নেপালে বাস খাদে পড়ে ৩৩ জনের মৃত্যু

mnepalনেপালে গ্রামবাসীদের বহনকারী একটি বাস পাহাড়ি রাস্তা থেকে খাদে পড়ে গিয়ে ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘটা এ দুর্ঘটনায় আরো ২৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।

রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ৮০ কিলোমিটার পূর্বে খারে খোলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাসটি সড়ক থেকে গড়িয়ে ১৫০ মিটার গভীর খাদে পড়ে যায়।

পাহাড়ি পথে বাসটি কার্তিক দেউরালি গ্রামের দিকে যাচ্ছিল। গেল বছরের ভয়াবহ ভূমিকম্পে নেপালের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে এ গ্রামটি অন্যতম।

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারের দেওয়া প্রথম ক্ষতিপূরণের অর্থ নিয়ে গ্রামে ফিরছিলেন বাসটির অধিকাংশ যাত্রী। অনবরত বৃষ্টির কারণে গ্রামমুখী ওই সরু সড়কটি পিচ্ছিল হয়ে ছিল।

নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা চিরঞ্জীবী নেপাল জানিয়েছেন, ৩৩ জন নিহত হয়েছেন।

কিন্তু হতাহত যাত্রীদের স্বজনরা জানিয়েছেন, আরো অনেকে নিহত হয়েছেন, কারণ সড়কটির নিচের ঢালে বাসটির ভেঙে যাওয়া অংশগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আর সেখানকার বেশ কিছু জায়গায় কারো পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়।

কাঠমান্ডুর এক হাসপাতালে শয্যাশায়ী আহত কপিলা গৌতম বলেন, “উপরের দিকে ওঠার সময় বাসটির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়, চালক ইঞ্জিন চালু করার চেষ্টা করলেও সেটি চালু না হয়ে পেছনে দিকে গড়িয়ে গিয়ে রাস্তা থেকে পড়ে যায়।”

তিনি জানান, বাসটিতে প্রায় ৮৫ জন যাত্রী ছিলেন, এদের অনেকে ছাদে ছিলেন। এছাড়া বাসটিতে চাল, ডাল, আটা ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিল যা গ্রামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

বসার কোনো জায়গা না থাকায় কপিলা একটি চালের বস্তার উপর বসে ছিলেন। দুর্ঘটনার পর তিনি ও আহত কয়েকজন সহযাত্রী পাহাড়ি ঢাল বেয়ে উপরে রাস্তায় উঠে আসেন।

দুর্ঘটনার এক ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়া গ্রামবাসী পুস্তক গৌতম জানান, নিহতদের লাশ, বাসটির ভেঙে পড়া অংশগুলো ও লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া মালামাল বড় একটি এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে আছে।

তিনি বলেন, “মনে হচ্ছে বাসটি পেছন দিকে গড়িয়ে যাওয়ায় অনেক মানুষ ছিটকে পড়েছে, তাই আমি নিশ্চিত আরো লাশ পাওয়া যাবে।”

দুর্ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা আরো লাশের খোঁজ তল্লাশি চালাচ্ছেন।

হিমালয় পর্বতের কোল ঘেঁষা নেপালে এখন বর্ষাকাল চলছে। বৃষ্টির কারণে পার্বত্য পথের সরু সড়কগুলি এ সময় অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে আছে। সাধারণত বর্ষাকালে দেশটিতে অনেক বাস দুর্ঘটনা ঘটে।

ad

পাঠকের মতামত