174354

অদম্য এক রোহিঙ্গা মায়ের গল্প, বিশ্ব মিডিয়াকে অবাক করেছেন !

মিয়ানমারে স্মরণকালের সবচাইতে ভয়াবহ জাতিগত নিধন যে চলছে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। প্রতিদিনই কোনমতে জীবন বাঁচিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা। এরমধ্যে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এক অদম্য মা আর এক রোহিঙ্গা শিশুর খবর এসেছে। সন্তান সম্ভবা মা প্রতিকূল পরিবেশে সীমান্ত পাড়ি দিতে গিয়ে জন্ম দিয়েছেন এক শিশুর।

একদিকে প্রাণের ভয়, অন্যদিকে অনাগত সন্তানকে পৃথিবীর মুখ দেখানোর চ্যালেঞ্জ। সঙ্গি পৃথিবীর আদিমতম প্রসববেদনা! আশেপাশে নেই কোন ডাক্তার বা ধাত্রী। প্রতি পদে পদেই প্রাণ হারানোর ভয় এরকম চরম প্রতিকূল পরিবেশে যিনি সন্তান জন্ম দিতে পারেন সেই মা-তো অদম্যই! অবশ্য টেলিগ্রাফ সেই শিশুটিকে আখ্যায়িত করেছে ‘রাষ্ট্রহীন-নাগরিকতাহীন’ শিশু বলে।

হতভাগ্য সেই মায়ের নাম হামিদা। তিনি জ্বলতে থাকা রাখাইন থেকে কোনমতে পালিয়ে এসেছেন। বিট্রিশ গণমাধ্যম টেলিগ্রাফকে তিনি বলেন, ‘জীবন বাঁচানোর জন্য আর অনাগত সন্তানকে রক্ষার জন্য আমি শুধু ছুটছি। এরপর হঠাৎ কিছু সময়ের জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এরপর কোলে আমার ভুমিষ্ঠ সন্তানকে দেখতে পাই।’

তিনি জানান, রাখাইনের নিজ গ্রামে জ্বলছে আগুন। নিজের জীবনের চাইতে অনাগত সন্তানের চিন্তাই মাথায় বেশি। সন্তানকে বাঁচাতেই গর্ভাবস্থায় এই ঝুঁকিপূর্ণ পথ পাড়ি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেই।’

জানা গেছে, হামিদার সঙ্গে পালিয়ে আসার সময় তার স্বামীও ছিল। তার স্বামী বলেন, প্রসব বেদনায় কাতর ছিলেন হামিদা। প্রসব বেদনার যন্ত্রণা তাকে এবং আমাদের ভোগাচ্ছিল। ব্যাথার সময়কার দৃশ্যগুলো বলে বোঝানো যাবে না। পাশে কোন ডাক্তার নেই, কোন ওষুধের ব্যবস্থা নেই। তারপরও মনোবল হারায়নি হামিদা। সন্তানকে পৃথিবীর মুখ দেখিয়েই ছেড়েছেন।’

টেলিগ্রাফ তাদের লেখায় উল্লেখ করেছে, সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় পথেই জন্ম হলো রাষ্ট্রহীন-নাগরিকতাহীন, আশা-স্বপ্ন-ভবিষ্যতহীন মানব শিশুর। এমন প্রতিকূলতার মাঝেও কেবলমাত্র মা-ই পারেন সন্তানকে আগলে রাখতে।

ad

পাঠকের মতামত