173693

প্রয়োজনে চলচ্চিত্র ছেড়ে দিব : শাকিব খান

শাকিব খান। বাংলা চলচ্চিত্রের সুপারষ্টার। তার ছবি মানেই সিনেমা হলে উপচে পড়া ভিড়। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ২ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাচ্ছে জনপ্রিয় এই চিত্রনায়ক অভিনীত অহংকার ও রংবাজ। পরিচালনা করেছেন যথাক্রমে শাহাদাত হোসেন লিটন ও আব্দুল মান্নান। এই দুই ছবি ও চলচ্চিত্রে চলমান সংকট নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন শাকিব খান। যার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো-

নবাব দেখার পর অহংকার কিংবা রংবাজ দর্শকের ভালো লাগবে?
সব সময়ই আমার চেষ্টা থাকে ভিন্ন কিছু করার। তাই নবাবের সঙ্গে অহংকার কিংবা রংবাজের তুলনা করলে হবে না। প্রতিটি ছবিই আলাদা। আর আমার ছবি যারা দেখেন, মানে আমার ভক্তরা নিশ্চয় একটির সঙ্গে অন্যটির তুলনা করতে যাবেন না। গল্প আলাদা, পরিচালক আলাদা, আমার লুক আলাদা। ফলে অবশ্যই দর্শকের ভালো লাগবে।

গল্প আলাদা, পরিচালক আলাদা কিন্তু ছবির প্রধান দুই অভিনয়শিল্পী এক। সেক্ষেত্রে একটি ছবি মুক্তি দিলে ভালো হতো না?
এ বিষয়টা আমি নিয়ে আমি সব সময়ই কথা বলি। কিন্তু প্রযোজকরা চায় ঈদে বা যেকোন উৎসবে ছবি মুক্তি দিতে। যাতে লাভের পরিমাণটা একটু বেশি হয়। তবে বুবলী আর আমার জুটি দর্শক গ্রহণ করেছে। আর আমি শুরুতেই বলেছি গল্প ও লুক আলাদা হলে দর্শক একটির সঙ্গে অন্যটির মিল খঁজে পাবে না।

 

আপনি সুপারষ্টার। আপনার খবর জানার জন্য পাঠক বসে থাকে। আপনাকে নিয়ে যেসব বিষয় ঘটছে সেগুলো পরিস্কার ভাবে পাঠক ও আপনার ভক্তরা জানতে চায়-

সাধারণ মানুষ আমাকে ভালোবাসে এটাই আমার বড় পাওয়া। যারা নিয়মিত চলচ্চিত্রের খবর রাখে তারা নিশ্চয় জানেন যে, কবরী ম্যাডাম (অভিনেত্রী কবরী) কয়েকদিন একটা আন্দোলনের সঙ্গে থেকে চলে গেলেন। এরপর বক্তব্য দিলেন, কার জন্য কিসের জন্য আন্দোলন তা তিনি কিছুই বুঝতে পারছেন না। কারণ তিনি এটা বুঝতে পেরেছেন যে, এই আন্দোলন চলচ্চিত্রের জন্য কোন মঙ্গল বয়ে আনবে না। অথচ ফারুক ভাই এতো কাছে থেকেও কেনো বুঝতে পারছেন না যে, এটা তো একটা বানানো গল্প। আমি যদি আপনার পায়ে পায়ে ভুল ধরি, তবে নিশ্চয় আপনি আপনার কাজটা ঠিক ভাবে করতে পারবেন না। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এখানে ব্যক্তিস্বার্থ দেখলে চলবে না। তবে তো ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়ে যাবে। আমাদের আগে দেখতে হবে ইন্ডাস্ট্রির স্বার্থ।

সব গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়ে চলচ্চিত্র পরিবারের সঙ্গে আপনার দ্বন্দ্ব মিটে গেছে। কিন্তু বিষয়টা তো মোটেও সেরকম না। আপনার সঙ্গে চিত্রনায়ক ফারুকের ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে, নাকি?

ঠিক তাই। ফারুক ভাইয়ের সঙ্গে একটা বিষয় নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আমি সব সময়ই বলে আসছি আবারও বলছি, ফারুক ভাইয়ের নাম কিংবা তাকে উদ্দেশ্য করে আমি কিছু বলি নি। তারপরও কিছু মানুষ জোর করে সেটি প্রতিষ্ঠা করেছে। ফারুক ভাইকে আমরা ডাকি মিয়া ভাই। এটা সাধারণ মানুষও জানে। কিন্তু কিছু মানুষ মিলে সেটাকে জোর করে সাহেব বানালো। এটা কেমন কথা? তিনি আমার সিনিয়র। তাকে নিয়ে নিশ্চয় আমি এমন কিছু বলবো না যাতে তিনি কষ্ট পান। তারপরও ভুল বুঝে ফারুক ভাই কোন কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি আন্তরিকভাবে আবারও দুখ:প্রকাশ করছি। সেদিন আমি তার বাসায় গিয়েছি। স্যরি বলেছি। সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।

 

কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে চলচ্চিত্র পরিবারে যে ১৮টি সংগঠন আছে এফডিসিতে গিয়ে তাদের কাছে আপনার দুঃখ প্রকাশ করতে হবে?
আমিও তাই এখন তাই শুনছি। এফডিসিতে গিয়ে স্যরি বলতে হবে। এটা কী সম্ভব? এফডিসিতো আমাদের চলচ্চিত্রের সবার ঘর। সেখানে গিয়ে জনে জনে স্যরি বলার মতো কোন অন্যায় আমি করেছি? এভাবে চলতে থাকলে কেউ কাউকে মানবে?
এই যে নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ খেলা, স্যরি বলা- এসব করে কি চলচ্চিত্রের কোন লাভ হচ্ছে?
একদমই না। ক্ষতিই হচ্ছে। যারা কাজ করার করবে। যারা পরিবারের ভাল চায়, তাদের তো কাজ করতে দিতে হবে। আমি যতদিন বেঁচে থাকব, বাংলা সিনেমার জন্য কাজ করে যাব। অযৌক্তিক কোন কিছু আমি কোন দিনে মানি নাই, মানবও না। প্রশ্নই আসে না। মিউচুয়্যালের ক্ষেত্রে অসম্মানজনক কোন কিছু হবে না। প্রয়োজনে চলচ্চিত্র ছেড়ে দেব।
কিন্তু আপনার উপর দাঁড়িয়ে আছে ইন্ডাষ্ট্রি। আপনি চাইলেই তো পারেন না এটা ছেড়ে দিতে?
বিষয়টা আমাকে বলে কি লাভ? আমি তো শুধু কাজই করতে চাই। যতদিন দম আছে ততদিন। আপনি ঠিকই বলেছেন, দীর্ঘদিনের ভালোবাসার এই জায়গা, লাখ লাখ মানুষের ভালোবাসা চাইলেও ছেড়ে দেওয়া যায় না। তাই আমি বলব সবার আগে সিনেমার স্বার্থ দেখতে হবে। ব্যক্তিস্বার্থ নয়। একদিন আমি থাকব না, ইন্ডাস্ট্রি থাকবে। এখন মান অভিমান করার সময় না। কাজ করার সময়। ক্ষমতা চিরস্থায়ী না। এমন কিছু করা উচিত না, যার জন্য নিজেদেরকে লজ্জিত হতে হয়। আর আমি কখনও চাই না, আমাদের ইন্ডাস্ট্রির লোকজন লজ্জিত্ববোধ করুক। এটা তো আর রাজনীতির মাঠ না। মামলা, হামলা আর আন্দোলন চলতেই থাকবে। সূত্র : প্রিয় ডট কম।।

ad

পাঠকের মতামত