স্বামী-স্ত্রী হচ্ছেন রিয়াজ-অপু বিশ্বাস!
দুজনই শতাধিক ছবির শিল্পী। অথচ দুজন একসঙ্গে অভিনয় করেছেন একটি ছবিতেই—‘বাজাও বিয়ের বাজনা’। এ ছাড়া অপু বিশ্বাসের ‘শুভ বিবাহ’তে অতিথি হয়েছিলেন রিয়াজ। তা-ও আট বছর আগের কথা।
চলচ্চিত্রে অনেক দিন ধরেই অনিয়মিত রিয়াজ। দু-এক বছর পর পর হঠাত্ হাজির হন। আর অপু তো এখন নেই বললেই চলে! দুই বছর আগে হঠাত্ উধাও। এপ্রিলে মিডিয়ার সামনে হাজির হলেন পুত্র আবরামকে নিয়ে। তার পর থেকে আর চলচ্চিত্রের ক্যামেরার সামনেই দাঁড়াননি। সম্প্রতি আবার অভিনয়ে ফেরার ঘোষণা দেন। ফিরেছেন বেশ জমকালোভাবেই। নাভানা গ্রুপের ২০টি বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হবেন। সব কটিতেই তাঁর সহশিল্পী রিয়াজ। এক যুগের ক্যারিয়ারে মাত্র দুটি ছবিতে রিয়াজকে সহশিল্পী হিসেবে পেয়েছিলেন অপু। এবার একসঙ্গে ২০টি বিজ্ঞাপনে জুটি হচ্ছেন তাঁরা, এটা তো চমকই। রিয়াজ-অপু দুজনই উচ্ছ্বসিত।
অপু বলেন, একটু অন্য রকমভাবে কামব্যাক করতে চেয়েছিলাম। ভাবনাটা ছিল চলচ্চিত্র নিয়েই। কিন্তু মডেলিং করেই আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছি। সহশিল্পী হিসেবে রিয়াজ ভাইকে পাওয়াও কম কথা নয়। অনেক বিষয়ে তাঁর কাছে পরামর্শ পাওয়া যায়। এই বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিংয়েও তিনি নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন।
রিয়াজ বলেন, মডেলিং করে সহজেই দর্শকের কাছাকাছি থাকা যায়। রেসপন্সটাও ভালো মেলে। অপু অনেক জনপ্রিয় নায়িকা। দীর্ঘদিন পর মডেলিংয়ে ফিরেছে এই বিজ্ঞাপনচিত্রগুলোর মাধ্যমে। আমার বিশ্বাস, দর্শক আমাদের জুটিকে ভালোভাবেই গ্রহণ করবে। বিজ্ঞাপনচিত্রগুলো পরিচালনা করবেন এস এম সালাহউদ্দিন ও কে এস ফাহিম। বেশির ভাগ বিজ্ঞাপনচিত্রে স্বামী-স্ত্রী রূপে দেখা মিলবে রিয়াজ-অপুর।
অপু বলেন, একটু ডমিনেটিং স্ত্রীর ভূমিকায় দেখা যাবে আমাকে। স্বামীর কোনো কাজই আমার কাছে নিখুঁত মনে হয় না। তবে দুজনের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মধুর সম্পর্কটাও দেখানো হবে। স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি ভূমিকায় দেখা যাবে এই জুটিকে। তবে এখনই খোলাসা করতে চাইলেন না রিয়াজ—মাত্র তো চারটি বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিং হয়েছে। এগুলোতে আমরা স্বামী-স্ত্রী। বাকিগুলোর গল্প এখনই বলতে চাই না।
একটা কোম্পানির এতগুলো বিজ্ঞাপনচিত্রে একই জুটির মডেল হওয়া বিজ্ঞাপনজগতে নতুন এক ঘটনা। কোন কারণে ব্র্যান্ড টিম আপনাদের দুজনকে বেছে নিল? অপু ও রিয়াজ দুজনই জানালেন একই কথা, তাঁরা ফ্রেশ ইমেজের দুজন অভিনেতা-অভিনেত্রী চেয়েছেন, যাঁদের দিয়ে প্রডাক্টের ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি করবেন। সঙ্গে এমন দুজনকে চেয়েছিলেন, যাঁদের বিজ্ঞাপনচিত্রে এখন কম দেখা মেলে। তাঁরা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। এখন সেটার প্রতিদান দেওয়ার পালা।
চারটি বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিং হলো, কেমন হলো সেই অভিজ্ঞতা? অপুই আগে বললেন, কাজের ক্ষেত্রে আমি সব সময়ই সিরিয়াস। শুটিংয়ের জন্য সেট ফেলা হয়েছিল তেজগাঁওয়ের কোক স্টুডিওতে। তেজগাঁও থেকে আমার বাসা কাছেই—নিকেতন। শুটিং শুরুর আগেই বাসা থেকে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু রাস্তায় তখন তুমুল বৃষ্টি আর জ্যাম। জ্যামে বসে আছি। ঘণ্টা পেরিয়ে যাচ্ছে, তবু গাড়ি নড়ছে না। এক ঘণ্টা পর কোক স্টুডিওর কাছাকাছি পৌঁছে জানতে পারি, রিয়াজ ভাই এসে বসে আছেন। তাঁর মতো একজন সিনিয়র শিল্পী আগেই এসে বসে আছেন, অথচ আমি এখনো পৌঁছতেই পারলাম না! খুব খারাপ লাগল। তাকিয়ে দেখি, মাত্র পাঁচ মিনিটের দূরত্ব, কিন্তু পুরো রাস্তায় গাড়ি আর গাড়ি। মাথায় কাপড় পেঁচিয়ে গাড়ি থেকে নেমেই দিলাম দৌড়। স্পটে পৌঁছে শুনি, শুটিং শুরু হতে আরো কিছু সময় বাকি। আমার এভাবে দৌড়ে আসার কথা শুনে সবাই অবাক। রিয়াজ ভাই কয়েকবার বললেন, ‘এভাবে তোমার আসাটা ঠিক হয়নি’।
ঢাকার রাস্তায় নায়িকার দৌড়! বিপদও তো হতে পারত? ‘রাস্তা কম ছিল বলেই সাহসটা পেয়েছিলাম। ফুটপাতের দোকানে অনেক মানুষ বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিল। সবাই দেখেছে বৃষ্টির মধ্যে একটা মেয়ে দৌড়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেউই চিনতে পারেনি, বললেন অপু।
রিয়াজের কাছে শুটিংয়ের গল্প জানতে চাইলে তিনিও জানালেন অপুর ঘটনাই। শুধু মডেল নয়, দুই বছরের জন্য কম্পানিটির শুভেচ্ছাদূতও তাঁরা দুজন। এই সময়ে বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেলিংয়ের পাশাপাশি কম্পানির হয়ে বিভিন্ন পণ্যের প্রমোশনাল ইভেন্টেও অংশ নেবেন। এখন অপেক্ষায় আছেন প্রথম ধাপের কাজের ফলোআপের। সামনের মাসেই প্রচারিত হবে বিজ্ঞাপনচিত্রগুলো। সেগুলোর সাড়া বুঝেই পরিকল্পনা হবে পরের ধাপের কাজের। জুটি হয়ে শুধু মডেলিংই নয়, ভালো প্রস্তাব পেলে বড় পর্দায় জুটি হতেও তাঁদের আপত্তি নেই।