে দেয়া হয়।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত সাদমীন জানান, বাল্য বিবাহের খবর শুনে বিয়েটি বন্ধ করতে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছিল। প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি ঘটনাস্থলে যেতে পারেননি।