বাংলাদেশের সামনে এখন তৃতীয় দিনের চ্যালেঞ্জ
দ্বিতীয় দিনের খেলার আর মাত্র ওভার দুয়েক বাকী ছিল। বেশ ভালোই খেলছিলেন দুই টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল আর সৌম্য সরকার। অজি স্পিনে স্বচ্ছ্যন্দ ছিলেন না সৌম্য। ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিতে দিতে একসময় তুলে মারলেন অ্যাস্টন অ্যাগারকে। মিস টাইমিং হল। তিনবারের চেষ্টায় বলটি তালুবন্দী করতে পারলেন লং অনে দাঁড়ানো উসমান খাজা। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৩ রানে প্রথম উইকেট হারাল বাংলাদেশ। ৫৩ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৫ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন তরুণ ওপেনার।
মজার ব্যাপার হলো, দিনের খেলা প্রায় শেষ হয়ে আসায় ইমরুল কায়েসের বদলে ব্যাটিয়ে পাঠানো হলো তাইজুল ইসলামকে। দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালের (৩০*) সঙ্গে তিনি ভালোভাবেই দিন কাটিয়ে দিলেন। ১ উইকেটে ৪৫ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করল স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয় ইনিংসে টাইগারদের লিড দাঁড়াল ৮৮ রানের। আগামীকাল এই লিড যতটা বাড়িয়ে নিতে পারবে টাইগাররা; অজিদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়ের সম্ভাবনা ততই বেড়ে যাবে। তবে ম্যাচের তৃতীয় দিনে উইকেট স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠবে এটা বলাই বাহুল্য।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ২৬০ রানের জবাবে ২১৭ রানে অলআউট হয়ে যায় সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান ৫ উইকেট আর মেহেদী মিরাজ নেন ৩ উইকেট। আজ দ্বিতীয় দিন সকালে অজি দূর্গে প্রথম আঘাত হানেন তরুণ অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে যান বাংলাদেশের প্রধান ‘দুঃশ্চিন্তা’ ১৬ বলে ৮ রান করা অজি অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ।
৩৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েছিলেন রেনশ আর হ্যান্ডসকম্ব। তাদের সেই প্রতিরোধ ভেঙে মঞ্চে আবির্ভূত হলেন তাইজুল ইসলাম। তার বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন ৬৭ বলে ৩৩ রান করা বিপজ্জনক হ্যান্ডসকম্ব। বল হাতে ফিরেই সাফল্য এনে দেন সাকিব আল হাসান। সৌম্য সরকারের তালুবন্দী হয়ে বিদায় হন একপ্রান্ত আগলে লড়াই করতে থাকা ওপেনার ম্যাট রেনশ (৪৫)।
৬ উইকেটে ১২৩ রান নিয়ে লাঞ্চে যায় সফরকারীরা। দ্বিতীয় সেশনের মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন অজি উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ম্যাথু ওয়েড (৫)। তখনও উইকেটে ছিলেন বিপজ্জনক গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তাকে ২৩ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরিয়ে দেন বিশ্বসেরা সাকিব। এরপরই লেজের দাপট দেখানো শুরু করে অজিরা।
১৪৪ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর ৪৯ রানের জুটি গড়ে অ্যাস্টন অ্যাগার এবং প্যাট কমিন্স। অবশ্য এতে পেসার শফিউল ইসলামের ক্যাচ মিসের বড় অবদান আছে। শেষ পর্যন্ত চা বিরতির পরপর কমিন্সকে (২৫) বোল্ড করে প্রতিরোধ ভাঙেন বিশ্বসেরা সাকিব। শেষমেষ হ্যাজেলউডকে (৫) ইমরুলের তালুবন্দী করে অজিদের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন তিনি। এতে করে বিশ্বের টেস্ট খেলা সবকটি দেশের বিপক্ষে ৫ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব গড়লেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের পোস্টার বয়।