173559

চলন্ত বাসে ধর্ষিত মেয়েটি কে, কি করত, কোথা থেকে আসছিল?

টাঙ্গাইলে মধুপুরে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের পর হত্যা করা তরুণী জাকিয়া সুলতানা রুপার (২৭) বাড়ী সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আসানবাড়ি গ্রামে। বর্তমানে তার গ্রামের বাড়ীতে চলছে শোকের মাতম। মেধাবী ওই তরুণীর মৃত্যুতে হতবাক হয়ে পড়েছে পুরো পরিবার। রুপা আসানবাড়ী গ্রামের মৃত মো. জেলহক প্রামানিকের মেয়ে।

রুপার বড় ভাই হাফিজুর রহমান জানান, তার ছোট বোন জাকিয়া সুলতানা রুপা অত্যন্ত মেধাবী। সে বগুড়া আজিজুল হক কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স শেষ করে ঢাকার আইডিয়াল ল কলেজে এলএলবি বিষয়ে শেষ বর্ষে অধ্যায়ণরত ছিল। পড়ালেখার পাশাপাশি সে শেরপুর জেলায় ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্রমোশনাল ডিভিশনে চাকরি করছিল। গত শুক্রবার শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিতে সে শেরপুর থেকে বগুড়া আসে। পরে পরীক্ষা শেষে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহগামী ছোঁয়া পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-৩৯৬৩) একটি বাসে তার এক সহকর্মীর সাথে শেরপুর ফিরছিল। তার সেই সহকর্মীর কর্মস্থল ঢাকায় হওয়ায় তিনি এলেঙ্গাতে নেমে যান এবং রুপা ঐ বাসেই ময়মনসিংহ যাচ্ছিল।

রুপার ভাই বলেন, রুপা সঠিক সময়ে ময়মনসিংহে না পৌছায় তার সহকর্মীরা মোবাইলে ফোন করলে এক যুবক ফোনটি রিসিভ করে এবং রুপা ভুল করে ফোনটি ফেলে রেখে গেছে বলে লাইন কেটে দেয়। এরপর থেকে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে শনিবার সকালে রুপা কর্মস্থলে না পৌছায় ইউনিলিভার বাংলাদেশের শেরপুর অফিস থেকে রুপার বড় ভাই হাফিজুর রহমানের মোবাইলে রুপা কর্মস্থলে না ফেরার বিষয়টি অবগত করেন। পরবর্তীতে রুপার মোবাইলে যোগাযোগ করতে না পেরে তার বড় ভাই ময়মনসিংহ কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সোমবার গণমাধ্যমে খবর পড়ে হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় এসে তরুণীর লাশের ছবি দেখে তার বোন বলে সনাক্ত করেন। এরপর থেকে অপরাধীদের গ্রেপ্তারে জোর চেষ্টা চালায় মধুপুর থানা পুলিশ।

মধুপুর থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সোমবার রাতে নিহত তরুণীর পরিচয় সনাক্ত হওয়ার পর তার বড় ভাইয়ের দেয়া তথ্যর উপর ভিত্তি করে অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। নিহতের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। বাসটিও জব্দ করা হয়েছে। আর বেওয়ারিশ হিসেবে লাশ তো আগেই কবর দেওয়া হয়েছিল। এখন লাশ উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করার প্রস্তুতি চলছে। অনুমোদন পাওয়া গেলে নিহতের লাশ কবর থেকে তুলে তার আত্মীয়-স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

ad

পাঠকের মতামত