348867

কৃষক বিক্ষোভ: ট্রুডোকে কড়া সতর্কবার্তা দিল ভারত

ভারতের কৃষক বিক্ষোভে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মন্তব্যে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ভারত। বিতর্কিত নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে কৃষক বিক্ষোভে নিজের অবস্থানের কথা তুলে ধরেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। কৃষক বিক্ষোভের পক্ষে আছেন ট্রুডোর এমন বক্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একে ‘অসুস্থ অবহিত’ উল্লেখ করে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব।

কৃষকদের বিষয়ে ট্রুডোর মন্তব্যকে ‘অজ্ঞাত’ ও ‘অযাচিত’ উল্লেখ করেছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর আগে, ভারতজুড়ে চলমান আন্দোলনে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কানাডা সব সময় অধিকার আদায়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের পাশে আছে। পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগের। আমরা সবাই কৃষকদের পরিবার এবং বন্ধুদের জন্য চিন্তিত।’

ট্রুডোর এমন বক্তব্যের পরপরই নড়েচড়ে বসেছে মোদি প্রশাসন। জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রিভাস্ত বলেন, ‘ভারতীয় কৃষকদের বিষয়ে আমরা কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অসুস্থ প্রতিক্রিয়া দেখতে পেয়েছি। এ ধরনের বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিশেষ করে কোনো গণতান্ত্রিক দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে নাক গলানো।’

ভারতের নতুন বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রায় ৬টি রাজ্য থেকে আসা কৃষকরা জড়ো হয়েছে দিল্লিতে। দিনে দিনে পরিস্থিতি আরও জটিল রুপ নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর উস্কানিমূলক মন্তব্যে ক্ষেঁপেছে ভারত। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, চলমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট সমাধানের উপায়ে বের করার চেষ্টা করছি। কারণ, সবার উপস্থিতিতে আমরা আলোচনায় বিশ্বাসী।’

এর আগে ট্রুডোর বক্তব্য ‘ওয়ার্ল্ড শিখ অর্গানাইজেশনে’ ভিডিওটি প্রচার করে। এরপরই বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। এদিকে ভারতীয় রাজনৈতিক দল শিব সেনার উপ-নেত্রী প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীও বিষয়টি ভালোভাবে নেননি। কৃষক বিক্ষোভকে ভারতের অভ্যন্তরীণ ইস্যু বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ভারতের বিতর্কিত নতুন কৃষক আইনের প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন কৃষকরা। দিল্লি চলো স্লোগানে পাঞ্জাব, হরিয়ানাসহ ৬টি রাজ্য থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেয় কৃষকরা। তাদের প্রতিহত করতে দিল্লির আশপাশে বিক্ষুব্ধ কৃষকদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় নিরাপত্তা সদস্যদের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আন্দোলন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে আলোচনার বসতে অনুরোধ করেন। কিন্তু এতেও নিজেদের দাবিতে অনড় কৃষকরা।

চলমান আন্দোলনে কংগ্রেসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একাত্মতা প্রকাশ করায় আর জোরালো হয়েছে কৃষক বিক্ষোভ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আবারো আলোচনায় বসতে আহ্বান জানিয়েছে মোদি সরকার। স্থানীয় সময় (০১ ডিসেম্বের) মঙ্গলবার বিকেলের দিকে বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কৃষকদের পক্ষ থেকেও আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে। ইতিমধ্যে উভয় পক্ষ বৈঠকে বসেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলি। বৈঠকের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তার সঙ্গে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ প্রমুখ।

ad

পাঠকের মতামত