175457

বিদ্যুতের দাম সাড়ে ১৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব

বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে গণশুনানিতে গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। প্রস্তাবে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম সাড়ে ১৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে সংস্থাটি।

অন্যদিকে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ইউনিটের দাম ১০.৬৫ শতাংশ বা ৭২ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব করে। তবে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর এসব প্রস্তাব যৌক্তিক নয় বলে মনে করেন ভোক্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা।

মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারের টিসিবি মিলনায়তনে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য আয়োজিত ধারাবাহিক গণশুনানির দ্বিতীয় দিনে এসব প্রস্তাব করা হয়। শুনানিতে সভাপতিত্ব করেন বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন কমিশন সদস্য রহমান মুরশেদ, মাহমুদ উল হক ভূঁইয়া, আব্দুল আজিজ খান ও মিজানুর রহমান।

গণশুনানিতে পিডিবি চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ বলেন, বর্তমানে ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে ঘাটতি থাকায় প্রতি ইউনিটে ৩ শতাংশ হারে লোকসান দেয়া হচ্ছে। শুধু ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫৩৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এ কারণে দাম বাড়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। অপরদিকে বিইআরসি গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি ১০.৬৫ বা ৭২ পয়সা বৃদ্ধির প্রস্তাব করে।

এর আগে সোমবার গণশুনানির প্রথম দিনে পিডিবির উত্থাপিত প্রস্তাবে বলা হয়, বর্তমানে প্রতি ইউনিট পাইকারি বিদ্যুতের গড় সরবরাহ ব্যয় ৫ টাকা ৫৯ পয়সা। অথচ ২০১৬-১৭ অর্থবছরের হিসাবে পিডিবি পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ৪ টাকা ৮৭ পয়সায় বিক্রি করে। এতে দেশের একক পাইকারি বিদ্যুৎ ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান পিডিবির ইউনিটপ্রতি আর্থিক লোকসান ৭২ পয়সা। চলতি অর্থবছর (২০১৭-১৮) পিডিবি পাইকারি বিদ্যুতের প্রাক্কলিত সরবরাহ ব্যয় ধরেছে ইউনিটপ্রতি ৫ টাকা ৯৯ পয়সা। এ হিসাবে ইউনিটপ্রতি লোকসান হবে ১ টাকা ৯ পয়সা। এই বিপুল আর্থিক ক্ষতি সমন্বয় করার জন্যই পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানো উচিত বলে পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ শুনানিতে দাবি করেন।

২০১৬-১৭ অর্থবছরের হিসাবকে ভিত্তি ধরে পিডিবির প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি চলতি বছরের জন্য পাইকারি বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ৫৭ পয়সা বাড়ানোর সুপারিশ করে। এদিকে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব যৌক্তিক নয় বলে মনে করেন ভোক্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা।

তারা গণশুনানির প্রথম দিনে বলেছেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পিডিবি যেসব ব্যয় বিবেচনা করে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে সেগুলোর ভিত্তি নেই। আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে বেশি দামে তেল কিনে, ভর্তুকিকে লোন বিবেচনা করে ও ব্যয়বহুল জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে রাজস্ব ব্যয় বৃদ্ধি করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

তাদের মতে, বাড়তি ও অযাচিত ব্যয় বাদ দিলে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পরিবর্তে কমবে। এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি), ২৮ সেপ্টেম্বর ডিপিডিসি, ২ অক্টোবর ডেসকো, ৩ অক্টোবর ওজোপাডিকো এবং ৪ অক্টোবর নওজোপাডিকোর খুচরা মূল্য পরিবর্তনের প্রস্তাবের বিষয়ে শুনানির আয়োজন করেছে বিইআরসি।

চলতি বছরের মার্চে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বিইআরসিতে পাঠায় বিতরণ কোম্পানিগুলো। পাইকারি পর্যায়ে ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে পিডিবি। গ্রাহকপর্যায়ে ডিপিডিসি ছয় দশমিক ২৪, ডেসকো ছয় দশমিক ৩৪, ওজোপাডিকো ১০ দশমিক ৩৬ ও আরইবি ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ দাম বৃদ্ধির আবেদন করেছে।

ad

পাঠকের মতামত