লজ্জা ও অপমানে ধর্ষিতা পান্নার আত্মহত্যা
নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনায় লজ্জা ও অপমানে আত্মহত্যা করেছে ধর্ষিতা এক কিশোরী। নিহত কিশোরীর নাম পান্না আক্তার। ঠাকুরাকোনা গ্রামের রিকশাচালক লাল চানের মেয়ে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরাকোনা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন সংলগ্ন একটি ঘরে পান্না আক্তার বাবা মার সঙ্গে থাকত। ঈদের পরদিন রোববার রাতে ওই গ্রামের আবদুল গফুরের ছেলে মামুন কৌশলে কিশোরীকে ঘরের বাইরে ডেকে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় মাছের খামার ঘরে নিয়ে তিন যুবক তাকে ধর্ষণ করে। রাতেই কিশোরীর মা অনেক খোঁজাখুঁজি করে ফিসারীর পাড়ে তাকে পান।
এ সময় ধর্ষকরা তাকে নানা ভয়ভীতি ও হুমকি দেয় বিষয়টি কাউকে না জানানোর। ভয়ে তিনি বিষয়টি কাউকে জানাননি। পরদিন সোমবার কিশোরীকে রেখে মা কাজে বেরিয়ে যান। ঘরে ফিরে পার্শ্ববর্তী একটি ঘরে কিশোরীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা চলছে। এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
কিশোরীর মা আলপনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ওরা আমার মেয়েকে বেইজ্জত করেছে। এরা আমাকে বলেছে কাউকে জানালে তোদের সবাইকে মেরে ফেলবো। আমরা গরিব মানুষ। কাজ কাম কইরা খাই। তাই ভয়ে ওইদিন কাউকে কিছু বলিনি। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ঠাকুরাকোনা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক বলেন, শুনেছি মামুন ও আরেকজন কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে। ওরা খুব গরিব মানুষ। মেয়েটি লজ্জায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমিও চাই প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসুক এবং ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি হোক।
নেত্রকোনা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমীর তৈমুর বলেন, প্রেমজনিত কারণে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। কোনো ধর্ষণের ঘটনা নয়। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী জানান, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ বলা যাবে। মডেল থানার ওসিকে বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে দেখতে বলা হয়েছে। উৎস : মানবজমিন।