মেয়ে হওয়ায় গঞ্জনা, সন্তানকে নিয়েই পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা গৃহবধূর
মেয়ে হওয়ায় গঞ্জনা, সন্তানকে নিয়েই পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা গৃহবধূর – ছয় বছর আগে বিয়ে হলেও কোনেও সন্তান না হওয়ায় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের গঞ্জনা চলছিলই।
এরপর মাত্র দশমাস আগে যখন কন্যা সন্তান জন্ম নিল তখন কেবলমাত্র মেয়ে হওয়ার কারণে শুরু হল নানাবিধ গঞ্জনা। আর তাই বাধ্য হয়েই দশ মাসের শিশু কন্যাকে নিয়ে মা পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করল। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে।
মৃত গৃহবধূর নাম পূর্ণিমা হাজরা (২৬) ও দশ মাসের শিশু কন্যার নাম দীপিকা ওরফে ইশিতা হাজরা। পূর্ণিমা হাজরার বাপের বাড়ি বর্ধমানের ঘৌড়দৌড়চটিতে। ২০১১ সালে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার পিপলন করন্দার বাসিন্দা তাপস হাজরার সঙ্গে দেখাশোনা করে বিয়ে হয় তাঁর।
তাপস হাজরা কলকাতায় একটি মুদির দোকানে কাজ করেন। মাসে একদিন বাড়ি ফেরেন।মৃত গৃহবধূর ভাই রাজু দাস জানিয়েছেন, রবিবার পূর্ণিমা দেবী মেয়েকে ডাক্তার দেখানোর নাম করে শ্বশুর বাড়ী থেকে বের হন। এরপর তিনি মেমারী গ্রামীণ হাসপাতালে আসেন মেয়ের চিকিৎসার জন্য।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সোমবার সকাল ৫ টা নাগাদ ওই গৃহবধূকে মেমারির আবগাড়ি পাড়ার পাত্র পুকুরের পাড়ে কন্যা সন্তানকে নিয়ে বসে থাকতে দেখেন অনেকেই। এরপরই আচমকা দশ মাসের কন্যা সন্তানকে পিঠে কাপড়ের সঙ্গে বেঁধে তিনি কার্যত সকলের সামনেই ঝাঁপ দেন পুকুরে।
বুঝতে পেরে স্থানীয় মানুষজন তাঁকে উদ্ধার করার চেষ্টাও করেন। পরে মেমারী থানার পুলিশ এসে জাল দিয়ে মা ও শিশুকে উদ্ধার করে।
মেমারী গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে উভয়কেই মৃত বলে জানান চিকিৎসক। মৃতের ভাই রাজু দাস জানিয়েছেন, ছয় বছর আগে দিদির বিয়ে হলেও গত পাঁচ বছর ধরে বাচ্চা না হওয়ায় নানা গঞ্জনার সম্মুখীন হতে হয়েছিলো দিদিকে। পরে গত ১০ মাস আগে একটি মেয়ে হয় দিদির।
তারপরেও কেনো মৃত্যু কিছু বুঝতে পারছিনা। তিনি জানান, পূর্ণিমা দেবী শিশু কন্যাকে নিয়ে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে গতকাল দুপুরে বাড়ি ছেড়েছিল। আজ ভোরে মেমারি হাসপাতালে মেয়ের চিকিৎসা করাতে যায়।
তার পরই পুকুরে ঝাঁপ দেয় বলে তিনি জেনেছেন। যদিও এই ঘটনায় মৃতের শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।