343299

পুলিশ যেভাবে ‘ফাঁ’সায়’ পুলিশ যেভাবে ফাঁ’সে!

চট্টগ্রামের লালখানবাজার এলাকার মাছ ব্যবসায়ী যুবক বাবলা দাশ ঋণভারে জর্জরিত। মাছের আড়তদারের কাছেও ঋণ। ঋণের টাকা ঠিকমতো দিতে না পারলে নতুন করে মাছ পাওয়া যাবে না আড়তদারের কাছ থেকে। এই কারণেই ‘পুলিশের টাকা ছি’নতাই ও ই’য়াবা’ ফাঁ’সানোর গল্প সাজায় বাবলা দাশ। তার সেই গল্পে ফেঁ’সে যেতে বসে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। পরে তদন্ত শুরু হলে দেখা যায়, বাবলা দাশ অসত্য বলেছেন, ভুয়া গল্প সাজিয়ে পুলিশকে ফাঁ’সিয়ে নিজেই আড়তদারের টাকা আ’ত্মসাতের বিষয়টি পুলিশের ঘাড়ে চাপা’তে চেয়েছিলেন।

তদন্ত পর্যায়ে বাবলা দাশের সাজানো গল্পটি নিজের ফেসবুকে লিখেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন। গত ১১ অক্টোবর তাঁর গল্পটি এরকম…

পুলিশ যেভাবে ই’য়াবা দিয়ে ফাঁ’সায়!
মাছ বেচে ফিসারিঘাট যাচ্ছিল বাবলা। পথেই তার গতিরোধ করে পুলিশ। ত’ল্লাশি চালায় এবং একপর্যায়ে গাড়িতে তোলে। গাড়িতে তুলে কিছুক্ষণ ঘোরানোর পর নির্জন এক জায়গায় তাকে নামায়। এরপর তার পকেটে ই’য়াবা গুঁজে দিয়ে বলে ই’য়াবা ব্যবসায়ী! ই’য়াবাসহ তার কিছু ছবিও তুলে রাখে সেই পুলিশ সদস্যরা! এরপর বাবলার কাছে থাকা এক লাখ ১৩ হাজার টাকা তারা নিয়ে নেন! এবং তাকে হুম’কি দেন, যদি এই টাকার বিষয়ে কাউকে বলে, তাহলে তাকে এসব ছবি দিয়ে মা’মলা দিয়ে দেবে! টাকা ‘হারিয়ে’ বাসায় চলে আসে বাবলা।

পুলিশ যেভাবে ফাঁ’সে!
বাবলার ঘ’টনায় থানায় অ’ভিযোগ জানায় তার আড়তদার। কারণ, ‘আ’ত্মসাতকৃত’ সেই টাকাগুলো আড়তদারের পাওনা পরিশোধের জন্যই যাচ্ছিল। অ’ভিযোগ গু’রুতর। পাশাপাশি পুলিশবি’রোধী সেন্টিমেন্টের ‘পিক আওয়ার’ চলছে। তাই সাথে সাথেই তদন্ত শুরু করি।

যদিও শতভাগ বিশ্বাস ছিল, ‘টিম কোতোয়ালি’ এটা কখনোই করবে না। কিন্তু বাবলার আ’ত্মবিশ্বাস ছিল আমার বিশ্বাসের চেয়েও বেশি। তাই কিছুটা কনফিউজড ছিলাম। সিনিয়র স্যারদের লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদে বাবলা তার কথায় অনড় থাকে। তাকে সিসিটিভি ফুটেজের কথা বললে সে বলে, ‘স্যার, সেটা দেখলেই প্রমাণ পাবেন আমার অ’ভিযোগের’!

উপায়ন্ত না দেখে তাৎক্ষণিকভাবেই তার সামনেই আনা হয় সিসিটিভি ফুটেজ। প্রতি মোড়ের প্রতিটাক্ষণ যাচাই করা হয়। কিন্তু অভি’যোগ অনুযায়ী তাকে যেখান থেকে পুলিশ গাড়িতে ‘তুলে’ সেখানে তাকে দেখা গেল না! যেখানে যেখানে তাকে ‘ঘোরানোর’ অ’ভিযোগ করেছিল সেখানে আমাদের গাড়ি যায়নি! আবার যেখানে তাকে ‘নামিয়ে’ দেওয়ার কথা বলল, সেখানেও নেই তার অস্তিত্ব!

এসব দেখার পরই শুরু হয় তার অসংলগ্ন কথাবার্তা। এরপর আবারো তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। একপর্যায়ে সে স্বীকার করে তার সব অ’ভিযোগই মিথ্যা! মূলত আইপিএল-এ বাজি ধরে সে সব টাকা খুঁইয়েছে। টাকা না দিলে মাছ পাবে না- তাই ‘পুলিশ টাকা নিয়ে নিয়েছে’ বলে উদ্ধার পেতে চেয়েছিল বাবলা। তার দাবি, এই অ’ভিযোগ সবাই বিশ্বাস করবে। তাই এমন অ’ভিযোগই সে করেছে।

এই সত্য উদ্‌ঘাটনের পর যখন ঘুমাতে যাব, তখন ভাবছি, যদি এই সত্য বের না হতো তাহলে কি হতো? ‘ইয়া’বা দিয়ে ফাঁ’সানোর ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ীর টাকা আ’ত্মসাৎ’ সংবাদের শিরোনাম হতাম আমরা। আমার অফিসার ক্লোজড হতেন। আমিও…..।

আল্লাহ, সহায় ছিলেন। তাই বেঁ’চে গেলাম। চো’রের দশদিনের পর আজ আসলে আমাদের গেরস্থেরই দিন ছিল। ফাঁ’সাতে গিয়ে নিজেই ফেঁ’সে গেল বাবলা। ফেসবুক থেকে

ad

পাঠকের মতামত