172837

মুখ খুললেন সামিরা : সালমান আত্মহত্যাই করেছে

সালমান শাহ খুন হয়েছিলেন নাকি আত্মহত্যা করেছিলেন— মৃত্যুর ২১ বছর পরেও রহস্য রয়ে গেছে। সালমান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি রাবেয়া সুলতানা রুবির ভিডিওকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি নতুন করে আলোচনায় আসে বিষয়টি। সে সূত্রে অভিযোগের তীর আবারো সালমানের স্ত্রী সামিরার দিকে।

সালমান ভক্তরাও চাইছিলেন নিজের অবস্থান পরিষ্কার করুক সামিরা। অবশেষে মুখ খুললেন তিনি। বললেন, ‘ইমনকে (সালমান শাহ) হত্যা করা হয়নি, সে আত্মহত্যা করেছিল।’
সামিরার ভাষ্যে, ‘সত্য কথা একটাই। সত্য কখনো দুইটা হয় না। মিথ্যে কথা বলতে গেলে প্যাচিয়ে বলতে হয়। একেকবার একেকবার জনের নাম বলতে হয়। আমি যা বলেছি সেটাই প্রমাণ হবে। ইন্টারপোল, এফবিআই আসলেও আমার কোনো সমস্যা নেই। আমিও চাই তারা আসুক।’
সালমানের মা নীলা চৌধুরী প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমার শাশুড়ি বারবার বলেন, তিনি ইন্টারপোল, এফবিআইয়ের তদন্ত চান। আমার কোনো আপত্তি নেই। আমি ওয়েলকাম জানাই। যত তদন্ত করা হোক না কেন আমার কোনো সমস্যা নেই। এই মামলার সঠিক তদন্ত আমিও চেয়ে এসেছি। স্বামী খুনের অপবাদ আমি বয়ে বেড়াতে চাই না।’

আরো বলেন, ‘এই তো সেই স্বামী যে আমার একটু সুখের জন্য কত পাগলামি করেছে। আমিও তাকে প্রাণের মতো ভালোবেসেছি। সেইসময় যারা সালমানের কাছের মানুষ ছিলেন তারা সবাই জানেন এসব। আমাকে সালমানের মা ব্যক্তি আক্রোশ থেকে খুনের আসামি বলছেন।’
সালমান ভক্তদের উদ্দেশ্যে সামিরা বলেন, ‘আমার কথাগুলো সালমান শাহর ভক্তদের মানতে কষ্ট হবে। কিন্তু এটাই সত্যি। আমারও কষ্ট হয়। যার হাত ধরে বাবা, মা পরিবার ছেড়ে চলে এসেছিলাম তাকে হারিয়েছি। আজো ইমনের বিকল্প কেউ নেই আমার মনে। বেঁচে আছি, বেঁচে থাকতে হয়। ইমনের মায়ের ভুল কথায় বিভ্রান্ত হয়ে, আবেগতাড়িত হয়ে তার ভক্তরা আমাকে নিয়ে বাজে কথা বলেন, বাজে ধারণা করেন। কিন্তু কারো উপর আমার কোনো রাগ নেই, কষ্ট নেই। প্রথম থেকেই তারা সালমান শাহকে ভালোবাসেন।’
তিনি জানান, নানা বিষয়ে মায়ের সঙ্গে সালমানের দ্বন্দ্ব ছিল। তাই সালমান ও সামিরা আলাদা বাসায় থাকতেন। এমনকি নীলা চৌধুরী জেলে গেলে সালমান তাকে দেখতে যেতে চাননি, সামিরার পীড়াপীড়িতেই মাকে দেখতে যান।
সামিরা আরো বলেন, ‘যেটা সত্য সেটা প্রমাণ হবে ইনশাল্লাহ। যতদিন বেঁচে থাকব এটাই বলে যাবো। ভক্তরা যেন ইমনকে দোয়া করে। আপনারা আমাকে পছন্দ-অপছন্দ করলে কিছুই যায় আসে না। আপনারা ওর জন্য দোয়া করবেন।’

সামিরার বর্তমান স্বামী সালমানের বন্ধু মোস্তাক ওয়াইজ। এ নিয়েও পরকীয়া অভিযোগ উঠেছে। তিনি জানান, পরকীয়া নয়। দুইজনের পরিবারের উদ্যোগেই সালমানের মৃত্যুর তিন বছর পর তাদের বিয়ে হয়।
এছাড়া খলনায়ক ডনের সঙ্গে প্রকাশিত ছবি নিয়ে বলেন, “ডন আমার ছোট ভাইয়ের মতো। তার সঙ্গে এমন নোংরা কথা শুনে লজ্জা পাচ্ছি! যে ছবিটি নিয়ে কথা হচ্ছে, সেটা ‘আশা ভালোবাসা’ সিনেমার শুটিং চলাকালে তোলা। ডনের সঙ্গে যে মেয়েটিকে দেখা যাচ্ছে, সেটা আমি নই। ছবিটির মেয়ে নায়িকা সাবরিনা। ‘আশা ভালোবাসা’র মূল নায়িকা ছিলেন শাবনাজ। নায়ক সালমান শাহ। সাবরিনা ছিল পার্শ্বনায়িকা। ডনের সঙ্গে দুষ্টুমি করে ঘরের ভেন্টিলেটরের ফাঁক দিয়ে ছবিটি তুলেছিল সালমান। আর তখন তার পায়ের নিচের টুলটি আমি ধরেছিলাম। দুজনে মিলে এই কাজটি করেছিলাম।”
১৯৯৩ সালে প্রথম চলচ্চিত্র ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে রাতারাতি তারকাখ্যাতি পান সালমান শাহ। সব মিলিয়ে ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যার বেশিরভাগই ব্যবসাসফল। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন এ নায়ক।
সালমানের মৃত্যু হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়ে দুই দশক ধরে বিতর্ক চলছে। সম্প্রতি সালমান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি রাবেয়া সুলতানা রুবি ফেসবুক ভিডিওতে দাবি করেন— সালমান আত্মহত্যা করেননি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে ওই নারী নিজেকে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ দাবি করলেও আলোচনা থামছে না।

সূত্র: পরিবর্তন

ad

পাঠকের মতামত