340975

সেফটিপিনের চেইন তৈরি করে গিনেস বুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পার্থ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ পার্থ চন্দ্র দেব। পেশায় একজন ছাত্র। হবিগঞ্জে একটি কলেজে পড়াশুনা করছেন। সাত হাজার ৮৭৭ ফুট দৈর্ঘ্যের দীর্ঘতম সেফটিপিনের চেইন তৈরি করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেয়েছেন তিনি। ১৭ সেপ্টেম্বর হাতে পেয়েছেন বিশ্ব রেকর্ড গড়ার স্বীকৃতিপত্র।

পার্থ চন্দ্র দেব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নে জগদীশ চন্দ্রের ছেলে। পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে স্টেশনারি ব্যবসা করছেন। ভারতের শ্রী হার্শা নান এবং শ্রী নাভা নান ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল ১৭৩৩.১ মিটার দৈর্ঘ্যরে চেইন তৈরি করে গিনেস বুকে নাম তুলেন। তাদের রেকর্ড ভাঙার জন্য গিনেস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন চন্দ্র দেব।

গত বছরের ২০ এপ্রিল আবেদন করলে ২৩ জুলাই অনুমোদন দেয় গিনেস কর্তৃপক্ষ। সম্মতি পাওয়ার পরই লেগে পড়েন তার থেকেও ব্যতিক্রম কিছু করার। এই চেইনটি তৈরি করতে তার সময় লেগেছে ৪৫ দিন (২৪১ ঘণ্টা ৪২ মিনিট)। সেফটিপিনের সংখ্যা এক লাখ ৮৭ হাজার ৮২৩টি। রং সোনালী। যা দৈর্ঘ্যে সাত হাজার ২৭৭ ফুট বা ২৪০১.৮২৯ মিটার।

২০১৯ সালে ৬ সেপ্টেম্বর শ্রী শ্রী পাগল সংকর জিও মন্দিরে এই চেইনের জরিপ কাজ করা হয়। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত লেগেছিল পরিমাপ করতে। প্রমাণ হিসেবে করতে হয়েছে ভিডিও, তুলতে হয়েছে ছবি।

এই সময় উপস্থিত ছিলেন লাখাই মুক্তিযোদ্ধা সরকারি কলেজের প্রভাষক রাজীব কুমার আচার্য এবং ফান্দাউক পণ্ডিত রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পল্লব হালদার। চেইনটি পরিমাপ করার জন্য সার্ভেয়ার হিসেবে ছিলেন মো. তোফাজ্জল হোসেন। চেইন জরিপ কাজে শেষে গিনেস কর্তৃপক্ষের কাছে যাবতীয় তথ্য গিনেস ওয়ার্ল্ডে পাঠানো হয়। আট মাস পর পার্থের প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন গিনেস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষ। তাদের পাঠানো সার্টিফিকেটে লেখা আছে ‘দ্য লংগেস্ট চেইন অফ সেফটিপিন’।

একটি রেকর্ড গড়েই থেমে যেতে চান না পার্থ। নতুন পরিকল্পনা হিসেবে আবারো চেইন তৈরির নতুন কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি। সেটা স্টেপলার পিন দিয়ে আরেকটি চেইন তৈরি করে রেকর্ড করতে চান।

বিশ্বরেকর্ড করে কেমন লাগছে জানতে চাইলে পার্থ দেব বলেন, আমি দেশের পতাকাকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছি। আজ আমি সার্থক। তিনি আরও বলেন, আমি চাই আমার এই দীর্ঘ চেইনের মতোই গোটা জাতির মেলবন্ধন দীর্ঘ হোক। সৃষ্টি হোক পরস্পরের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন।

এই ব্যাপারে নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজমা আশরাফী জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি। আমি খুব অভিভূত। পার্থের এই কাজ শুধু নাসিরনগর নয় বরং বাংলাদেশের জন্য গর্বের।

এই ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের এমপি বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম জানান, বিষয়টি খুবই আনন্দের। আমি তাকে স্বাগত জানিয়েছি। তিনি আমাদের নাসিরনগর উপজেলাকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরেছেন।

ad

পাঠকের মতামত