173533

শাকিব ফোনকল বা ফেসবুকেই করতে পারে সমস্যার সমাধান

এটা সত্যি যে কথা না বললে কোন সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। যে কোন সমস্যা নিয়ে যদি দু’পক্ষই চুপ করে বসে থাকেন তবে, সেই সমস্যার সমাধান কোনদিনই হবে না। এমনই এক সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে আমাদের চলচ্চিত্র। শাকিব খানকে নিষিদ্ধ করেছে চলচ্চিত্র পরিবার। আর এ বিষয়ে দু’পক্ষেই কেউই কারো সঙ্গে কথা বলছেন না। তাহলে এর সামাধান কি? বিষয়টা যদি এমন হয় যে কেউ সামনাসামনি বসে কথা বলতে চাচ্ছেন না, তাহলেও সমস্যা নেই। আধুনিক এই যোগাযোগ ব্যবস্থার যুগে কথা হতে পারে ফোনে, লিখিত প্রমাণ হতে পারে ফেসবুক চ্যাটিং। তাহলেই তো সমাধান হয়ে যায়।
নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ এই খেলা বন্ধ না হলে যে চলচ্চিত্র ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে, এটা বুঝতে পারছে দু’পক্ষই। তাই শুভাকাঙ্খীরা চাইছেন, খেলাটা বন্ধ হোক। এমনকি শাকিব খান কিংবা চলচ্চিত্র পরিবারও নাকি এর ‘হ্যাপি এন্ডিং’ চান। তাহলে সমস্যা কি? দু’পক্ষই একে অপরের দিকে মুখ চেয়ে বসে আছেন। ভাবছেন, বিপরীত পক্ষ এগিয়ে আসবে। ফলে হচ্ছে না সমাধান।

 

শাকিবকে কেন সিনিয়র শিল্পীরা ফোন করবে? শাকিব খান সিনিয়র শিল্পীদের ফোন দিলেই তো সমস্যার সমাধান হয়ে যায় : মিশা সওদাগর

বিষয়টি নিয়ে বরাবরই রেফারির ভূমিকায় ছিলেন নায়করাজপুত্র ও অভিনেতা বাপ্পারাজ। বারবার দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। নায়করাজের দাফনের দিন শাকিব-জায়েদ খান একসঙ্গে নায়করাজের খাটিয়া বহন করেছিলেন। দাফন শেষে বাপ্পারাজ দু’জনকেই বলেছেন, ‘বিভেদ ভুলে দু’জন কোলাকুলি করো।’ কোলাকুলিও করেছেন দু’জনেই। তারপরই সিনেমাপ্রেমীরা ভেবেছিলেন, গলার কাঁটাটা বুঝি এবার বেরিয়েই গেল। কিন্তু একদিন পরই যেই লাউ সেই কদু! বাপ্পারাজ বললেন, “বাসায় ফিরে শুনলাম, আবারো নাকি দশ বারো জনকে ব্যান করেছে শিল্পী সমিতি।”
২৬ অগাস্ট এফডিসিতে নায়করাজের শোকসভায় বিষয়টি নিয়ে বাপ্পারাজ বললেন, “অনেকেই বলেন, শাকিব খান বেয়াদব। কিন্তু সুচন্দা আন্টি, ফারুক আংকেল কিংবা আলমগীর আংকেল যদি শাকিবকে ফোন করে বলেন, তুমি এফডিসিতে আসো, কথা বলবো। এটা অমান্য করার ক্ষমতা শাকিবের বাপেরও নেই। এটার জন্য বাড়িতে উকিল নোটিস পাঠানোর জন্য দরকার পড়ে না। পুলিশ পাঠানোর দরকার হয় না।” বেশ ক’বারের চেষ্টাতেও বিষয়টির কোনো সুরাহা করতে না পেরে বুকভরা অভিমান নিয়ে বাপ্পারাজ বলেই ফেললেন, “আমার বাবা চলে গেছে। তার সম্মানে আজকে থেকে ‘ব্যান’ খেলাটা বন্ধ করে দেই। ফিল্মে আমি আর আসবো না, যদি শুনি ব্যানগুলো তুলে নেয়া হয়নি।”

 

অনেকেই বলেন, শাকিব খান বেয়াদব। কিন্তু সুচন্দা আন্টি, ফারুক আংকেল কিংবা আলমগীর আংকেল যদি শাকিবকে ফোন করে বলেন, তুমি এফডিসিতে আসো, কথা বলবো। এটা অমান্য করার ক্ষমতা শাকিবের বাপেরও নেই : বাপ্পারাজ

বাপ্পারাজের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় চলচ্চিত্রশিল্পী সমিতি সভাপতি মিশা সওদাগর প্রশ্ন তুললেন, “শাকিবকে কেন সিনিয়র শিল্পীরা ফোন করবে? শাকিব খান সিনিয়র শিল্পীদের ফোন দিলেই তো সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।”
মিশা বললেন, “আলমগীর ভাই ওকে (শাকিব খান) ফোন করেছিল। শাকিব কি সিনিয়র আর্টিস্টদের ফোন করতে পারে না? বড়রা কেন ছোটদের কাছে ছোট হবে। ছোটরা বড়দের কাছে ছোট হলে ছোটদের সম্মান যায় না।” অভিনেতা সোহেল রানাও আশা করছেন, শাকিব খানই সিনিয়রদের কাছে ক্ষমা চাইবে। বললেন, “মানুষ ভুল করলে ভুল শোধরানো ও ভুলের ক্ষমা চাইলে তার মহত্বটাই প্রকাশ পায়। তাতে ছোট হওয়ার কিছু নেই। আমি যদি বাবার সঙ্গে অন্যায় করি। আর বাবাকে যদি বলি, বাবা আমাকে মাফ করে দাও। বাবা তখন খুশি হবে। কিছু কিছু জায়গায় দেখেছি তুমি বলেছ, ‘স্টুপিড’। এটা ভদ্রতা তো নয়, বিনয় তো নয়ই, কোনো ভালো শব্দের মধ্যে পড়ে না।তুমি নিজেই চিন্তা করে দেখ।”

 

মানুষ ভুল করলে ভুল শোধরানো ও ভুলের ক্ষমা চাইলে তার মহত্বটাই প্রকাশ পায়। তাতে ছোট হওয়ার কিছু নেই। আমি যদি বাবার সঙ্গে অন্যায় করি। আর বাবাকে যদি বলি, বাবা আমাকে মাফ করে দাও। বাবা তখন খুশি হবে : সোহেল রানা

কিন্তু শাকিব খান বরাবরই বলে এসেছেন, সিনিয়রদের অসম্মান করে কোনো কথা বলেননি তিনি। সে হিসেবে চলচ্চিত্র পরিবারকে ফোন দিয়ে ‘স্যরি’ বলার কোনো কারণ দেখছেন না শাকিব। তবে তিনিও চাইছেন, চলচ্চিত্র পরিবার আগ্রহী হলেই বিষয়টির মিটমাট সম্ভব।
প্রসঙ্গত, ১৭ জুলাই শাকিব খানকে বয়কট করে চলচ্চিত্র পরিবার। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শাকিব খান অভিনীত ‘নতুন এবং পুরাতন’ কোনো ছবির শুটিংয়ের কাজে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের ১৮টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত চলচ্চিত্র পরিবারের কোনো সদস্য অংশগ্রহণ করবে না।এখনো অবধি শাকিব খানের উপর ‘বয়কট’ বহাল রয়েছে । সূত্র : বিডি নিউজ

ad

পাঠকের মতামত