সাংসদ আমানুরের মামলা দ্রুত বিচারে পাঠানোর সুপারিশ

6335ce84cb4c0664টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমদ হত্যা মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে জেলা পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন। একই দলের নেতা স্থানীয় সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিন ভাইসহ মোট ১৪ জন এ মামলার আসামি।

জেলার আদালত পুলিশের পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার গত ৮ অগাস্ট জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব পাঠানোর অনুরোধ করেন।

পরদিন জেলা প্রশাসকের অনুমোদন পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। পুলিশ সুপার মাহবুব আলম শুক্রবার বলেন, ‘দ্রুত মামলাটির নিষ্পত্তি করতেই’ এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।।

জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেন বলেছেন, পুলিশ সুপারের অনুরোধ পেয়ে তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আদালত পরিদর্শককে নির্দেশনা দেন।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সদস্য ফারুককে। হত্যার তিন দিন পর ফারুকের স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল মডেল থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন।

পরে নাহার সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ফারুক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। সেজন্যই তাকে হত্যা করা হয়। টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী খান পরিবারের চার ভাই রানা, মুক্তি, কাঁকন ও বাপ্পা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত।

রানাদের চাচা শামসুর রহমান খান শাহজাহান আওয়ামী লীগের নেতা ও সংসদ সদস্য ছিলেন। তার মৃত্যুর পর ভাতিজারা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসেন।

ফারুক হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার খান পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আনিসুল ইসলাম রাজা এবং মোহাম্মদ আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রানাদের চার ভাইকে জড়িয়ে বক্তব্য দেন বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।

এরপর চলতি বছর ৩ ফেব্রুয়ারি রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। আসামিদের মধ্যে আনিছুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ  আলী ও সমীর মিয়া কারাগারে এবং ফরিদ আহমেদ জামিনে মুক্ত আছেন।

পলাতক ১০ আসামি হলেন- টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাংসদ আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা, সাংসদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবির হোসেন, দারোয়ান বাবু ওরফে দাঁত ভাঙ্গা বাবু, যুবলীগের তৎকালীন নেতা আলমগীর হোসেন চাঁন, নাসির উদ্দিন নূর, ছানোয়ার হোসেন ও সাবেক কমিশনার মাসুদুর রহমান।

গত ৬ এপ্রিল টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. আমিনুল ইসলাম অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

এরপর আদালতের নির্দেশে ২০ মে রানাসহ পলাতক আসামিদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মালামাল জব্দ করে পুলিশ।

নিয়ম অনুযায়ী পলাতক আসামিদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে ইতোমধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। তারা হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতেই আদালত বিচার শুরুর নির্দেশ দিতে পারে।

পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থিতা থেকে সরে যেতে রাজি না হওয়ায় সাংসদ রানার সহযোগী কবির হোসেন পিস্তল দিয়ে ফারুক আহমদকে গুলি করেন। পরে সাংসদের নির্দেশে আনিছুল, মোহাম্মদ আলী, আবদুল হক, সমীর ও কবীর লাশ নিয়ে ফারুকের বাসার সামনে ফেলে রেখে আসেন।

কাঁকন ও বাপ্পা ইতোমধ্যে দেশ ছেড়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। রানা ও মুক্তি দেশে থাকলেও তাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

ad

পাঠকের মতামত