176090

অনিশ্চয়তায় ৩ কোটি নাগরিকের স্মার্ট কার্ড

উন্নতমানের নাগরিকদের জন্য এ জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ গত বছরের অক্টোবর শুরু হওয়ার পর থেকে এবছর অক্টোবর ১ বছরে মাত্র ১ কোটি ২৫ লাখের মতো বিতরণ করতে পেরেছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে ১০ কোটি ১৮ লাখ ভোটার রয়েছে। এবছর ভোটার তালিকা হাল নাগাদে আরো ৪৫ লাখ নতুন ভোটার যোগ হচ্ছে। কিন্তু চুক্তি বাতিল হওয়া ফ্রান্সের ওবার্থ কোম্পানি ৯ কোটি কার্ডের মধ্যে সরবরাহ করেছে ৭ কোটি ৭৩ লাখ ব্লাংক কার্ড। ফলে ৩ কোটি নাগরিক স্মার্ট কার্ড থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ অবস্থায় প্রকল্পর মেয়াদ বাড়িয়ে নতুন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে । সেই সঙ্গে উৎপাদন ও বিতরণ কাজে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে সেনাবাহিনীকে।

ইসি সচিবালয়ের করর্মকর্তারা জানান, ৯ কোটি নাগরিকের ইতিমধ্যে ১ কোটি ২৪ লাখ ১০ হাজার স্মার্ট কার্ড (১২ দশমিক ৪১ মিলিয়ন) উৎপাদন ও পার্সোনালাইজেশন (ব্যালাঙ্ক কার্ডের মধ্যে নাগরিক তথ্য ইনপুট সম্পন্নকরণ) হয়েছে।

এরমধ্যে ১ কোটি ৯ লাখ ৮০ হাজার কর্ড (১০ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন) বিতরণ করা হয়েছে। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি ৭ কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার (৭৭ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন) স্মার্ট কার্ড উৎপাদন ও বিতরণ করার কথা রয়েছে।

কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে বিতরণ এগিয়ে নিতে গত বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ইসির সঙ্গে কারিগরি কমিটির বৈঠক সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, তাতে আর সেই লক্ষ্য পূরণের আশা দেখছেন না সংশ্লিষ্টরা।

এনআইডির কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে আইরিশ ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার সংকটের কারণে স্মার্টকার্ড বিতরণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এসব যন্ত্রাংশ সংগ্রহের পর সিটি করপোরেশন এলাকায় কার্ড বিতরণ বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।

সম্প্রতি কমিশন উদ্ভুত সংকট থেকে উত্তরণে নানামুখী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বিকল্প কিছু পন্থা বের করেছে। কমিশন বৈঠকের জন্য তৈরি কার্যপত্রে দেখা যায়, ২০১২ সালের পর নতুন নিবন্ধিত নাগরিকদের স্মার্ট কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। বিদ্যমান সংকটকালে আগের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করলে সারাদেশে অল্পসংখ্যক নাগরিকের স্মার্ট কার্ড বিতরণে যে পরিমাণ আইরিশ ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার লাগবে তার ন্যূনতম মজুদ নেই। ফলে এই কার্যক্রমটি গ্রহণ ইসির জন্য বেশ জটিল ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে।

কিন্তু বিশ্বব্যাংক আইডিয়া প্রকল্পের মাধ্যমে এক কোটি পেপার লেমিনেটেড কার্ড মুদ্রণের জন্য ৯ কোটি ৯৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় বরাদ্দে সম্মতি দিয়েছে, যা ডিসেম্বর-২০১৭ এর মধ্যে বাস্তবায়ন করার শর্তযুক্ত। কার্ড না পাওয়া এসব নাগরিকের আইডিয়া প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা নিলে আইরিশ ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার ডিভাইসের নির্ভরশীলতা ছাড়াই অন্তত একটি কার্ড দেওয়া সম্ভব। এটা পেলে সংশ্লিষ্টরা নাগরিক সেবা প্রাপ্তির বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পাবেন।

ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, বর্তমানে ৭ কোটি ৭৫ লাখ ব্লাংক কার্ড রয়েছে । সেগুলো প্রিন্টের পাশাপাশি ভোটারের তথ্য সন্নিবেশের (পার্সোনালাইজেশন) কাজ চলছে। নির্বাচন কমিশন স্মার্টকার্ড প্রিন্টের কাজ আগস্টের শেষ সপ্তাহে দশটি মেশিন দিয়ে নিজস্ব জনবল দিয়ে প্রিন্টের কাজ শুরু করা হয়েছে।

সম্প্রতি আইডিইএ প্রকল্প পরিচালক ‘এই অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ কার্ড সুষ্ঠুভাবে উৎপাদন ও সুশৃঙ্খলভাবে বিতরণ’ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা চেয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের কাছে চিঠি দিয়েছে।

এতে বলা হয়,৭ কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার কার্ড উৎপাদন এবং চোখের কনীনিকা ও ১০ আঙুলের ছাপ সংগ্রহ পূর্বক কার্ড পৌঁছানোর জন্য সশস্ত্র বাহিনী থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যা অফিসার অথবা জেসিও/ও আর আইডিইএ প্রকল্পে জরুরি ভিত্তিতে সংযুক্ত করা দরকার।

 

সূত্র: বিডি২৪লাইভ

ad

পাঠকের মতামত