344009

ব্রাহ্মণপাড়ায় অ্যানথ্রাক্সে গরুর মৃত্যু, আ’তঙ্কে এলাকাবাসী

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সাহেবাবাদ উত্তর পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাচ্চু মিয়া নামে এক ব্যক্তির খামারের ৪টি উন্নত জাতের গাভী অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়ে মা’রা গেছে। অ্যানথ্রাক্স রোগে গরু মা’রা যাওয়ায় এলাকায় খামারিদের মধ্যে আ’তঙ্ক বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শুভ সূত্র ধর বলেন, উপজেলার সাহেবাবাদ গ্রামের বাচ্চু মিয়ার খামারের ৪টি গরু মা’রা যাওয়ার বিষয়ে আমরা খবর পেয়ে ওই খামারে গিয়ে মৃ’ত গরুগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি। মৃ’ত গরুগুলো দেখে মনে হয়েছে অ্যানথ্রাক্স (তড়কা) রোগে আক্রান্ত হয়ে মা’রা গেছে। গরুগুলো মধ্যে অ্যানথ্রাক্স রোগের সব লক্ষণ ছিল। অ্যানথ্রাক্স রোগে গরু আক্রান্ত হয়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার মধ্যে মা’রা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

তাবে খামার মালিকরা বিষয়টি বুঝতে পারেনি বিধায় গরুগুলো মা’রা গেছে। প্রথমেই চিকিৎসকের পরামর্শ অথবা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে গরুগুলোকে চিকিৎসা দিলে হয়তো বাঁচানো যেত।

ক্ষতিগ্রস্ত খামার মালিককে সরকারিভাবে সহযোগিতার বিষয়ে তিনি বলেন, এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে কথা হয়েছে, আশা করি প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের অর্থিক সহযোগিতা করা হবে।

গরুর অ্যানথ্রাক্স রোগ নিয়ে এলাকায় অন্যান্য খামারিরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। গত ১৭ অক্টোবর শনিবার রাতে বাচ্চু মিয়ার মিয়ার খামারে চারটি গরু মা’রা যায়। এতে তার প্রায় ছয় লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে খামার মালিক বাচ্চু মিয়া জানান, প্রতিদিনের মতো শনিবার সন্ধ্যায় খামার ঘরে গরু বেঁধে ঘাস ও খর দিয়ে বের হয়ে আসি। পরে রাত প্রায় ৯টার সময় আবারো গরুগুলোকে দেখতে খামার ঘরে যাই।

এ সময় খামার ঘরে এসে দেখতে পাই আমার দুটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে আছে। আমি তাৎক্ষণিক আমার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ও ছেলে আরিফকে নিয়ে গরু দুটিকে উঠানোর জন্য চেষ্টা করি। এদিকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গরুগুলোর অবস্থাও অবনতির দিকে যেতে থাকে। একে একে আমার খামারে থাকা ৪টি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় একজন স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দিলে চিকিৎসক এসে গরুগুলোকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যায়। এতে কোনো লাভ হয়নি। রাত ৩টা থেকে গরুগুলো একে একে মা’রা যেতে শুরু করে। সকাল পর্যন্ত আমার ৪টি গরুই মা’রা যায়। এই বিষয়টি আমরা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে জানালে প্রথমে তিনি তার একজন প্রতিনিধি চিকিৎসক পাঠান। পরে তিনি নিজেই আমাদের বাড়িতে আসেন।

তিনি জানান, আমাদের খামারের গরুগুলো “অ্যানথ্রাক্স” (তড়কা) রোগে আক্রান্ত হয়ে মা’রা গেছে। বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, আমাদের সম্বল শেষ হয়ে গেছে। এই গরু গুলোই আমাদের সম্বল ছিল। আমাদের আয়ের একমাত্র মাধ্যম ছিল।

বাচ্চু মিয়ার ছেলে আরিফুর ইসলাম বলেন, আমরা প্রথমে দুটি উন্নত জাতের গরু দিয়ে খামার শুরু করি। পরে পর্যাক্রমে বেড়ে ৪টি গরু হয়। ভবিৎষ্যতে এই গরুগুলোর মাধ্যমে আমাদের একটি বড় খামার করার আশা ছিলো। এখন আমাদের সব আশা শেষ হয়েছে।

ad

পাঠকের মতামত