347578

পাকিস্তানি সেনাদের একাধিক লঞ্চপ্যাড ধ্বং’স করল ভারতীয় বাহিনী

পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিদের জন্য তৈরি দেশটির সেনাবাহিনীর একাধিক লঞ্চ প্যাড ধ্বং’স করে দিয়েছে বলে ভারতীয় সেনার বরাতে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যম দাবি করেছে।

জানা গেছে, পাকিস্তানের প্ররোচনামূলক হা’মলার জবাব দিতে উরি, কেরান সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে যে জঙ্গি লঞ্চপ্যাডগুলো ছিল, তাদের বেশ কয়েকটি নষ্ট করে দিতে সক্ষম হয়েছে ভারত।

ভারতীয় সেনা সূত্রের মতে, নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে কেবল ওই লঞ্চপ্যাডগুলোতেই হা’মলা চালানো হয়। সেদিনের হানায় জঙ্গিদের একাধিক লঞ্চপ্যাড ছাড়াও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একাধিক বাঙ্কার, তেলের ডিপো, গোলা-বারুদের ঘাঁটিও ধ্বং’স করে দিয়েছে ভারতীয় সেনা।

বৃহস্পতিবার বিকালের দিকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সেনার এই অভিযানের কথা প্রচার করা হয়। সংবাদসংস্থা পিটিআই-ও এই খবর প্রকাশ করার পর বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। তারপরই ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক বিবৃতি জারি করে বলা হয়, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি লঞ্চপ্যাডে এই অভিযানের ঘটনা গত ১৩ নভেম্বর শুক্রবারের। বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) ভারতীয় সেনা এ ধরনের কোনও অভিযান চালায়নি। পাশাপাশি সেনাপ্রধান এম এম নরবণে পাকিস্তানকে ঘুরিয়ে সতর্ক করে বলেছেন, ভারতে ঢোকার চেষ্টা করলে কোনও জঙ্গি বাঁচবে না।

সেনা সূত্রের মতে, উপত্যকায় প্রবল তুষারপাত শুরু হওয়ার আগেই নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতে ঢোকার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনগুলো। পেছন থেকে তাদের সব রকমভাবে মদত দিচ্ছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। গত শুক্রবার ভোরে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতে ঢুকতে গিয়ে একাধিক জঙ্গি মা’রা যায়। প্রতিশোধ নিতে তারপর থেকেই ৭৭৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নিয়ন্ত্রণরেখার বারামুল্লা, কেরান, উরি, দাওয়ার, নওগামে প্ররোচনা ছাড়াই জনবসতি লক্ষ্য করে হা’মলা চালাতে শুরু করে পাকিস্তান সেনা। ওই হা’মলায় ভারতের চার সেনা সদস্য, বিএসএফের এক অফিসার ও চার নাগরিক মা’রা যান। আহতদের মধ্যে রয়েছে দুই স্কুলশিক্ষার্থীও। ধাক্কা সামলে পাল্টা হা’মলা চালায় ভারতও।

সূত্রের মতে, দু’দেশই ১০৫ ও ১৫৫ মিলিমিটার কামান ছাড়াও অ্যান্টি ট্যাংক গাইডেড মিসাইল ও মর্টার দিয়ে হা’মলা চালায়।

সূত্রের মতে, ভারতীয় সেনার হা’মলায় উরি ও কেরান সেক্টরে থাকা একাধিক জঙ্গি লঞ্চপ্যাড নষ্ট হয়ে যায়। ভারতীয় সেনার দাবি, হা’মলায় অন্তত সাত থেকে আটজন পাকিস্তানি সেনাও মা’রা গেছে। যার মধ্যে দুজন স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপের কম্যান্ডো। যারা মূলত পাকিস্তানি সেনার বর্ডার অ্যাকশন দলের সদস্য। মূলত এই বাহিনীর উপরেই জঙ্গিদের ভারতে সুরক্ষিত ভাবে অনুপ্রবেশ করানোর দায়িত্ব থাকে। চলতি বছরে ৪০৫২ বার পাকিস্তান সেনা সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে বলে দাবি ভারতীয় সেনার। এই সংখ্যক হা’মলার নজির গত দু’দশকে নেই।

তবে ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সীমান্তে পাকিস্তানি হা’মলা ক্রমশ বাড়ছে। ২০১৭ সালে ৯১৭টি সংঘর্ষবিরতির ঘটনা ঘটেছিল। ২০১৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬২৯। ২০১৯ সালে যা বেড়ে হয় ৩১৬৮। সূত্র: আনন্দবাজার

ad

পাঠকের মতামত