আপন জুয়েলার্সের জব্দ করা স্বর্ণ কেন ফেরত নয় : হাইকোর্ট
আপন জুয়েলার্সের জব্দ করা স্বর্ণ ও হীরা কেন ফেরত দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের তলবি নোটিশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে করা পৃথক পাঁচটি রিটের শুনানি শেষে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি এম ফারুকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনালে এ এফ হাসান আরিফ। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার কাজী জিনাত হক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাকির হোসেন রিপন।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বনানীতে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের বাবা দিলদার আহমেদ আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক। এ পরিবারের বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালানের অভিযোগ থাকায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশে একটি অনুসন্ধান কমিটি করে তদন্ত শুরু করে শুল্কগোয়েন্দা অধিদফতর।
শুল্ক গোয়েন্দারা গত ১৪ ও ১৫ মে অভিযান চালিয়ে আপন জুয়েলার্সের গুলশান ডিসিসি মার্কেট, গুলশান এভিনিউ, উত্তরা, সীমান্ত স্কয়ার ও মৌচাকের পাঁচটি শো-রুম থেকে সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ ও ৪২৭ গ্রাম হীরা জব্দ করে।
গত ২৫ জুলাই মালামাল জব্দের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট পাঁচটি রিট করেন দিলদার আহমেদসহ তার তিন ভাই।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়- এমন অভিযোগ এনে বনানী থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী দুই তরুণী। মামলায় অভিযুক্ত একজন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার হোসেনের ছেলে সাফাত আহমেদ। সাফাতসহ পাঁচ আসামি বর্তমানে কারাগারে।
ওই ঘটনার পর আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ‘অবৈধ সম্পদ’ খুঁজতে তার প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর। এছাড়া বিভিন্ন মহল থেকে আপন জুয়েলার্স বর্জনেরও দাবি ওঠে।
শুল্ক গোয়েন্দারা গত ১৪ ও ১৫ মে আপন জুয়েলার্সের গুলশান ডিসিসি মার্কেট, গুলশান এভিনিউ, উত্তরা, সীমান্ত স্কয়ার ও মৌচাকের পাঁচটি শো-রুমে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ ও ৪২৯ গ্রাম হীরা ব্যাখ্যাহীনভাবে সাময়িকভাবে জব্দ করে। এগুলো পরে আইনিভাবে প্রতিষ্ঠানের জিম্মায় দেয়া হয়।
আত্মপক্ষ সমর্থনে আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষকে তিনবার সুযোগ দিলেও তারা কোনো বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি।
আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শো-রুমে অভিযান চালিয়ে জব্দ করা প্রায় সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ এবং সাত হাজার ৩৬৯ পিস হীরার অলঙ্কার গত ৫ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জমা দেয় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। এসবের মূল্য প্রায় ২১৯ কোটি ১০ লাখ ২৭ হাজার টাকা।