শাড়িতে আমেরিকার পথে-প্রান্তরে, বন্ধুর বিয়েতে অপরূপা মোনালিসা!
চোখ, অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে চোখের পলক পড়ে না প্রকৃতির। হাসি, যেন শরতের বাতাসে মিশে গিয়ে ভেসে আসে মৃদ মৃদ ছন্দে। কথা, কোকিলা কণ্ঠে কথা শুনে প্রেমে পড়ে কোকিলও চুপ হয়ে যায়। এমনটা শুধু বলা যায় সুন্দরের প্রেমে পড়ে। তার চোখের ভাষা, হাসি, কথা। সবই মুগ্ধ হয়ে থমকে যায় তার রুপে। তিনি সুন্দর। অতঃপর একটি মনুষ্য বলে তিনি মোজেজা আশরাফ মোনালিসা। গেল ঈদ তার ভালোই কেটেছে আর বর্তমানে তিনি ভালো আছেন, তা জানা গেলো তার কয়েকটি ছবি ও স্ট্যাটাস থেকে।
একটা জীবনের নানা পথ পাড়ি দিয়ে তিনি এখনও তার রুপ ধরে রেখেছেন আগেরই মতো। একটা সময় নাটক, টেলিছবি, বিজ্ঞাপন করেছেন অগণিত। কিন্তু এখন আর আগের মতো তার ভক্তরা তাকে পর্দায় দেখতে পায়না। বিশেষ করে মোনালিসা জনপ্রিয়তায় আসেন বিজ্ঞাপন দিয়ে। এরপর তার রূপ গুনমুগ্ধকর অভিনয় দিয়েই রাতারাতি পৌঁছে যান দর্শকের হৃদয়ে।
কিন্তু হঠাৎ করেই সময়ের স্রোতে ক্যারিয়ারের ভাটা পড়তে থাকে তার। এরপর শুধুই দীর্ঘশ্বাস। ২০১২ সালের জুনে আমেরিকা প্রবাসী ফাইয়াজ শরীফের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মোনালিসা। একই বছরের ম্যাজিক ডে ১২.১২.১২ তে ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে মোনালিসা ও ফাইয়াজের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উভয় পরিবারের ঘনিষ্ঠজনেরা উপস্থিত ছিলেন। একেবারে হুট করেই পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ের সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের পরেই হারিয়ে যেতে থাকেন মিডিয়া থেকে। পাড়ি জমান আমেরিকাতে। ভালোই চলছিলো তার নতুন জীবন নতুন সংসার। কয়েক মাস যেতে না যেতেই খবর আসে যে স্বামীর সংসারে থাকছেন না তিনি। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদেরও একটি খবর রটে তখন।
এরপর থেকে মোনালিসা নিজের মত করে আলাদা হয়ে যান। আমেরিকার মত দেশে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে শুরু হয় তার নতুন জীবন যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে তিনি জয় লাভ করেন। ফেসবুকে দেয়া কিছু ছবিতে দেখা গেছে আগের চেয়ে আরও সুন্দর হয়েছেন তিনি। কিছু ছবিতে দেখা গেছে অফিসিয়াল পোশাক পরে আছেন। সাথে তার অফিস সহকর্মীরা। জানা যায়, আমেরিকাতে প্রোগ্রাম পরিচালক হিসেবে তিনি স্থানীয় একটি টেলিভিশনে কর্মরত আছেন। তার মানে খবর আসে তিনি চাকরি করছেন সেখানে।
এরপর আবার খবর আসে ‘কিকো মিলানো’ নামের ইতালিয়ান ব্রান্ডের একটি কসমেটিক্স, মেকাপ এন্ড স্কীন কেয়ারে নতুন ভাবে কাজ করবেন তিনি। আর নিয়ে ফেসবুকে মোনালিসার ভক্তদের কাছে চেয়েছেন দোয়া ও ভালবাসা। তিনি তার স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন, ‘সবকিছুই কোনো না কোনো কারণে ঘটে থাকে। আর এই কারণটাকেই ত্যাগ করো, ভালোবাসো এবং এর থেকেই শিখো। তোমার হাসি দিয়েই পৃথিবীটাকে অথবা জীবনটাকে পরিবর্তন করতে পারো। কিন্তু পৃথিবীকে তোমার হাসিটাকে মলিণ করে দেয়ার সুযোগ করে দিও না। নতুন এই চাকরি পেয়ে আমি খুবই খুশি হয়েছি। যদিও অনেক দায়িত্ব, অনেক চ্যালেঞ্জ তারপরও আমি চেষ্টা করব আমার আত্মবিশ্বাসের সাথে সব দায়িত্ব পালন করতে, আমার পৃথিবীটাকে নতুন করে সাজাতে। তোমরা সবাই আমার জন্য দোয়া করো।’
এরপর মাঝে হুট করেই দেশে এসে কয়েকটি বিজ্ঞাপন আর নাটকে অভিনয় করে আবারও চলে যান আমেরিকা। সবচেয়ে মজার ব্যাপার বর্তমানে মোনালিসাকে দেখলে তার ভক্তদের হয়তো চিনতে একটু কষ্ট হতে পারে। কারণ এতদিন তিনি নানা ধরনের পোশাক পরলেও শাড়িতে তাকে দেখা যায়নি। আমেরিকায় এক বন্ধুর বিয়েতে তাকে দীর্ঘ বছর পর আবারও শাড়িতে দেখা গেল। শাড়িতেই যে মেয়েদের বাঙ্গালিয়ানা এটা তিনি আবারও প্রমাণ করলেন। তবে এবারও মজার ব্যাপার হচ্ছে, শাড়িতে তাকে ব্যাপক সুন্দর লাগলেও চেনাই যাচ্ছিল না তাকে। তার ভক্তরা দেখে হয়তো কিছুটা শান্তি পেতে পারেন, আর একজন লেখকের চোখে আজীবন লেগে থাকবে তার সেই হাসি মাখা মুখ।
একজন শিল্পীর যে গুনাগুন থাকা প্রয়োজন সবই আছে মোনালিসার। এখনও তিনি সেটে থাকা মানে মুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকা। তার অভিনয়, নাচ দেখে চেয়ে থাকতেই হয়। লেখকের চোখে তাকে দেখলেই মনে হয় কিছু একটা লিখে ফেলি। লিখতে লিখতে মনে আসে বারে বার- কোথায় তার রুপের রহস্য? প্রকৃতি জানান দেয়, এটা শরৎ কাল। হয়তো অভিনয়ে শিগগিরই আবারও দেখা মিলবে তার ছন্দে ছন্দে ছোট পর্দায়। তাহলে কি বলা যায়না, শরৎ এসেছে, শাড়িতে এসেছেন মোনা আর ফুটেছে কাশফুল?