173458

অনেক আগেই তালাক প্রথার অবসান হওয়া উচিত ছিল : জয়া আহসান

কলকাতার জনপ্রিয় সংবাদ-মাধ্যম ‘এবেলা.ইন’-এ কলম ধরলেন জয়া আহসান। বললেন, তিন তালাক প্রথার অবসান সত্যিই একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এর মাধ্যমে সমগ্র নারী জাতির উত্থান ও স্বাধীনতা দুটোই আসবে। আমার একটাই প্রশ্ন, যে এই অবসান কেন আগে এল না। অনেক দিন আগেই এই প্রথার অবসান হওয়া উচিত ছিল। এর জন্য আমি কোনও নারী বা পুরুষ জাতিকে দায়ী করি না। দায়ী করি সমাজ ব্যবস্থাকে। আমাদের সমাজে মেয়েরা যেমন একদিকে আলো দেখেছে, তেমনই এমনও অনেক প্রত্যন্ত গ্রাম রয়েছে, যেখানে নারীরা এখনও এই ধর্মীয় কুসংস্কারের কবলে। সেখানে সরকারি হস্তক্ষেপ ততটা প্রবল নয়। সেখানে এখনও মাতব্বররাই ঠিক করে দেয়, কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল। এখনও প্রভাবশালী মাতব্বরদের কথামতোই গ্রামীণ সমাজ নিয়ন্ত্রিত হয়।

আমার শৈশবে আমাদের এক পরিচারিকাকে আমি তিন তালাকের শিকার হতে দেখেছিলাম। খুব ক্ষীণভাবে মনে পড়ে, তালাকের পরে সন্তানদের নিয়ে কতখানি দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে দিয়ে তাঁকে বাকি জীবনটা কাটাতে হয়েছিল।

আমি শুনলাম যে, ইসলামের মতো উদার ধর্মে তিন তালাকের কোনও উল্লেখ নেই। আসলে ইসলামের মতো উদার ধর্মে নারীদের অবস্থান কোনওভাবেই ক্ষুন্ন হবে, একথা মেনে নেওয়া যায় না। কারণ এটিই হয়তো একমাত্র ধর্ম, যেখানে আমির এবং গরিব পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আল্লার কাছে প্রার্থনা করতে পারে, নমাজ পড়তে পারে। ইসলাম ধর্ম সবসময়েই সমান অধিকারের কথা বলে। আমি মনে করি না, এমন কোনও অবমাননাকর প্রথার কথা ইসলাম ধর্মে থাকতে পারে, যাতে নারীর সামাজিক অবস্থানকে ক্ষুন্ন করা হয়। আসলে সব ধর্মই সব কিছুর শেষে সৌহার্দ্য ও মিলনের কথা বলে। কিন্তু এই পৃথিবীতে ইসলাম ধর্মকে নানাভাবে বিকৃত করা হয়েছে যুগ যুগ ধরে। এর ভুরি ভুরি উদাহরণও রয়েছে।

সবশেষে এটাই কামনা করব, তিন তালাক প্রথার অবসান যেন প্রত্যন্ত গ্রামের নারীদের বেঁচে থাকার আশ্বাস যোগায়, তাঁদের সামাজিক অবস্থানকে যেন আরও সংহত করে। আমাদের সময়.কম।

ad

পাঠকের মতামত