সত্যিই কি শাকিব-জায়েদকে মিলিয়ে দিলেন বাপ্পারাজ?
বুধবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে চির নিদ্রায় বনানীর বুদ্ধিজীবী গোরস্থানে শায়িত হলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি চিত্রনায়ক রাজ্জাক। আর এসময় নায়ক রাজের মরদেহ নিজের কাঁধে তুলে নিতে দেখা গেলো দেশের সুপারস্টার অভিনেতা শাকিব খান থেকে বর্তমান প্রজন্মের নায়কদের। আর এই কিংবদন্তির দাফন শেষে নাকি শাকিব-জায়েদের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বেরও অবসান করে দিলেন নায়করাজের বড় ছেলে ও চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ!
মৃত্যু মানুষকে এক কাতারে এনে দাঁড় করায়। এটাই জীবনের গূঢ় অর্থ। নায়ক রাজের মৃত্যুতেও সব ভেদাভেদ ভুলে বন্ধু শত্রু সবাই এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছেন। কিংবদন্তির মৃত্যু বাংলা চলচ্চিত্রের সবাইকে সত্যি সত্যি এক কাতারে এনে দাঁড় করিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আভ্যন্তরীণ ঝামেলায় এফডিসি যাচ্ছিলেন না দেশের সুপারস্টার অভিনেতা শাকিব খান। শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে অভিমান থাকায় এমনটি হচ্ছিলো। কিন্তু নায়ক রাজের মৃত্যুদিনে সেই অভিমান ধরে রাখতে পারলেন না শাকিব। তাই সকালে কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজকে এফডিসিতে নেয়ার আগেই সেখানে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন তিনি। সব ভেদাভেদ ভুলে সবার সঙ্গে নায়ক রাজের নামাজে জানাজাতেও শরিক হতে দেখা গেলো তাকে। শত্রু, মিত্র ভুলে নায়করাজের জানাজায় এসময় তার সঙ্গে দেখা যায় চিত্রনায়ক আলমগীল, ওমর সানি, ফেরদৌস, মিশা সওদাগর, জায়েদ খান, আমিন খান ও বাপ্পীদেরও।
গেলো শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছে গোটা ইন্ডাস্ট্রি। কারণ এই নির্বাচন নিয়েই তারকা অভিনেতা শাকিবের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় বর্তমান শিল্পী সমিতির নেতাদের। গণমাধ্যমে একের বিপরীতে অন্যকে তুলোধুনো পর্যন্ত করেন। অথচ কিংবদন্তি নায়ক রাজের মৃত্যুতে শাকিবকে দেখে খুব স্বাভাবিক আচরণ করতে দেখা গেছে জায়েদ খানকে। নায়ক রাজের মৃত্যুর সংবাদ শুনে সবার আগে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে গিয়েছিলেন শাকিব। সেখানে বেশ খানিকক্ষণ সময় কাটান তিনি। এরপর হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে হাসপাতালের ভেতরেই দেখা হয় জায়েদ খানের সঙ্গে। মুখোমুখি হওয়া মাত্রই দুজনই হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করতে দেখা গেছে। তবে বাইরে থেকে তাদের মধ্যে কি কথা হয়েছে তা বোঝা যায়নি।
আর এবার নায়ক রাজের দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর শাকিবের সঙ্গে কোলাকুলি করতে দেখা গেলো জায়েদ খানকে। এসময় পাশে দাঁড়িয়েছিলেন চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ। শোনা যাচ্ছে, বাপ্পারাজই চাইছলেন যেনো চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে কারো মধ্যে কোনো ঝামেলা না থাকুক। সবাই মিলে মিশে যেনো একসঙ্গে কাজ করতে পারেন তাই নিজ থেকেই বাবার দাফন সম্পন্ন করে শাকিব-জায়েদকে মিলিয়ে দেন। কারণ, তার বাবা নায়ক রাজও চলচ্চিত্রে বিভেদ পছন্দ করতেন না।
অন্যদিকে নায়ক রাজের দাফন শেষে সুপারস্টার শাকিব খান ও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের কোলাকুলির দৃশ্যে শাকিব ও জায়েদ খানের অনেক ভক্তরা আপাতভাবে আপ্লুত হলেও সিনেপ্রেমীদের অনেকেই মনে করছেন, এটা স্রেফ লোক দেখানো। শাকিবের সঙ্গে এফডিসি কেন্দ্রীক সংগঠনগুলোর যে ঝামেলা চলছে তা আলোচনায় না বসে সমাধান হওয়ার নয়। তবে অনেকেই আশাবাদী, সদ্য প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতার আদর্শ অনুসরণ করেই সবাই মিলে মিশে বাংলা চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।