174888

সামরিক শক্তিতে কার দৌড় কত, তালিকায় আছে বাংলাদেশ-মিয়ানমারও

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনীর ৫০টি করে তথ্য বিশ্লেষণ করে তৈরি করা হয়েছে গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেস্ক। বাংলাদেশ এ তালিকায় সামরিক শক্তির দিক দিয়ে ৫৬তম অবস্থানে রয়েছে। এতে বিশ্বের ১০৬টি দেশের তালিকা করা হয়েছে। যেখানে স্থান পেয়েছে সামরিক বাহিনীর সদস্যসংখ্যা থেকে শুরু করে পরমাণু শক্তিধর সাবমেরিনের হিসাব। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে বিজনেস ইনসাইডার।

এ তালিকা অনুযায়ী বিভিন্ন দেশের সামরিক শক্তির পার্থক্যও স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। এতে যুদ্ধাস্ত্র ছাড়াও যুদ্ধ করার উপযোগী জনসংখ্যাও বিবেচনা করা হয়। এসব দিক দিয়ে দেখা গেছে যুদ্ধ করার উপযোগী জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি রয়েছে চীনের। অন্যদিকে ট্যাংক সবচেয়ে বেশি রয়েছে রাশিয়ার, বিমান সবচেয়ে বেশি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। তবে পারমাণবিক বোমার দিক দিয়ে রাশিয়া এগিয়ে থাকলেও বিমানবাহী রণতরীর দিক দিয়ে তারা পিছিয়ে রয়েছে। তবে আশ্চর্যজনকভাবে ডুবোজাহাজের সংখ্যার দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে উত্তর কোরিয়া।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনীর ৫০টি করে তথ্য বিশ্লেষণ করে তৈরি করা হয়েছে গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেস্ক। ১৩৩ দেশের সামরিক বাহিনীর ৫০টি তথ্য বিশ্লেষণ করে ২০১৭ সালের জন্য তালিকাটি করা হয়েছে।

তালিকায় বাংলাদেশে রয়েছে ৫৭তম অবস্থানে। আর বর্তমানে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ সম্পর্কে থাকা প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার রয়েছে ৩১ নম্বরে।

প্রকাশ করা নতুন এই তালিকা থেকে দেশগুলোর সামরিক শক্তির পার্থক্য স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। এতে যুদ্ধাস্ত্রের সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধ করার উপযোগী জনবলও বিবেচনায় নেওয়া হয়।

১৩৩টি দেশের মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর পরেই প্রথম দশের তালিকা দখল করেছে যথাক্রমে রাশিয়া, চীন, ভারত, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জাপান, তুরস্ক, জার্মানি ও মিসর। তালিকায় শেষের পাঁচটি দেশ হলো, সেন্ট্রাল আফ্রিকা রিপাবলিক, মৌরিতানিয়া, সিয়েরালিয়ন, সুরিনাম ও ভুটান।

তালিকা তৈরি করতে গিয়ে দেশগুলোর মানবসম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদ, ভৌগোলিক গুরুত্ব, বিমান, নৌ ও সেনাবাহিনীর শক্তি ছাড়াও সৈন্যদের দক্ষতাকে বিবেচনায় নেওয়া হয়।

দেখে নেওয়া যাক সামরিক শক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিস্তারিত-

যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত তালিকায় প্রথম অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির মোট সেনাসদস্য ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৬৭ ৫জন। রয়েছে পাঁচ হাজার ৪৮৪টি ট্যাংক, ৪১ হাজার ৬২টি বিভিন্ন ধরনের সাঁজোয়া যান, তিন হাজার ২৩৩টি কামান ও এক হাজার ৩৩১টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের যান। বিমানবাহিনীতে মোট বিমানের সংখ্যা ১৩ হাজার ৭৬২টি। দেশটির বিমানবাহিনীকে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক হিসেবে ধরা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৯টি বিমানবাহী রণতরী, আটটি ফ্রিগেট, ৬৩টি ডেস্ট্রয়ার ও ৭০টি সাবমেরিনসহ ৪১৫টি তরী।

রাশিয়া

যুক্তরাষ্ট্রের পর সামরিক শক্তির দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে রাশিয়া। তবে মার্কিনিদের থেকে তাঁদের সেনা সদস্য অনেক বেশি। দেশটিতে মোট ৩৩ লাখ ৭১ হাজার ২৭ জন সেনা রয়েছে। রয়েছে ২০ হাজার ২১৬টি ট্যাংক, ৩১ হাজার ২৯৮টি বিভিন্ন ধরনের সাঁজোয়া যান, ১০ হাজার ৫৯৭টি কামান ও তিন হাজার ৭৯৩টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের যান। রাশিয়ার বিমানবাহিনীতে মোট বিমানের সংখ্যা তিন হাজার ৭৯৪টি। নৌবাহিনীতে রয়েছে একটি বিমানবাহী রণতরী, ছয়টি ফ্রিগেট, ১৫টি ডেস্ট্রয়ার ও ৬৩টি সাবমেরিনসহ ৩৫২টি তরী।

চীন

সামরিক শক্তিতে তৃতীয় ক্ষমতাধর দেশ চীন। দেশটির মোট সেনা সদস্য ৩৭ লাখ ১২ হাজার ৫০০ জন। ট্যাংকের সংখ্যা ছয় হাজার ৪৫৭টি। রয়েছে চার হাজার ৭৪৪টি সাঁজোয়াযান। বিভিন্ন ধরনের কামানের সংখ্যা সাত হাজার ৯৫৬টি। এ ছাড়া ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার যান এক হাজার ৭৭০টি। চীনের বিমানবাহিনীতে মোট বিমানের সংখ্যা দুই হাজার ৯৫৫টি। নৌবাহিনীতে রয়েছে একটি বিমানবাহী রণতরী, ৫১টি ফ্রিগেট, ৩৫টি ডেস্ট্রয়ার ও ৬৮টি সাবমেরিনসহ ৭১৪টি তরী।

ভারত

সামরিক শক্তিতে ভারত রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে। দেশটির সেনাসদস্য রয়েছে ৪২ লাখ সাত হাজার ২৫০জন। রয়েছে চার হাজার ২২৬টি ট্যাংক, ছয় হাজার ৭০৪টি বিভিন্ন ধরনের সাঁজোয়া যান, সাত হাজার ৭৪০টি কামান ও তিন হাজার ২৯২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের যান। বিমানবাহিনীতে মোট বিমানের সংখ্যা দুই হাজার ১০২টি। নৌবাহিনীতে রয়েছে তিনটি বিমানবাহী রণতরী, ১৪টি ফ্রিগেট, ১১টি ডেস্ট্রয়ার ও ১৫টি সাবমেরিনসহ ২৯৫টি তরী।

মিয়ানমার

সামরিক শক্তিতে মিয়ানমারের অবস্থান ৩১। দেশটির সেনা সংখ্যা পাঁচ লাখ ১৬ হাজার। বিমান বাহিনীতে বিমানের সংখ্যা ২৪৯টি। মিয়ানমারের দখলে ট্যাংক রয়েছে ৫৯২টি। রয়েছে এক হাজার ৩৫৮টি বিভিন্ন ধরনের সাঁজোয়া যান, ৯৯৬টি কামান ও ১০৮টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের যান। নৌবাহিনীতে রয়েছে পাঁচটি ফ্রিগেটসহ ১৫৫টি তরী।

বাংলাদেশ

১৩৩টি দেশের মধ্যে সামরিক শক্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৭তম। সামরিক বাহিনীর মোট সদস্য সংখ্যা দুই লাখ পাঁচ হাজার। বিমান বাহিনীতে বিমানের সংখ্যা ১৬৬টি। বাংলাদেশের ট্যাংক রয়েছে ৫৩৪টি। আছে ৯৪২টি বিভিন্ন ধরনের সাঁজোয়া যান, ১৮টি কামান ও ৩২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের যান। নৌবাহিনীতে রয়েছে ছয়টি ফ্রিগেট, চারটি করভেট ও দুটি সাবমেরিনসহ ৯১টি তরী।

বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো-
১. যুক্তরাষ্ট্র
২. রাশিয়া
৩. চীন
৪. ভারত
৫. যুক্তরাজ্য
৬. ফ্রান্স
৭. জার্মানি
৮. তুরস্ক
৯. দক্ষিণ কোরিয়া
১০. জাপান
১১. ইসরায়েল
১২. ইতালি
১৩. মিসর
১৪. ব্রাজিল
১৫. পাকিস্তান
১৬. কানাডা
১৭. তাইওয়ান
১৮. পোল্যান্ড
১৯. ইন্দোনেশিয়া
২০. অস্ট্রেলিয়া
২১. ইউক্রেন
২২. ইরান
২৩. ভিয়েতনাম
২৪. থাইল্যান্ড
২৫. সৌদি আরব
২৬. সিরিয়া
২৭. সুইজারল্যান্ড
২৮. স্পেন
২৯. সুইডেন
৩০. চেক রিপাবলিক
৩১. আলজেরিয়া
৩২. নেদারল্যান্ডস
৩৩. মেক্সিকো
৩৪. বেলজিয়াম
৩৫. উত্তর কোরিয়া

ad

পাঠকের মতামত